অননিউজ টুয়েন্টি ফোর ডট নিউজে সংবাদ প্রকাশের পর রৌমারীর সেই কলেজটির অনিয়ম তদন্তে কমিটি গঠন।
শাহীন আহমেদ, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি।

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার কিসমত উল্লাহ-বালাজান কৃষি ও কারিগরি ইনস্টিটিউট নামে কলেজটির বিভিন্ন অনিয়ম ও কলেজে অধ্যক্ষের অনুপস্থিতির অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি করেছে রৌমারী উপজেলা প্রশাসন। রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উজ্জ্বল কুমার হালদার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ইউএনও জানান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে আহ্বায়ক, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব এবং প্রোগ্রাম অফিসারকে সদস্য করে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
এর আগে গত সোমবার (২৪ আগস্ট) কলেজটির বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে অন নিউজ টুয়েন্টি ফোর এ
কুড়িগ্রামে এমপিও ভুক্ত কলেজে নেই শিক্ষার্থী,শিক্ষক, টাকা হলেই মিলছে সনদ
প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এছাড়াও কলেজটির নানা অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন শিরোনামে কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপর নড়েচড়ে বসে স্থানীয় প্রশাসনসহ কলেজ কর্তৃপক্ষ।
সংবাদ প্রকাশের পর কলেজে উপস্থিত হয়ে অধ্যক্ষের সংবাদ সম্মেলন:
নিয়মিত উপস্থিত না থাকলেও কলেজের অনিয়ম নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর বুধবার (২৭ আগস্ট) কলেজে উপস্থিত হয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন অভিযুক্ত অধ্যক্ষ আব্দুল মতিন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি দাবি করেন, ‘ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। পরীক্ষা শেষ হওয়ার কারণে বর্তমানে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নেই। পরীক্ষা হওয়ার পরতো প্রতিষ্ঠান ১০-১৫ দিন বন্ধ থাকে। অন্য সময় শিক্ষার্থী আসে এবং খন্ডকালীন শিক্ষক দিয়ে ক্লাস নেওয়া হয়।’ এসময় তিনি প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান। যদিও প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার স্বপক্ষে তিনি কোনও দাপ্তরিক প্রমাণপত্র দেখাতে পারেননি।
নিজের অনুপস্থিতির সাফাই দিয়ে লিখিত বক্তব্যে অধ্যক্ষ আব্দুল মতিন বলেন, ‘ কলেজের বিভিন্ন কাজে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর ও রংপুর আঞ্চলিক কার্যালয়সহ বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়।ওই সময় আমি কলেজে উপস্থিত থাকি না। এছাড়া প্রায় সময় কলেজে থাকি।’
তবে অনুসন্ধানে অধ্যক্ষের এসব দাবির কোনও সত্যতা মেলেনি। পরীক্ষা শেষে গত কয়েকদিন ধরে কর্মদিবস চললেও অধ্যক্ষ কলেজে উপস্থিত ছিলেন না। স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে সচরাচর কলেজে দেখেন না। বিষয়টি কলেজের অফিস সহকারী আমজাদ হোসেন স্বীকারও করেছেন।
গত সোমবার অফিস সহকারী আমজাদ এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, ‘অধ্যক্ষ স্যার বর্তমানে না আসলেও তিনি কলেজে আসেন। তার বাড়ি নীলফামারীতে। তিনি ঢাকাতেও থাকেন। তবে কলেজে আসলে তিনি এলাকায় থাকেন।’
এদিকে কলেজটির বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) রৌমারী ইউএনও কলেজটি সরেজমিন পরির্দশন করেন। সেসময় তিনি কলেজে অধ্যক্ষ কিংবা শিক্ষক-শিক্ষার্থী কাউকে উপস্থিত পাননি। কলেজের বিভিন্ন কক্ষে তালা ঝুলানো দেখতে পান।
ইউএনও উজ্জ্বল কুমার হালদার বলেন, ‘ কলেজটির অধ্যক্ষের নিয়মিত উপস্থিত না থাকা এবং বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর মঙ্গলবার আমি কলেজটি সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। কিন্তু কলেজে অধ্যক্ষসহ কাউকে পাওয়া যায়নি। কক্ষগুলোতে তালা দেওয়া ছিল। এ নিয়ে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটি প্রতিবেদন দেওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
ih