রায়পুর পৌর নির্বাচনে পাপুল কান্ডে এবার সবাই জর্জরিত
শান্তনু হাসান খান।।
লক্ষীপুরজেলার রায়পুর, রামগঞ্জআররামগতিপৌরসভারনির্বাচনডিসেম্বরেই তফসিল হওয়ার সম্ভাবনা। আর জানুয়ারী প্রথম দিকে নির্বাচন। এ বিষয়ে স্থানীয়মাঠপ্রশাসনকেনির্বাচনীপ্রস্তুতিনিতেবলাহয়েছে। তবেএবারব্যালটেনয়-ইভিএম পদ্ধতিতে। ১৯৯৪ এর ২০ শে জানুয়ারী তেরায়পুর পৌরসভা স্থাপিতহওয়ারপর প্রথম চেয়ারম্যান রফিকুল হায়দার (বাবুল) পাঠান চেয়ারম্যান নির্বাচিত ছিলেন। আর বর্তমানে হাজী ইসমাঈল হোসেন খোকন দায়িত্ব পালন করছেন। মাঝ পথে ২ বার বি.এন.পির এবিএম জিলানী দায়িত্ব পালন করেন। আর এখন দলীয় ভাবে মনোনয়ন চাইছেন সাবেক কমিশনার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী নাজমুল কাদের গুলজার।
সাবেক এক ছাত্র নেতা, হালে প্রবাস থেকে ফিরে এসে এলাকায় আছেন – গিয়াস উদ্দিন রুবেল ভাট। অপর এক প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন চাইছেন, আওয়ামী ঘরনার শিক্ষিত ও মার্জিত ব্যক্তিত মোঃ হারুনের রশীদ। অন্য দিকে বি.এন.পির জিলানীসহ শফিকুল আলম ও আনোয়ার হোসেন। বর্তমান মেয়র ও সাবেক চেয়ারম্যান ২ জনই এলাকায় সমালোচিত ও আলোচিত। হাজী ইসমাঈল খোকন- লক্ষীপুর ২ আসনের এমপি (বর্তমানে কুয়েত কারাগারে) কাজী শহীদুল ইসলাম পাপুল কান্ডে জর্জরিত। দুদক সহ আরো আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জালে আটকে আছে। যে কোন মুহূর্তে ভিতরে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশী। অন্য দিকে বাবুল পাঠানও স্বচ্ছ থাকলেও খুব টেনশনে আছেন। তবে টেনশনে নেই সম্পূর্ন নতুন প্রার্থী হারুনের রশীদ। আর সাবেক ছাত্র নেতা রুবেল ভাট তেমন জোড়ালো কর্মকান্ড নেই।
এ প্রসঙ্গে হারুনের রশীদের সাথে কথা হলে তিনিবলেন, স্থানীয়সরকারনির্বাচনসিলেকশনকমিটি তথা- আমারনেত্রীজননেত্রী শেখহাসিনা-আমারপলেটিক্যাল ক্যারিয়ার ও নিকট অতীতেরকর্মকান্ডআরএলাকারজনগনের গ্রহণযোগ্যতারবিষয়টিবিবেচনাকরে-ইনশাল্লাহআমাকে দলীয়ভাবেনমিনেটেডকরবেনবলে – আমার দৃঢ় বিশ^াস। আর সেই বিশ^াসের উপর ভর করে আগামী পৌরনির্বাচনের জন্য প্রস্ততি নিচ্ছি। ইনশাআল্লাহ কামিয়াব হলে, রায়পুর পৌরসভাকে একটি নিরাপদ, বাস যোগ্য ও নান্দনিক অবকাঠামো সমৃদ্ধ জনপদ গড়ে তুলবো।
এদিকে বাবুল পাঠান বলেন, প্রথম নির্বাচিত চেয়ারম্যান আমি। আমার আমলে আমি চেষ্টা করেছি এখানকার ৯ টি ওয়ার্ডের সাধারণ মানুষদের জীবন যাত্রার মান বদলে দিতে। কিন্তু আমার সীমাবদ্ধতার মধ্যেই আমি চেষ্টা করেছি এ পৌরসভাকে ঢেলে সাজাতে। শতভাগ হয়ে উঠেনি। কারণ বাজেট আর বরাদ্দ, পাশাপাশি রাজনৈতিক কমিটম্যান্ট। আগামীতে দলীয় ভাবে নমিনেশন চাইবো।
আরেক চেয়ারম্যান জিলানী বলেন, বি.এন.পির অবস্থান এখানে খুবই ভালো। তবে বর্তমান সরকার দলীয় নেতা কর্মী সহ পুলিশ প্রশাসন তফসিলের আগেই আমাদের কে ঘর থেকে বের হতে দিচ্ছেন না। কদিন আগে একটি শান্তিপূর্ন কর্মী সভা আর মিছিল মিটিং করতে গেলে সরকার দলীয় পুলিশের ছত্র ছায়াতে তা বানচাল করে দেওয়া হয়। নির্বাচন নিয়ে আমরা শঙ্কিত। এর আগে আমার আমলে ২য় গ্রেড থেকে ১ম শ্রেণীর পৌরসভা নির্মাণে আমারই অবদান ছিল। আমার দৃঢ় বিশ^াস সরকার যদি শান্তিপূর্ন নির্বাচন চান, তা হলে বি.এন.পি এখানে ঘুরে দাড়াবে।
