পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে মাদ্রাসা থেকে আলিম শাখার এক শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করানোর অভিযোগ উঠেছে। এদিকে পরীক্ষার কেন্দ্র সচিব ওই ভুয়া পরীক্ষার্থী মাহফুজকে (১৭) চিহ্নিত করে থানা পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। এ ঘটনায় ক্ষোভ বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার পঞ্চগড়ের আটোয়ারী মির্জাপুর মাওঃ আজিম উদ্দীন আলিম মাদ্রাসায়।
জানা গেছে, মির্জাপুর মাওঃ আজিম উদ্দীন আলিম মাদ্রাসার দাখিল পরীক্ষা কেন্দ্রে মঙ্গলবার (৫ মার্চ) অনুষ্টিত হয় ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রের দাখিল পরীক্ষা। আর এ কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী মির্জাপুর ইউনিয়নের লক্ষিপুর গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে পরীক্ষার্থী শাহজাহান পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করায় তার পরিবর্তে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে মাহফুজ। এর মাঝে গোপনে পক্সি পরীক্ষার্থীর বিষয়টি কেন্দ্র সচিব আব্দুল মান্নান জানতে পারে। পরে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে ভুয়া পরীক্ষার্থী শনাক্ত করে থানা পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে থানা হেফাযতে নেয়। এর মাঝে আটক শিক্ষার্থী মাহফুজের পরিবারের অভিযোগ তাকে মাদ্রাসা থেকে ভুল বুঝিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়েছে লক্ষিপুর ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল মতিন।
আটক শিক্ষার্থীর বাবা আব্দুর রহিম বলেন, আমার ছেলে মাদ্রাসায় তার আলিমের টেস্ট পরীক্ষা দিতে বাড়ি থেকে মাদ্রাসায় যায়। এর মাঝে দুপুরে খবর আসে তাকে দাখিল পরীক্ষার একটি কেন্দ্র থেকে পুলিশ আটক করেছে। আমার সন্তান এমন কাজের সাথে যুক্ত নয়, তাকে ভুল বুঝিয়ে সেখানে নিয়ে গেছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত বিচার দাবি করছি।
আটক শিক্ষার্থীর সহপাঠি আবু সুফিয়ান বলেন, গত ৩-৪ দিন ধরে মতিন হুজুর আমাদের এক পরীক্ষার্থীর পরিবর্তে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে বলে। কিন্তু আমরা না করি। এর মাঝে আমরা আজ সকালে মাদ্রাসায় টেস্ট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে যাওয়ার পথে হুজুর তাকে মোটরসাইকেলে তুলে নেয়ি পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে যায়। এর মাঝে পরীক্ষায় কোন সমস্যা হবে না বলে তাকে সাহস দেয় হুজুর। এখন আমার বন্ধুকে ফাঁসিয়েছে হুজুর। আমরা হুজুরের বিচার ও আমার বন্ধুর মুক্তি চাই।
এদিকে স্থানীয়রা বলেন, লক্ষিপুর ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার এই অধ্যক্ষর বিরুদ্ধে নিয়োগসহ বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। একাধীকবার বিভিন্ন অপকর্ম করেছে। এর মাঝে একজন কৃষক পরিবারের সাধারণ শিক্ষার্থীকে এমন কাজে ফাসিয়ে তার জীবন শেষ করে দিলো। আমরা এ ঘটনার বিচার দাবি করছি, এবং জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।
তবে শিক্ষার্থী আটকের পর অভিযুক্ত অধ্যক্ষ আব্দুল মতিনের সাথে মুঠোফোনে একাধীকবার যোগাযোগ করা হলে পাওয়া যায় নি। তবে পরীক্ষা কেন্দ্র সচিব আব্দুল মান্নান বলছেন মূল পরীক্ষার্থী শাহজাহানকে এ ঘটনার পর বোর্ডে লিখিত জানিয়ে বহিস্কার করা হয়েছে। এবং আটক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
আটোয়ারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেদুল হাসান বলেন, এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ সহ বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এর সাথে অন্য কেও জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জানা গেছে, আটক শিক্ষার্থী মাহফুজ একই উপজেলার লক্ষিপুর ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার আলিম শাখার শিক্ষার্থী। সে ধামোর ইউনিয়নের গাজবাড়ি সরকারপাড়া গ্রামের আব্দুল রহিমের ছেলে।
এফআর/অননিউজ