বিশ্বব্যাপী ২১ মার্চ পালিত হয় আন্তর্জাতিক বন দিবস। এক দশক ধরে বিশ্বজুড়ে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে দিবসটি গুরুত্বের সঙ্গে পালিত হয়। দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘সুস্থ দেহে সুস্থ মন, যদি থাকে সমৃদ্ধ বন’।
দিবসটি উদযাপন করা হয় মূলত বন ও জঙ্গলযুক্ত এলাকা রক্ষা ও রক্ষণাবেক্ষণ এবং জনগণকে বন, বনজ দ্রব্য ও বন্য প্রাণী সম্পর্কে সচেতনতা তৈরির জন্য। অন্য অর্থে দিনটি জীবনের জন্য গাছের গুরুত্বের একটি অনুস্মারক হতে চায়। কারণ, গাছ বা বৃক্ষ বিশুদ্ধ বাতাসের একটি উৎস এবং মানুষের জন্য নানা রকম ফল ও উপকরণ সরবরাহ করে।
গাছপালা বা জঙ্গল রয়েছে পৃথিবীর এক-তৃতীয়াংশে। ওই সব বন ও জঙ্গলে ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন মানুষ এবং ২ হাজারের বেশি আদিবাসী তাদের সংস্কৃতিসহ জীবিকা, ওষুধ, জ্বালানি, খাদ্য ও আশ্রয়ের জন্য প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নির্ভর করে।
দারিদ্র্য বিমোচনে ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বন শুধু আমাদের অক্সিজেনই সরবরাহ করে না, মানুষ, প্রাণী, পোকামাকড়, বন্য প্রাণীকে আশ্রয় দেয় এবং কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে ও আর্দ্রতার ভারসাম্য রক্ষা করে। পৃথিবীতে জীবনের ভারসাম্য বজায় রাখতে, অক্সিজেন সরবরাহ করতে, পর্যটনশিল্প বিকাশে ও শিল্পের কাঁচামাল সরবরাহ করতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে গাছপালা কিংবা বনভূমি।
মূলত মানুষকে গাছের গুরুত্ব বোঝাতে দিবসটি পালিত হয়। এর মধ্যে বৃক্ষরোপণও অন্তর্ভুক্ত। গ্লোবাল ফরেস্ট ওয়াচের মতে, একটি বনে প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ গাছ থাকে। একজন মানুষের শ্বাস নিতে বছরে ৭৪০ কেজি অক্সিজেন প্রয়োজন। গড়ে একটি গাছ বছরে ১০০ কেজি পর্যন্ত অক্সিজেন দেয়। ফলে মানুষের বেঁচে থাকা আর পৃথিবীর ভারসাম্য রক্ষা একা হাতেই সামলায় বনাঞ্চল।
এ বিষয়টি মাথায় রেখে ১৯৭১ সালে ইউরোপীয় কনফেডারেশন অব অ্যাগ্রিকালচারের ২৩তম সাধারণ পরিষদে বিশ্ব বনায়ন দিবস প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা গাছের গুরুত্ব সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ২০১২ সালের ২৮ নভেম্বর আন্তর্জাতিক বন দিবস প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয়। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ দুটি আন্তর্জাতিক স্মারক বিশ্ব বনায়ন দিবস এবং আন্তর্জাতিক বন দিবসকে একত্রিত করে প্রতি বছর ২১ মার্চ দিবসটিকে উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেয়।
ফরহাদ/অননিউজ