আওয়ামী লীগের নতুন প্রার্থী হারুনের রশীদ- একটি আওয়ামী লীগ পরিবারের জন্ম তার। ছাত্র জীবন থেকে ছাত্র লীগের একনিষ্ট কর্মী ছিলেন। ১৯৭৯-৮১ রায়পুর এল এম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সভাপতি হিসাবে তার উত্থান। এরপর ১৯৮২-৮৪ পর্যন্ত রায়পুর কলেজের সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহŸায়ক ছিলেন। পোর্ট ফলিওতে কোন পদ পদবির জন্য লালায়িত ছিলেন না। তারপরেও তিনি আওয়ামী রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। তার বাবা মরহুম আব্দুল জলিল মিয়া ৬নং কেরোয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দীর্ঘ ২০ বছর সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। পাশাপাশি পৌর আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দেন। তার নামে ৭ নং ওয়ার্ডে ‘‘আব্দুল জলিল মিয়া সড়ক’’ নামে একটি সড়কের নামকরন করা হয়েছে। হারুনের রশীদ বলেন, নির্বাচিত হলে এখানকার পুঞ্জীভূত সমস্যা চিহ্নিত করে পর্যায়ক্রমে রায়পুর পৌরসভাকে ঢেলে সাজাবো।
করোনা ভাইরাস প্রভাবের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে তিনি সরকারি ত্রান ছাড়াও ব্যক্তিগত ভাবে সহায়তা প্রদান করে নন্দিত হয়ে আছেন এলাকাতে। তিনি বলেন, আমি নির্বাচিত হলে- আগামীতে এখানে একটি ড্যাম্পিং স্টেশন নির্মাণের মধ্যদিয়ে রায়পুরের পরিবেশ আরো নান্দনিক করে তুলতে চাইবো। তিনি আরো বলেন, এলাকার দুঃস্থ মা ও শিশুদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা হবে আমার পৌরসভার ইপিআই কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে। সবকিছুই হবে পৌরসভার বাজেট আর বরাদ্দের উপর নির্ভর করে। আমার সীমাবদ্ধতার মধ্যে আমি যতটুকু পারি জনগনের পাশে থাকবো। অতীতে যেমন তাদের সুখে দুঃখে ছিলাম, এখনও আছি। তিনিবলেন, মাদক সন্ত্রাস আর জঙ্গীবাদ উন্নয়নের বাধাগ্রস্ত হয়। মাদকের বিরুদ্ধে আমি অতীতে যেমন সোচ্চার ছিলাম, এখনো আছি।
দীর্ঘ রাজনীতি করার অভিজ্ঞতায় বলেন, দলের সাইন বোর্ড ঝুলিয়ে রাজনীতির বানিজ্য করিনি । আমি কোন গ্রæপিং এর রাজনীতি করি না। কাউকে করতেও উৎসাহ দেই না । আমার শুধু একটাই গ্রæপ- জন নেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের রাজনীতি । এদিকে হারুনের রশীদ রাজনীতির পাশাপশি ঢাকাস্থ রায়পুর যুব কল্যাণ সমিতির প্রাক্তন সভাপতি, লক্ষীপুর জেলার যুব কল্যাণ সমিতির যুগ্ম আহŸায়ক, পাইলট স্কুলের এক্স স্টুডেন্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক, নোয়াখালী ফাউন্ডেশনের প্রাক্তন সহসভাপতি ও নবী নেওয়াজ করীম চৌধুরী বকুল স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় থেকে মাষ্টার্স শেষ করেছেন। উচ্চ শিক্ষিত হয়ে তিনি বিভিন্ন মিডিয়ার মার্কেটিং কর্মকর্তা হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এদিকে ২৫ হাজার ভোটারদের মাঝে ২০% তরুণ এবং নবীন ভোটাররা আগামীতে ১জন নতুন মার্জিত মেয়র নির্বাচনে এখন থেকে হারুনের রশীদের পেছনে একাট্টা।