বাগমারা ইউপি নির্বাচন: রকেট আর লোকমান দলীয় ভাবে নমিনেটেড হতে চায়
শান্তনু হাসান খান (বিশেষ প্রতিনিধি)
বাগমারা দক্ষিণ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন প্রয়াত আবু তাহের মজুমদার। তার মৃত্যুর পর প্যানেল চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন দীর্ঘ সময় ধরে ভারপ্রাপ্ত চেযারম্যানের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। মাত্র ৪৬ বছরের তারুণ্যের প্রতীক নিয়ে লোকমান আগামী ইউপি নির্বাচনে দলীয় ভাবে নমিনেটেড হতে চাইছেন। লোকমান ছাড়া ও জনপ্রিয়তার শির্ষে রয়েছেন, মাহবুবুর রহমান মজুমদার (রকেট)। এছাড়া অপর প্রার্থী আয়াৎ উল্লাহ।
সারা দেশে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি ইতি মধ্যেই নির্বাচন কমিশন গ্রহণ করেছেন। ফেব্রুয়ারী থেকে শুরু করে মে মাসে শেষ নাগাদ ধারাবাহিক ভাবে গত বারের মত ৫ ধাপে নির্বাচন শেষ করতে চান স্থানীয় মাঠ প্রশাসন। দেশে বর্তমানে ৪ হাজার ৫৭১ টি ইউনিয়ন পরিষদ বিদ্যমান। ২০১৬ সালে ২২ শে মার্চ শুরু হয়ে ৪ জুন পর্যন্ত কয়েক ধাপে নির্বাচন সমাপ্ত করে সরকার। স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন অনুসারে মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৮০ দিন পূর্বে পরবর্তী পরিষদের গ্রহণযোগ্যতা থাকে। আর সেই আলোকে কুমিল্লা ১৮ টি উপজেলার ৩১২ টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের জন্য ইতিমধ্যেই কুমিল্লার মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশনা পাঠিয়েছেন সি.ই.সি। এর মধ্যে নবগঠিত লালমাই উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন পরিষদ অন্যতম। এখানকার বর্তমান নির্বাচিত চেয়ারম্যানগণ সবাই সরকার দলীয়।
অনেক পজেটিভ বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে লালমাইর ৯টি ইউনিয়নের সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিরবে জনসংযোগ করে যাচ্ছেন। তবে এবার দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের জন্য দলের সিনিয়র নেতা ও নীতি নির্ধারকদের কাছে ধর্না দিচ্ছেন। তবে শেষ অব্দি কার ভাগ্যে নৌকার টিকেট জুটবে- সেটা সময়ের ব্যাপার। উল্লেখ্য যে, কুমিল্লার নবগঠিত লালমাইর ৯টি ইউনিয়নের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইউনিয়ন বাগমারা দক্ষিণ। এখানে বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান- একজন সফল ৯ বছরের মেম্বার মোঃ লোকমান হোসেন।
এদিকে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, এরা সবাই আওয়ামী দলীয় নেতা কর্মী। দীর্ঘ দিন যাবৎ এ এলাকার নীতি নির্ধারক সরকারের অর্থমন্ত্রী আ.হ.ম মোস্তফা কামাল (লোটাস কামাল) এর সংসদীয় নির্বাচনে নিবেদিত কর্মী ছিলেন। এবং তারা আজও তার হয়ে এলাকায় কাজ করে যাচ্ছেন। নবগঠিত লালমাই উপজেলা গঠনে লোটাস কামালের অবদানের কথা সবাই এক বাক্যে প্রশংসিত করেছেন। তবে কাকে রেখে কাকে দলীয় টিকেট দেবেন- তা নিয়ে ঝল্পনা কল্পনার শেষ নেই। ৯টি ইউনিয়নের সকল প্রার্থীরাই মনে করেন তারা লোটাস কামালের পছন্দের মানুষ। এই পছন্দের প্রার্থীতা বাছাই করতে তৃণমূলের নেতা কর্মীদের কাউন্সিল অধিবেশন কিংবা বর্ধিত সভার মধ্য দিয়ে দলীয় ভাবে নমিনেটেড করলে কোন বিদ্রোহী প্রার্থীর আগমন ঘটবে না। সবাই তার জন্য এক হয়ে কাজ করবেন। এ বিষয়ে আঃলীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান মজুমদার (রকেট) বলেন, দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যাবার তেমন কোন সুযোগ নাই। মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় যে সিদ্ধান্ত দেবেন বা যাকে দল থেকে নমিনেটেড করবেন, আমরা তার জন্যই কাজ করে যাবো আগামী দিন গুলোতে। এবং নৌকার প্রার্থীকে বিজয় করতে নিশ্চিত করবো। পাশাপশি জননেত্রী শেখ হাসিনার এবারের প্রতিপাদ্য- “আমার গ্রাম-আমার শহর” বাস্তবায়িত করতে আমি বদ্ধ পরিকর।
