কুমিল্লার মুরাদনগরের বেশির ভাগ ফসলী মাঠ অপরুপ সাজে সেজে উঠেছে। শরিষা ফুলের হলুদ বর্ণে রঙ্গিন হয়ে উঠেছে বিস্তির্ণ ফসলি মাঠ। দেখে মনে হয় হলুদের সাগর।
হিমেল বাতাসে ঢেউ উঠে ঐ হলুদের সাগরে। প্রতি বছরই শীতের শেষ ও বসন্তের শুরুতে এখানকার ফসলী মাঠ গুলো এই রুপে ফিরে আসে। আমরা কত জনই বা তার রুপ কাছ থেকে অবলোকন করেছি। মন ভূলানো এ দৃশ্য প্রান ভরে অবলোকনে, মনের সকল গ্লানি যেন এক নিমিশেই শেষ হয়ে ফিরে আসে প্রশান্তি। কোলাহল বিহীন নিরব নিস্তব্দ প্রতিটি বিলে, কৃষক ব্যস্ত ভালো ফলন ফলাতে, মৌমাছি ব্যস্ত মধু আহরণে, মৌয়ালরা ব্যস্ত মধু সংগ্রহে আর সামান্য কিছু ভ্রমন প্রিয়াসু ব্যস্ত অপরুপ দৃশ্য অবলোকন ও সেলফি তোলতে। সব মিলিয়ে প্রকৃতির এই অপরুপ সাজ দেখে যে কোন মানুষের মন জুড়াবে এক নিমিশেই। উপজেলার ২২টি ইউনিয়নের ভিবিন্ন গ্রামের ফসলী মাঠ গুলোতে লক্ষমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। এই মৌসুমে কৃষকরা সরিষা ছাড়াও সামান্য কিছু জমিতে ধনিয়া, মটর, মুশরী, খেশারী ও তিশির আবাদ করেছে।
সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, একদম শুকনো জমিগুলো, কোথাও কোন কাঁদা নেই। বিলের মাঝখানে দাঁড়ালে চতুপার্শে দুরপ্রান্ত পর্যন্ত শুধু হলুদের সমারোহ। এ যেন সৃষ্টির অপুর্ব লীলাভূমি। অনেক দুরে কুয়াশাচ্ছন্ন গ্রাম গুলোকে ঝাপসা দেখা যায়। স্বল্প আয়ের মানুষেরা অল্প দামে জমি কিনে বাড়ি করে বসবাস করছে বিলের মাঝখানে। বালি হাসের জাঁক ছোট বড় ডোবা গুলোকে অভয় আশ্রম বানিয়ে কখনো পানিতে কখনো আকাশে খেলা করছে। মধু চাষিরা মৌমাছির কাঠের বাক্স নিয়ে বাড়ির পাশের খালি যায়গায় কিংবা পুকুর পাড়ে আস্তানা গেড়ে মধু সংগ্রহ করছে। সরষে ক্ষেতের আইলে বসলে শোনা যায় মৌমাছির গুঞ্জন। দু’এক জন কৃষককে দেখা গেছে ঘুরে ঘুরে তাদের স্বপ্নের ফসল প্রান ভরে দেখছে।
কথা হয় ২/৩ জন কৃষকের সাথে তাঁরা জানায়, অন্য বছরের চেয়ে এবার সরিষার আবাদ বেশি হয়েছে। আশা করছি বৃষ্টি না হলে ফলন খুব ভালো হবে। সরিষার আবাদ কেন বেশি হয়েছে? জানতে চাইলে কৃষক আহাদ মিয়া বলেন, সরকার সরিষার আবাধ বাড়াতে বীজ, সার প্রণোদনা দেয়ায় কৃষকরা আগ্রহী হয়ে সরিষার আবাদ করেছে। ঝড়-বৃষ্টি না হলে বাম্পার ফলনের আশা ব্যক্ত করেন সরিষা চাষিরা।
কৃষি কর্মকর্তা পাভেল খান পাপ্পু বলেন, আমাদের কৃষি অফিস থেকে ৯৯০০ কৃষককে সার ও সরিষা বীজ প্রণোদনা দিয়েছি, এ বছর উপজেলায় ৯০৫২ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। বৃষ্টির কারনে কিছু সরিষা ফসল নষ্ট হয়েছে। আবহাওয়া অনূকুলে থাকলে ভালো ফলন ঘরে তুলতে পারবে কৃষকরা।
এফআর/অননিউজ