২৯শে মার্চের পরে নুতন করে পেয়াজ আমদানির জন্য ইমপোর্ট পারমিট (আইপি) প্রদান করা হবেনা সরকারি এমন সিন্ধান্তের কারনে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পুর্বের অনুমোদন নেওয়া ইমপোর্ট পারমিট (আইপি) এর মাধ্যমে বাড়তি পরিমানে পেয়াজ আমদানি করছেন বন্দরের আমদানিকারকরা। এতে করে গতকয়েকদিন ধরে পেয়াজের বাজার নিন্মমুখি রয়েছে। তবে আইপি বন্ধে পেয়াজের আমদানি বন্ধের খবরে অনেকে পেয়াজ মজুদ শুরু করেছেন এতে করে সামনের দিনে পেয়াজের দাম বাড়ার আশংকা করছেন বন্দরের আমদানিকারকরা। তাই দাম স্বাভাবিক রাখতে পেয়াজ আমদানির ইমপোর্ট পামরিট (আইপি) এর মেয়াদ বাড়ানোর দাবী তাদের।
হিলি স্থলবন্দরে আসা পেয়াজের পাইকাড় আইয়ুব হোসেন বলেন, আমরা রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন মোকামে পেয়াজ সরবরাহ করে থাকি।হিলি স্থলবন্দর দিয়ে গতকয়েকদিন ধরে পর্যাপ্ত পরিমানে পেয়াজ আমদানি হচ্ছে। আমরা শুনেছি যে পেয়াজের আইপি বন্ধ হয়ে যাবে যার কারনে মোকামে যে পার্টির ২ট্রাক পেয়াজ লাগবে সেখানে ৪ট্রাক পেয়াজ পাঠিয়েছি। অর্থাৎ যে চাহীদা তার চেয়ে বেশী বেশী করে পেয়াজ পাঠাচ্ছি কিন্তু বাজারের অবস্থা খারাপ। এর উপর দেশীয় পেয়াজ উঠছে যার কারনে বেচাকেনা তেমন নেই বললেই চলে।যার কারনে পেয়াজের দাম অনেক কম আগে যে পেয়াজ ২৫থেকে ৩৫টাকা ছিল এখন সেই পেয়াজ ১৭টাকা থেকে ২৩টাকা দরে বেচাকেনা হচ্ছে। তবে মোকামে পেয়াজের চাহীদা কম আমদানিকারকদের ঘরে যেমন পর্যাপ্ত পেয়াজ রয়েছে তেমনি আমরা যেসব মোকামে পেয়াজ পাঠাই সেখানেও পর্যাপ্ত পরিমানে পেয়াজ রয়েছে। যার কারনে বেচাকেনা অনেকটা কম বোঝা যাচ্ছে। সামনে যেহেতু রমজান এসময় পেয়াজের একটু বাড়তি চাহীদা থাকে তাই এসময় বেচাকেনা কি হবে বলা যাচ্ছেনা।
হিলি স্থলবন্দরের পেয়াজ আমদানিকারক মামুনুর রশীদ বলেন, মাঘের হঠাৎ বৃষ্টির পরে বাজারে দেশীয় পেয়াজের সরবরাহ কমে গেলে দাম উদ্ধমুখি হতে থাকে। এমতাবস্থায় দেশের বাজারে পেয়াজের সরবরাহ স্বাভাবিক ও দাম নিয়ন্ত্রনে রাখতে বন্দর দিয়ে পর্যাপ্ত পরিমানে পেয়াজ আমদানি করা হচ্ছে গড়ে প্রতিদিন ৩৫/৪০ট্রাক পেয়াজ আমদানি হচ্ছে।এতে করে দুসপ্তাহ ধরেই পেয়াজের দাম নিন্মমুখি অবস্থায় রয়েছে দাম ১৭টাকা থেকে ২৩টাকার মধ্যে রয়েছে। কিন্তু ২৯মার্চ এর পর নুতন করে পেয়াজের আইপি দেওয়া হবেনা সরকারি এমন সিন্ধান্তের কারনে দেশে পেয়াজের দামের উপর প্রভাব পড়বে দাম বাড়বে।ইতোমধ্যেই পেয়াজের আইপি বন্ধের খবরে অনেকে পেয়াজ আমদানি করে গুদামে মজুদ শুরু করে দিয়েছেন। তবে পেয়াজের আইপি দেওয়া অব্যাহত থাকলে বন্দর দিয়ে যেমন আমদানি অব্যাহত থাকবে তাতে করে দেশে যেমন পেয়াজের বাজার স্বাভাবিক থাকবে। সেই সাথে আসন্ন রমজানে পেয়াজের দাম বাড়বেনা বলেও জানান তিনি।
