অপরাধ না করেই পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে এক সিএনজি চালকের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার নবীপুর পশ্চিম ইউনিয়নের রহিমপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তির নাম এরশাদ মিয়া (৪৫)। তিনি ওই গ্রামের শাহ আলমের ছেলে। তিনি কোন মামলার আসামি ছিলেন না। পুলিশের কর্তব্যে অবহেলা ও গাফিলতির দায়ে এ ঘটনাটি হয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, নবীপুর পশ্চিম ইউনিয়নের রহিমপুর গ্রামের শাহ আলমের ছেলে এরশাদ মিয়া একটি নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার ওয়ারেন্টভূক্ত পলাতক আসামি। তাকে গ্রেফতার করার জন্য হন্যে হয়ে পুলিশ খুঁজছে। মঙ্গলবার দুপুরে মুরাদনগর থানার এএসআই শেরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ রহিমপুর গ্রামের শাহ আলমের ছেলে এরশাদ মিয়াকে গ্রেফতার করে। তখন তিনি জানতে পারেন, রহিমপুর গ্রামে আরেক শাহ আলমের ছেলে এরশাদ মিয়া রয়েছেন। তিনি দীর্ঘদিন যাবত বিদেশে অবস্থান করছেন। এই এরশাদ মিয়াই নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার ওয়ারেন্টভূক্ত পলাতক প্রকৃত আসামি। যাচাই বাছাই না করে ওয়ারেন্টভূক্ত পলাতক আসামী গ্রেফতার করায় জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য কবির হোসেন ও গ্রাম পুলিশ আবদুস সাত্তার জানান, শাহ আলমের ছেলে এরশাদ মিয়া নামে রহিমপুর গ্রামে দু’টি পরিবার রয়েছে। যে এরশাদ মিয়া নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার ওয়ারেন্টভূক্ত পলাতক আসামি তিনি দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকেন। পুলিশ ভুলবশত: সিএনজি চালক এরশাদ মিয়াকে হ্যান্ডকাপ পরালে ভয়ে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। গ্রামের লোকজন প্রথমে তাকে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। অবস্থা বেগতিক দেখে কর্তব্যরত ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। তাৎক্ষনিক কুমিল্লা নেওয়ার পথে এরশাদ মিয়া রাস্তায় মারা যায়।
নবীপুর পশ্চিম ইউপি চেয়ারম্যান ভিপি জাকির হোসেন বলেন, রহিমপুর গ্রামে বাবা ও ছেলে একই নামে দু’জন ব্যক্তি রয়েছে। প্রকৃত যে এরশাদ মিয়া ওয়ারেন্টভূক্ত পলাতক আসামি, সে দীর্ঘদিন যাবত বিদেশে রয়েছেন। গ্রেফতারের পূর্বে পুলিশ ভালভাবে যাচাই বাছাই করার দরকার ছিল। তাহলে এ ঘটনাটি হতো না।
মুরাদনগর থানার এএসআই শেরাজুল ইসলাম বলেন, আমার গ্রেফতার সঠিক ছিল। ধৃত এরশাদ মিয়া অসুস্থ্যবোধ করায় তাকে ছেড়ে দিয়েছি। পরে জানতে পারি এ নামে আরো একজন রয়েছে। সে বিদেশে অবস্থান করছেন।
এ বিষয়ে মুরাদনগর থানার ওসি প্রভাষ চন্দ্র ধরের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও মোবাইল ফোন (০১৩২০-১১৪২৫৬) রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এফআর/অননিউজ