আমদানি বাড়ায় হিলি স্থলবন্দরে ২৫টাকায় নামলো পেয়াজের দাম
হিলি প্রতিনিধি।।
দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আগের চেয়ে পেয়াজের আমদানি বাড়ায় দেশের বাজারে চাহীদার তুলনায় পণ্যটির সরবরাহ বেড়েছে। এতে করে সপ্তাহের ব্যবধানে প্রকারভেদে কেজিতে ৭টাকা কমেছে।পুর্বে ৩২ থেকে ৩৫টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও তা কমে ২৫থেকে ৩২টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে খুশি বন্দরে পেয়াজ কিনতে আসা পাইকারসহ নিন্ম আয়ের মানুষজন।সামনের দিনে পেয়াজের দাম আরো কমবে বলে জানান আমদানিকারকগন।
হিলি স্থলবন্দর কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে,বন্দরে ইন্দোর জাতের পেয়াজ পুর্বে ৩২ টাকা বিক্রি হলেও বর্তমানে তা কমে ২৫থেকে ২৭টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। নাসিক জাতের পেয়াজ ২৯ থেকে ৩০টাকা, গুজরাট জাতের পেয়াজ ৩২টাকা, নগর জাতের পেয়াজ ৩২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে যা পুর্বে ৩৫ থেকে ৩৬টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল। একইভাবে হিলির কাচাবাজারেও খুচরাতে সবধরনের পেয়াজের দাম কমেছে।
হিলি বাজারে পেয়াজ কিনতে আসা আমিনুল ইসলাম বলেন, বাজারে প্রতিদিনই সব জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে তাতে করে আমাদের মতো খেটে খাওয়া মানুষজনের চরম সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তবে গত তিন চারদিন পুর্বে হিলি বাজারে পেয়াজ ক্রয় করেছি ৩৫টাকা কেজি সেই পেয়াজের দাম আজ কেজিতে ১০টাকা কমে ২৫টাকা বিক্রি হচ্ছে। এতে করে আমাদের জন্য সুবিধা হয়েছে আমরা কম দামে খেতে পারছি এমন দাম থাকলেই আমাদের জন্য ভালো। আগে দাম বাড়তির কারনে যে পরিমান কমিয়ে দিয়েছিলাম এখন প্রয়োজন মত কিনতে পারছি।একেতো কাজ কর্ম তেমন নেই এর উপর সামনে রমজান মাস আসছে তাই পেয়াজের দাম কম থাকলেই আমাদের জন্য ভালো হয় দাম বাড়লে কষ্ট হয়।
হিলি বাজারের পেয়াজ বিক্রেতা মনিরুল আলম বলেন, আসলে একসপ্তাহ পুর্বে বন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেয়াজ আমদানির পরিমান কম ছিল যার কারনে পেয়াজের দামটা একটু বেশী ছিল। সেমসয় আমরা ৩৪ থেকে ৩৬টাকা বিক্রি করেছি। বর্তমানে আমদানি বাড়ার কারনে বাজারে সরবরাহ বাড়ায় সেটি কমে এখন বিক্রি করছি ২৫ থেকে ২৮টাকা করে। আগামীতে আরো যদি আমদানি বাড়ে তাহলে দাম আরো কমার সম্ভাবনা রয়েছে। একইভাবে দেশীয় পেয়াজের দাম পুর্বের তুলনায় কমেছে।
হিলি স্থলবন্দরে পেয়াজ কিনতে আসা আইয়ুব হোসেন বলেন, বাজারে দেশীয় পেয়াজের সরবরাহ কম ও দাম বাড়ার কারনে মোকামগুলোতে ভারতীয় পেয়াজের চাহীদা বেড়েছে। যার কারনে আমরা হিলি স্থলবন্দর থেকে পেয়াজ ক্রয় করে ঢাকা চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করছি। তবে পুর্বে বন্দর দিয়ে পেয়াজের আমদানি কম হওয়ার দাম বাড়তির দিকে ছিল এখন আমদানি বাড়ার কারনে দাম কমতির দিকে রয়েছে। এতে করে আমরা যেমন কম দামে কিনে মোকামে পাঠাতে পারছি তেমনি মানুষ কমদামে খেতে পারছে।
হিলি স্থলবন্দর আমদানি রফতানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশীদ বলেন, চলতি মৌসুমে বাজারে দেশীয় মুড়িকাটা পেয়াজের সরবরাহ ভালো থাকায় দাম কমতির দিকে ছিল। যার কারনে দেশের বাজারে আমদানিকৃত পেয়াজের চাহীদা তেমন না থাকায় বন্দর দিয়ে পেয়াজের আমদানি কমিয়ে দেন আমদানিকারকরা। তবে মাঘের হঠাৎ বৃষ্টিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পেয়াজের ক্ষেত নষ্ট হয়ে উৎপাদন ব্যাহত হয়। এতে বাজারে দেশীয় পেয়াজের সরবরাহ কমায় দাম উদ্ধমুখি হতে থাকে। পেয়াজের দাম হাফ সেঞ্চুরি পার করে ফেলে এতে করে বিপাকে পড়েন নিন্ম আয়ের মানুষজন। এতে করে দেশের বাজারে আমদানিকৃত পেয়াজের চাহীদা যেমন বাড়তে থাকে তেমনি দাম বাড়তে থাকে। এমন অবস্থায় দেশে পেয়াজের সরবরাহ স্বাভাবিক ও দাম নিয়ন্ত্রনে রাখতে আবারো বন্দর দিয়ে পেয়াজের আমদানি বাড়িয়েছেন আমদানিকারকরা।এতে করে বন্দর দিয়ে পেয়াজের আমদানি বাড়ায় পণ্যটির সরবরাহ বাড়ায় দাম কমে এসেছে। সেই সাথে দেশীয় পেয়াজের সরবরাহ কিছুটা বাড়ায় সেটির দামো কমে এসেছে যার প্রভাব ভারতীয় পেয়াজের উপর পড়ছে। এছাড়া পেয়াজের পর্যাপ্ত পরিমানে এলসি দেওয়া রয়েছে তাতে করে সামনের দিনে পেয়াজের আমদানি যেমন বাড়বে তেমনি দাম কমে আসবে আমদানির এমন ধারা অব্যাহত থাকলে আসন্ন রমজানে পেয়াজের দাম আরো কমবে।
হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেয়াজ আমদানি অব্যাহত রয়েছে। তবে পেয়াজের আমদানি গতসপ্তাহের তুলনায় চলতি সপ্তাহে কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। গতসপ্তাহে যেখানে বন্দর দিয়ে ১৮/২০ট্রাক করে পেয়াজ আমদানি হতো বর্তমানে তা বেড়ে ৩০থেকে ৩৫ ট্রাক করে পেয়াজ আমদানি হচ্ছে।বন্দর দিয়ে গত ৫মার্চ থেকে ১০মার্চ পর্যন্ত এই ৬দিনে ২০৩টি ট্রাকে ৫হাজার ৭৮৬টন পেয়াজ আমদানি হয়েছে।পেয়াজ যেহেতু কাচাপণ্য গরমে দ্রুত এটি পচে নষ্ট হয়ে যায় যার কারনে আমদানিকারকগন যেন দ্রুত তা খালাস করে নিতে পারেন সেলক্ষ্যে বন্দর কতৃপক্ষ সবধরনের ব্যবস্থা গ্রহন করে রেখেছে।