অপর পেয়াজ আমদানিকারক বাবলুর রহমান বলেন, আমাদের তো পেয়াজ আমদানির ইমপোর্ট পারমিট (আইপি) রয়েছে। কিন্তু সেগুলোর মেয়াদ ২৯শে মার্চ পর্যন্ত এর পর কোন পেয়াজ আমদানি হবেনা।আমাদের যেহেতু এলসি দেওয়া রয়েছে যাতে আইপিগুলো শেষ করতে হবে যার কারনে আমরা ব্যাপক পরিমানে পেয়াজ ভারতে লোডিং শুরু করে দিয়েছি। ইতোমধ্যেই গতকয়েকদিন ধরে বন্দর দিয়ে বাড়তি পরিমানে পেয়াজ আমদানি অব্যাহত রয়েছে। এছাড়াও পর্যাপ্ত পরিমানে পেয়াজের ট্রাক ভারতে দাড়িয়ে রয়েছে যেগুলো দেশে প্রবেশের জন্য পাইপলাইনে রয়েছে। এতে করে চাহীদার তুলনায় দেশের বাজারে সরবরাহ বাড়ায় পেয়াজের বাজারে ধ্বস নেমেছে। যেখানে আমাদের পেয়াজে পড়তা ২৭টাকা সেখানে বিক্রি হচ্ছে ১৭ থেকে ২৩টাকা এতে করে অনেক টাকা লোকশান গুনতে হচ্ছে।
হিলি স্থলবন্দর উদ্ভিদসংগনিরোধ কেন্দ্রের উপসহকারী সংগনিরোধ কর্মকর্তা ইউসুফ আলী বলেন, হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেয়াজ আমদানি অব্যাহত থাকার পাশাপাশি পেয়াজ আমদানির অনুমতি ইমপোর্ট পারমিট (আইপি)প্রদান চালু রয়েছে। তবে যেসব আইপিগুলো ইস্যু করা হচ্ছিল সেগুলো ২৯মার্চ পর্যন্ত সর্বশেষ সময়সীমা নির্ধারন করে দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু কেন এই সময়সীমা নির্ধারন করে দেওয়া হচ্ছিল এটি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ ভালো বলতে পারতেন।তবে যেহেতু ২৯মার্চ পর্যন্ত পেয়াজের আইপির সময়সীমা নির্ধারন করে দেওয়া হয়েছিল সেক্ষেত্রে এর পর থেকে বন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে যাবে।তবে গতকাল রবিবার বানিজ্য মন্ত্রনালয় থেকে একটি চিঠি কৃষিমন্ত্রনালয় দেওয়া হয়েছে যাতে উল্লেখ করা হয়েছে বর্তমানে পেয়াজের মুল্য স্থিতিশীল রয়েছে ২৯মার্চ এর পরে আইপি ইস্যু না করলে বাজার অস্থিতিশীল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই আসন্ন রমজান মাসকে উপলক্ষ্য করে পেয়াজের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে পবিত্র ঈদুল ফিতর পর্যন্ত আইপি ইস্যু অব্যাহত রাখা প্রয়োজন। কিন্তু এবিষয়ে আমাদের মন্ত্রনালয় থেকে এখনো কোন সিন্ধান্ত এখনো আসেনি। যদি আইপি ইস্যুর সিন্ধান্ত আসে সেক্ষেত্রে বন্দর দিয়ে পেয়াজ আমদানি অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।