আজ ৪ডিসেম্বর উপমহাদেশের প্রখ্যাত চারণ কবি একুশে পদকপ্রাপ্ত শিল্পী বিজয় সরকারের ৩৮তম মৃত্যুবার্ষিকী। বার্ধ্যকজনিত কারণে ১৯৮৫ সালের এই দিনে ভারতে পরলোকগমন করেন কবিয়াল বিজয় সরকার। পশ্চিমবঙ্গের কেউটিয়ায় তাকে সমাহিত করা হয়। তার দুই ছেলে কাজল অধিকারী, বাদল অধিকারী ও মেয়ে বুলবুলি অধিকারী ভারতে বসবাস করেন।
কবিয়াল বিজয় সরকার ১৯০৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি নড়াইল সদর উপজেলার বাশগ্রাম ইউনিয়নের নিভৃতপল্লী ডুমদি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা নবকৃষ্ণ অধিকারী ও মা হিমালয়া দেবী। বিজয় সরকার নবমশ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। তার দুই স্ত্রী বীণাপানি ও প্রমোদা অধিকারীর কেউ বেঁচে নেই। বিজয় সরকার একাধারে গীতিকার, সুরকার ও গায়ক ছিলেন। ১ হাজার ৮শ’র বেশি গান লিখেছেন তিনি। প্রকৃত নাম বিজয় অধিকারী হলেও সুর, সঙ্গীত ও অসাধারণ গায়কী ঢঙের জন্য ‘সরকার’ উপাধি লাভ করেন। ‘পাগল বিজয়’ হিসেবে সমধিক পরিচিত তিনি।
আধ্যত্মিক ও অসা¤প্রদায়িক চেতনার বিজয় সরকার গেয়েছেন-‘নবী নামের নৌকা গড়/ আল্লাহ নামের পাল খাটাও/ বিসমিল্লাহ বলিয়া মোমিন/ কূলের তরী খুলে দাও...।’ কিংবা ‘আল্লাহ রসূল বল মোমিন/ আল্লাহ রসূল বল/ এবার দূরে ফেলে মায়ার বোঝা/ সোজা পথে চল...।’ গেয়েছেন-যেমন আছে এই পৃথিবী / তেমনিই ঠিক রবে/ সুন্দর পৃথিবী ছেড়ে একদিন চলে যেতে হবে...।
আরো গেয়েছেন-‘পোষা পাখি উড়ে যাবে সজনী/ ওরে একদিন ভাবি নাই মনে/ সে আমারে ভুলবে কেমনে...।’ প্রিয়জনের উদ্দেশ্যে লিখেছেন-‘তুমি জানো নারে প্রিয়/ তুমি মোর জীবনের সাধনা...’।
২০১৩ সালে মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত করা হয় অসম্প্রদায়িক চেতনার এই সূরস্রষ্টা চারণ কবি বিজয় সরকারকে।
বিজয় সরকারের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে চারণ কবি বিজয় সরকার ফাউন্ডেশনের আয়োজনে বিকাল ৪টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি চত্বরে কবির প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, উন্মুক্ত বিজয়গীতি পরিবেশন, আলোচনা সভা এবং কবিগানের আসর। এছাড়া কবির জন্মভূমি সদরের বাঁশগ্রাম ইউনিয়নের ডুমদীতেও এ উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
এফআর/অননিউজ