ভারপ্রাপ্ত চেযারম্যান লোকমান বলেন, বাগমারা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের বরাদ্ধের উপর সঠিক নিয়মে সকল উন্নয়নের কর্মকান্ড চালিয়ে আসছি। তবে বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে কোন প্রকার আলোচনা সমালোচনার নেই বিগত সাড়ে ৩ বছরে। এখানে অনেক অনিয়মের খবর আমাদের জানা নেই। আল্লাহ যদি আমাকে কামিয়াব করেন, তাহলে এখানকার পুঞ্জিভূত সমস্যা গুলো নিরসন করা সহ পরিষদের আওতায় দুঃস্থ মাতাদের ভিজিএফ, ভিজেডি কিংবা অন্য কোন ভাতা প্রদানের অনিয়ম হবে না। আর এখানকার সকল উন্নয়নের কেন্দ্র বিন্দু আমার মাননীয় সাংসদ ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। তাদের দিক নির্দেশনা ও পৃষ্টপোষকতায় উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যহত থাকবে ইনশাআল্লাহ। যদি আমি কামিয়াব হই। লোকমান বাগমারা ৮ নং ওয়ার্ডের ভোটার। বেড়ে উঠেছেন এই জনপদে। পড়াশোনা ভিক্টোরিযা কলেজ। ৯২ তে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হয়ে রাজনীতিতে উত্থান। এরপর জীবন জীবিকার জন্য প্রবাসে চলে যান। ৯৬ তে এসে কিছুদিন যুবলীগের রাজনীতিতে ছিলেন। এক সময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এদিকে করোনা কালে সরকারী বরাদ্দ ছাড়াও ১ লাখ ১০ হাজার টাকা সহায়তা প্রদান করেন। গেল শীতে দুঃস্থ মানুষদের মাঝে কম্বল বিতরণ করে প্রিয়ভাজন হয়ে আছেন।
৫৭ বছরের রকেট মজুমদার। একসময় শহরের মডার্ন স্কুল ও ইউসুফ স্কুল থেকে পড়াশোনা করেছেন। পরবর্তী সময় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে। আর সেই সময় অধক্ষ্য আবুল কালাম মজুমদারের সান্নিধ্যে এসে ছাত্র রাজনীতি শুরু করেন। এর পর আ.হ.ম মোস্তফা কামাল (লোটাস কামাল) সান্নিধ্যে এসে রাজনীতি কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েন। আর সেই সময় মাননীয় মন্ত্রী জনসম্মূখ্যে রকেটের নামটি ঘোষণা করা হয়। তিনি বলেন, বাগমারার পরবর্তী নির্বাচনে রকেটকে আমরা দেখতে চাই। ইতিমধ্যে রকেট কুমিল্লা নাট্যাঙ্গনে নিজের অবস্থানকে পাকাপক্ত করেন। পাশাপশি যুব সমাজের কাছে নন্দীত হয়ে উঠেন। রকেট বলেন, অতিতের কর্মকান্ড আর যোগ্যতার মাপ কাঠিতে আমাকে মূল্যায়ন করা হবে ইনশাআল্লাহ। আর দলীয় ভাবে নমিনেটেড হলে যে কোন প্রার্থীকে ডিঙ্গিয়ে আগামীতে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হতে পারবো ইনশাআল্লাহ।
এদিকে ১৬ হাজার ৭শত ভোটারদের মাঝে ৪০% নবীন এবং তরুণ ভোটাররা আগামীতে রকেট মজুমদার কে চেয়ারম্যান নির্বাচনে জয়ী করতে তার পেছনে একাট্টা।
অপর প্রার্থী- লোকমান চেয়ারম্যান বলেন,আমি সারাজীবন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করে আসছি। আমার নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আর আমার প্রিয় নেতা মাননীয় মন্ত্রী আ.হ.ম মোস্তফা কামাল। জীবনে কোনদিন দলের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে রাজনীতি বাণিজ্য করি নাই। দরবার-শালিস বিচারে কোন পক্ষপাতিত্ব করি নাই। আর কোন গ্রুপিংয়ের রাজনীতি আমি করি না। কাউকে করতে উৎসাহ দেই না। আমার শুধু একটাই গ্রুপ- আর তা হল জননেত্রীর শেখ হাসিনার উন্নয়নের রাজনীতির পাশাপাশি জনগণের সেবা।