বাগমারার সারন্দী আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়
* এক শিক্ষকের দুইটি প্রতিষ্ঠানে চাকরী
* এক শিক্ষকের ৫ পদে নিয়োগ
* সভাপতির ছেলে বিদেশে থেকেও নিয়োগ
রাজশাহীর বাগমারার সারন্দী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ মীর ও সভাপতি কাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি ও অবৈধভাবে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ওই ঘটনায় সোমবার বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোবারক হোসেন, সহকারী শিক্ষক সলিম উদ্দিন ও সারন্দী গ্রামের
মৃত ময়েজ উদ্দিনের ছেলে আলতাব উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে এবং রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে পৃথকভাবে তিনটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়টি প্রকাশ হওয়ার পর এলাকাবসীর মাঝে
এখন ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, সারন্দী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ মীর ও সভাপতি কাজিম উদ্দিন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে নেত্রকোনা জেলার কমলাকান্দা উপজেলার রংছাতি দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক আফিল হোসেনকে (ইনডেক্স নম্বর ৩৫০৬৩০১০৩৪৫২৫) পনের লক্ষ টাকার বিনিময়ে অবৈধভাবে নিয়োগ দিয়েছেন।
নিয়মনীতির কোন তোয়াক্কা না করে বর্তমানে এই শিক্ষক দুই প্রতিষ্ঠানে চাকরী করছেন এবং সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক মিলে শিক্ষক আফিল হোসেনের বেতনের টাকা ভাগ বাটোয়ারা করে সরকারি অর্থ আত্তসাৎ করে আসছেন। এছাড়া প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি অর্থের লোভে আফছার আলী নামে এক শিক্ষককে ২০০৪ ও ২০২২ সালে
সমাজ বিজ্ঞান বিষয়ে দুইবার, ২০২০ সালে শরীরিক শিক্ষা বিষয়ে এবং ২০২১ ও ২০২২ সালে ইংরেজি বিষয়ে দুইবারসহ মোট পাঁচবার নিয়োগ দিয়েছেন। অপরদিকে সভাপতির ছেলে মোহাম্মদ আলী ২০০৮ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বিদেশে ছিল। অথচ প্রধান শিক্ষক জালিয়াতির মাধ্যমে বিদ্যালয়ের পূর্বের কমিটির সদস্যদের স্বাক্ষর
জাল করে সভাপতির ছেলেকে অবৈধভবে ২০১৫ সালে গ্রন্থাগারিক পদে নিয়োগ দিয়েছেন। শুধু তাই নয় বিদ্যালয়ে কৃষি, বাংলা, ইংরেজি, সমাজ বিজ্ঞান, নিমান সহকারি কাম কম্পিউটার অপারেটর ও এমএলএসএসসহ আরো কয়েকটি পদে শিক্ষক-কর্মচারী বর্তমানে কর্মরত থাকা সত্বেও দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি অর্থের লোভে উল্লেখিত পদগুলোতে গোপনে নিয়োগের জন্য সম্প্রতি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন। বিষয়টি প্রকাশ হওয়ার পর সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের এমন কর্মকান্ডে এলাকাবসীর মাঝে এখন মিশ্রপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ মীর দাবি করেছেন, সরকারি সকল নিয়মনীতি মেনেই তিনি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন। এ ক্ষেত্রে কোনের প্রকার অনিয়ম হয়নি। তবে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি কাজিম উদ্দিন এ নিয়ে পত্রিকায় কোনো কিছু না লিখার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। এ বিষয়ে মুঠোফানে
যোগাযোগ করা হলে বাগমারা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এসএম মাহমুদ হাসান বলেছেন, এ বিষয়ে পৃথকভাবে তিনটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শান্ত/অননিউজ