কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার ১৩নং আদ্রা ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের প্রার্থীতা বাছাইয়ের কাউন্সিল অধিবেশন শেষ হয়েছে গত ১৮ সেপ্টেম্বর। ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যে কমিটি দিয়ে সেই কাউন্সিল অনুষ্ঠিত করে প্রার্থীতা বাছাইয়ে ভোটাভুটি করা হয়েছে, সেই কমিটি নিয়ে নানান বিতর্কের অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় কয়েকজন হেভিওয়েট নেতা।
উপজেলা আওয়ামীলীগের অনুমোদনের ব্যতিরেকেই সেই কমিটি দিয়ে কাউন্সিল শেষ করা হয়েছে বলেও জানান তারা৷ কাউন্সিল অধিবেশনের দিন ওই কমিটির সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন তপু কাউন্সিলে উপস্থিত ছিলেন না বলেও জানা গেছে, কমিটি নিজ হাতে গঠন করেন ইউনিয়ন পরিষদ বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল করিম, তিনি নিজে ওই কমিটির সাধারণ সম্পাদক ।
এছাড়াও অনুমোদনহীন ওই কমিটিতে ২জন বিতর্কিত ব্যক্তিকে স্থান দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে কমিটির ১নং সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম ওই ইউনিয়ন এমনকি ওই উপজেলারও ভোটার ছিলেন না। ইউনিয়নের ভোটার হন বছর খানেক হলো। তাকে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ১নং সাংগঠনিক সম্পাদক করায় তৃণমূল নেতৃবৃন্দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জাহাঙ্গীর আলম পার্শ্ববর্তী চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলার চাঙ্গিনি গ্রামের বাসিন্দা। ২০২০ সালে বরুড়া উপজেলার সোনাইমুড়ী গ্রামে জায়গা ক্রয় করে বাড়ি নির্মাণ করেন। পরবর্তীতে সেখানকার ভোটার হন তিনি।
ওই কমিটিতে আরেক বিতর্কিত নেতা জসীম উদ্দিন। ইউনিয়নের একবাড়ীয়া গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে জসীম উদ্দিন বিএনপির একজন সাবেক সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তার বাবা খলিলুর রহমান বিএনপির গ্রাম কমিটির একবাড়ীয়া গ্রামের প্রাক্তন সভাপতি। অনুপ্রবেশ করে আওয়ামীলীগের ইউনিয়ন কমিটিতে জসীম উদ্দিনের পদ পাওয়াটা মাথায় আকাশ ভেঙেছে ওই ইউনিয়নের তৃণমূল নেতৃবৃন্দের।
ওই কমিটির ১নং সহ সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন মজুমদার জানান, এই কমিটি সম্পূর্ণ ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল করিম এর স্বেচ্ছাচারিতায় করা হয়েছে। অনুমোদন হীন কমিটি দিয়ে প্রার্থীতা বাছাইয়ের কাউন্সিল অধিবেশনে ব্যাপক অনিয়ম করেছেন চেয়ারম্যান আব্দুল করিম। প্রস্তাবিত কমিটি দিয়ে কাউন্সিল অধিবেশ করা হয়েছে। চেয়ারম্যান নিজে সাধারণ সম্পাদক থেকে এই পকেট কমিটি গঠন করেছেন। আদ্রা ইউনিয়ন থেকে আমিও একজন মনোনয়ন প্রত্যাশী। কাউন্সিল অধিবেশনে ওই কমিটির তালিকা আমাদের কাছে গোপন রাখা হয়েছে, কাউন্সিলের দিন সকাল ১০টায় আমার কাছে চিঠি এসেছে। ওই কমিটির সদস্যদের কাউন্সিলে উপস্থিত হওয়ার জন্য শুধু মাত্র করিম চেয়ারম্যান চিঠি বিলি করেছেন, আমাদের কাছে কমিটির তালিকা ছিল না তাই আমরা কাউকে চিঠিও দিতে পারিনি, কারো কাছে সমর্থনের বিষয়ে কথা বলতে পারিনি। কাউন্সিল অধিবেশনে যোগদানের পর জানতে পারি কারা আছে এই কমিটিতে। চেয়ারম্যান আমাদের সাথে প্রতারণা করে কাউন্সিল অধিবেশন শেষ করেছে, এই কাউন্সিল প্রত্যাখ্যান না করলে দলের প্রতি ক্ষোভ রেখে আমি বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবো।
আব্দুল্লাহ আল মামুন এর মতো ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ওই ইউনিয়নের অন্যান্য মনোনয়ন প্রত্যাশীরাও। অনুমোদনহীন কমিটি দিয়ে কাউন্সিল অধিবেশনের তীব্র নিন্দা জানিয়ে তারা সকলে কাউন্সিল প্রত্যাহারের দাবি জানান।
আহসানুজ্জামান সোহেল/অননিউজ24।।