অনলাইন রিটার্ন জমায় আবারো শীর্ষস্থান অর্জন করেছে কুমিল্লা কমিশনারেট। এ নিয়ে তের বার শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করলো সিইভিসি টিম। সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে মাঠে সক্রিয় কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট (সিইভিসি) কুমিল্লা টিম। অক্টোবরে প্রথম হ্যাট্রিক, ২০২১ এর জানুয়ারীতে ডাবল হ্যাট্রিক, এপ্রিলে ট্রিপল হ্যাট্রিক। প্রতিনিয়ত নিজেদের ছাড়িয়ে যাবার প্রতিযোগিতায় কুমিল্লা। আগস্ট’২১ মাসে অনলাইন রিটার্ন দাখিলের হার ছিল ৯৫.৮৩%। বর্তমানে সেপ্টেম্বর’২১ মাসে অনলাইন রিটার্ন দাখিলের হার বেড়ে দাঁড়ায় ৯৭.০৩%। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সামগ্রিক অনলাইন রিটার্ন জমার হার প্রায় ৫০%। চলতি সেপ্টেম্বর মাসে এই কমিশনারেটে অনলাইনে রিটার্ন জমা হয়েছে ৯৭.০৩%। মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের সক্রিয়তার মাধ্যমেই এই অর্জন সম্ভব হয়েছে। চেয়ারম্যান মহোদয়ের নির্দেশ মতো দেশকে ডিজিটাল করার প্রত্যয়ে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অধীন অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন ও রিটার্ন দাখিল অন্যতম ডিজিটাল কর্মকান্ড।
মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের সক্রিয়তার মাধ্যমেই এই অর্জন সম্ভব হয়েছে। উপর্যুপরি তের বার অনলাইন ভ্যাট রিটার্ন জমায় সাফল্যকে ‘চমক’ হিসেবে দেখছে এনবিআর। জানা যায়, মাত্র এক তৃতীয়াাংশ জনবল নিয়ে কমিশনার এ সাফল্য অর্জন করেছে। মাসের ১ম তারিখ হতে কমিশনারের কক্ষে মিটিং করে কর্মকর্তাদের মধ্যে কাজ ভাগ করে দেয়া হয়। অনেক কর্মকর্তা স্বেচ্ছায় গত ১৫ ও ১৬ তারিখ শুক্রবার ও শনিবারের সাপ্তহিক ছুটি বাতিল করে অনলাইন রিটার্ন দাখিলের কাজ অগ্রাধিকার দেন। লক্ষ্য, কুমিল্লা ভ্যাট টিমকে তের বারের এর মত চ্যাম্পিয়ন করা। ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পের ইমেইল হতে তথ্য পাওয়া যায়। অন্যান্য কমিশনারেটগুলোও নানা বৈরিতার মধ্যে কাজ করতে হয় টিমকে। অনলাইনে ভ্যাট রিটার্ন জমাদানের সময় সার্ভারে ক্রটি, বিদ্যুৎ ভোগান্তি। এবার শেষ সময়ে সার্ভার সমস্যা করায় অনলাইন রিটার্ন দাখিল নিশ্চিত করতে কর্মকর্তাদের হিমশিমে পড়তে হয়েছে। সার্ভার সমস্যার কারণে রিটার্ন দাখিল বিঘিœত হয়। নানান সীমাবদ্ধতা সত্তে¡ও বসে থাকেনি এ কমিশনারেটের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে কুমিল্লা ভ্যাট অন্যান্য মাসের মতো সেপ্টেম্বর মাসেও অনলাইন ভ্যাট রিটার্ন জমা করেছে।
আগস্ট২১মাসে ড্রাপসে ৬২টি রিটার্ন জমা থাকায় রিটার্ন দাখিলের হার ছিল ৯৫.৮৩%। আগস্ট মাসে ড্রাপসের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে কাজ করায় সেপ্টেম্বর২১ মাসের রিটার্ন দাখিলের হার দাঁড়ায় ৯৭.