রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বৃহস্পতিবার ছয়টি আফ্রিকান দেশকে বিনামূল্যে শস্য দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। ইউক্রেনের শস্য রপ্তানি চুক্তি থেকে প্রত্যাহারের কয়েক দিন পর মহাদেশের নেতাদের সাথে পুতিন একটি শীর্ষ সম্মেলন যোগ দিয়েছেন।
পুতিনের নিজ শহর সেন্ট পিটার্সবার্গে দুই দিনের শীর্ষ সম্মেলন আফ্রিকায় তার সমর্থন যাচাই করছেন। গত বছর ইউক্রেনে সামরিক হস্তক্ষেপের কারণে আন্তর্জাতিক বিচ্ছিন্নতা সত্ত্বেও এই দেশগুলোর নেতারা পুতিনের প্রতি সমর্থন বজায় রেখেছেন।
রাশিয়া গত সপ্তাহে একটি চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে অস্বীকার করেছে যার অধীনে ইউক্রেনীয় শস্য রপ্তানি কৃষ্ণ সাগরের মধ্য দিয়ে আফ্রিকাসহ বিশ্ব বাজারে পৌঁছানোর জন্য খাদ্যের দামের উপর চাপ কমিয়েছে।
শীর্ষ সম্মেলনে একটি মূল বক্তব্যে পুতিন বলেছেন, রাশিয়া ‘ইউক্রেনীয় শস্যের বিকল্প’ ব্যবস্থা করতে পারে এবং ছয়টি আফ্রিকান দেশে শস্য পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
পুতিন বলেন, ‘আগামী মাসগুলোতে আমরা বুরকিনা ফাসো, জিম্বাবুয়ে, মালি, সোমালিয়া, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র এবং ইরিত্রিয়ায় ২৫,০০০ থেকে ৫০,০০০ টন শস্য বিনামূল্যে সরবরাহ নিশ্চিত করতে সক্ষম হব।’
এক বছরের মধ্যে, শস্য চুক্তিটি প্রায় ৩৩ মিলিয়ন টন শস্য ইউক্রেনীয় বন্দরগুলো ছেড়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়, যা বিশ্বব্যাপী খাদ্যের দাম স্থিতিশীল করতে এবং ঘাটতি এড়াতে সহায়তা করে।
চুক্তি স্থগিত হওয়ার পর থেকে ইউক্রেনের বন্দরগুলোর অবস্থান দক্ষিণ ওডেসা অঞ্চলে আক্রমণ তীব্র হয়েছে। রাশিয়ান সেনাবাহিনী বলেছে, তারা সামরিক অবকাঠামোগুলোতে আঘাত করেছে।
ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র নাটালিয়া গুমেনিউক এএফপি’কে বলেছেন, ‘বিশ্বকে খাদ্য দিতে পারে এমন একটি দেশ হিসাবে ইউক্রেনকে অবরুদ্ধ করার জন্য রাশিয়া ‘কার্যত সমস্ত’ বন্দর অবরোধ আরোপ করেছে।’
গুমেনিউক বলেছেন, ইউক্রেনের দ্রুত পশ্চিমা বিমান প্রতিরক্ষা দরকার যাতে হামলা থেকে শস্য সুবিধাগুলো রক্ষা করা যায়, দুই বা তিন মাসে ইউক্রেনের ‘আর বন্দর সুবিধা নাও থাকতে পারে’।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন দরিদ্র দেশগুলোকে সংকটের দিকে ঠেলে দেওয়ার জন্য শস্য রফতানি বিঘেœর বিষয়ে জবাবদিহি করতে সম্মেলনে যোগদানকারী আফ্রিকান নেতাদের চাপ দিয়েছিলেন।
ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘তারা জানে এই বর্তমান পরিস্থিতির জন্য কে দায়ী’। বৃহস্পতিবার নিউজিল্যান্ড সফরকালে তিনি বলেন, ‘আমার প্রত্যাশা রাশিয়া আমাদের আফ্রিকান অংশীদারদের কাছ থেকে এটি স্পষ্টভাবে শুনতে পাবে।’
শুক্রবার পর্যন্ত অনুষ্ঠিত রাশিয়া-আফ্রিকা শীর্ষ সম্মেলনে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসাসহ ১৭ জন আফ্রিকান নেতা যোগ দেয়ার কথা। ক্রেমলিন পশ্চিমা দেশগুলোকে অভিযুক্ত করেছে, যে তারা আফ্রিকান রাষ্ট্রগুলোকে এই ধরনের দ্বিতীয় সম্মেলনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করছে।
সূত্র: বাসস
এফআর/অননিউজ