০৩%। সাফল্যের পিছনে রয়েছে ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপায়নের অঙ্গীকারে সক্রিয় থাকা কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট কুমিল্লার (সিইভিসি) কর্মবিলাসী টিম। আর এ টিমকে ক্যারিশমেটিক নেতৃত্ব দিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মূল কারিগর হলেন কুমিল্লা কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের কমিশনার মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী। রিটার্ন দাখিলের হার ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। আজ সংবাদ পাবার পর টিম অধিক স্পন্দিত ও কর্মচঞ্চল। দেড়শ সদস্যের টিমকে ৬৩টি জুম সভায় প্রশিক্ষিত ও নিবিড় মনিটরিং করা হয়েছে। সর্বোপরি, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ টিম সদস্যদের পরিশ্রম ও সাফল্যের পিপাসা কুমিল্লা কমিশনারেটকে রাজস্ব প্রবৃদ্ধি ও অনলাইন রিটার্ন জমায় উপর্যুপরি সাফল্য এনে দিয়েছে। কমিশনারেটের অধীন ১৬টি সার্কেল ও ০৬টি বিভাগের সবাই আন্তরিক ছিল।
অনলাইন রিটার্ন জমায় বিশেষ নজরদারি হিসেবে নিম্ম লিখিত পদক্ষেপসমূহ গ্রহণ করা হয়: করদাতাদের বিরক্ত না করে সার্কেল অফিস থেকে টেলিফোনে যোগাযোগ, স্বল্প সংখ্যক জনবল থেকে দক্ষদেরকে বাছাই করে গভীর রাত পর্যন্ত রিটার্ন দাখিল, কর্মকর্তারা মাস্ক পড়ে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে কর্মকান্ড তদারকি, রিটার্ন দেয়নি এমন করদাতাদের কাছে মোবাইলে বাল্ক এসএমএস প্রেরণ, স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় এবং স্থানীয় ক্যাবল অপারেটরের মাধ্যমে প্রচারণা, স্থানীয় মার্কেট ও লোকালয়ে মাইকিং করে প্রচারণা, ব্যবসাস্থলে/বাসায় সশরীরে গিয়ে সম্মানিত করদাতাগণকে কাউন্সেলিং,শীর্ষ করদাতাদের উদ্বুদ্ধ করতে সৌজন্য উপহার সামগ্রী প্রদান,রিটার্ন জমা ও করদাতা সচেতনতায় ফেসবুক গ্রুপে ব্যাপক প্রচারণা, করদাতাদের রিটার্ন জমার সুবিধার জন্য শুক্র ও শনিবারও অফিস খোলা রাখা, কর্মকর্তাদেরকে অনলাইন নিবন্ধন ও রিটার্ন দাখিল সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। কর্মকর্তাদের কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ সময় সময়ে পুরস্কার দেয়া হচ্ছে। এতে কর্মকর্তাদের মধ্যে স্পন্দন, কর্মস্পৃহা ও সুস্থ প্রতিযোগিতা বিরাজ করছে এবং উৎসাহ-উদ্দীপনা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সহকারী কমিশনার (সদর দপ্তর, কুমিল্লা) মোহাম্মদ ছালাউদ্দিন রিপন বলেন, অনলাইন ভ্যাট রিটার্ন দাখিলে কুমিল্লা ভ্যাট কমিশনারেট সর্বমোট তেরবার ‘প্রথম’। চারটি সার্কেল শতভাগ রিটার্ন দাখিল করতে সক্ষম হয়েছে। আশা করছি পর্যায়ক্রমে ষোলটি শতভাগ রিটার্ন অনলাইনে করতে সক্ষম হবে। এ বিষয়ে কমিশনার মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী বলেন, সাফল্য অর্জনের চেয়ে ধরে রাখা কঠিন। “কুমিল্লার কর্মপ্রবণ এনবিআরের সম্মানও উচ্চকিত করেছে। করোনাকালে কুমিল্লা টিমের জন্য বিষয়টি খুবই চ্যালেঞ্জের ছিল। আগেও বলেছে দলবদ্ধ প্রচেষ্টা প্রতিযোগিতা এ অভূতপূর্ব সাফল্যের মূল নিয়ামক এবং দেশ প্রেমে উদ্ধুদ্ধ কর্মকর্তাদের পরিশ্রম ও সাফল্যের পিপাসা কুমিল্লা কমিশনারেটকে রাজস্ব প্রবৃদ্ধি ও রিটার্ন দাখিলে উপর্যুপরি সাফল্য এনে দিয়েছে।
সাইফুল ইসলাম সুমন,অননিউজ24।।