মুরাদনগর, কুমিল্লা প্রতিনিধি।।
আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলাতে গ্রামীণ এ জনপদের দ্বীনি শিক্ষার আলো ছড়ানোর প্রয়াসে বি চাপিতলা মাওলানা মিজানুর রহমান দারুচ্ছুন্নাত মাদরাসাটি ২০১০ সালে ৯০ শতাংশ জমির উপরে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। মাত্র ৫০জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করে বর্তমানে মাদরাসাটিতে এফতেদায়ী থেকে দাখিল পর্যন্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫৩৫ জন। ২০১৪ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি সুনামের সাথে শিক্ষার মান ধরে রাখলেও প্রতিষ্ঠানটি এমপিও হয়নি। দাখিল পরিক্ষার অনুমোদন না থাকায় অন্য প্রতিষ্ঠানের নামে রেজিস্ট্রেশন করে পরিক্ষা দিতে হচ্ছে। রয়েছে অবকাঠামোর সংঙ্কট।
২০১৪ সালে প্রাথমিক স্বিকৃতি লাভের পর পিএসসিতে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বৃত্তি সহ ১০০% পাশের সুনাম অর্জন করেন। ২০১৬ সালে জেডেসিতে রেজিষ্ট্রেশন পাওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটি আরেক ধাপ এগিয়ে যায়। মিজানুর রহমান দারুচ্ছুন্নাত মাদরাসাটি জেডেসি পরিক্ষায় এখন পর্যন্ত আট বার অংশগ্রহন করে কয়েকটি বৃত্তিসহ শতভাগ পাশের ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছেন। শিক্ষকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে ২০১৯ পিএসসি পরিক্ষায় ৭টি জিপিএ ৫ নিয়ে উপজেলায় শির্ষস্থান অর্জন করেন।
২০১৯ সালে জেডেসি পরিক্ষায় রাকিবুল হাসান নামের এক ছাত্র পয়েন্ট তালিকায় জেলার মধ্যে শির্ষস্থান অর্জন করেন। আমাদের ছাত্র মাহমুদুল্লা এই মাদরাসা থেকে জেডিসি পাশ করে এখন জাপান ফোজি ইন্টারন্যাশনাল লেঙ্গুয়েজ ইনিস্টিটিউটে পড়াশোনা করছেন। ২০২১ সালে আমাদের প্রথম দখিল ব্যাচ শুরু হয়,এপর্যন্ত তিনটি ব্যাচে অনেক গুলো জিপিএ ৫সহ আমাদের শিক্ষার্থীরা শতভাগ পাস করেছে। ২০২৩ সালের দখিল পরিক্ষায় ১০টি জিপিএ-৫, ১০টি পেয়ে উপজেলায় শির্ষস্থান অর্জন করেন। কিন্তু পরিতাপের বিষয় আমাদের মাদরাসায় দখিল পরিক্ষার অনুমোদন না থাকায় অন্য স্কুলের নামে রেজিস্ট্রেশন করে পরিক্ষা দিতে হচ্ছে, যার ফলে আমাদের অর্জন চলে যায় অন্যের ঝুলিতে।
মাদরাসার সুপার মোখলেছুর রহমান মুনিরী প্রতিবেদকের কাছে এভাবেই তার মাদরাসা সম্পর্কে বর্ণনা করেন। বি-চাপিতলা মাওলানা মিজানুর রহমান মুনিরী দারুচ্ছুন্নাত মাদরাসাটি কুমিল্লার মুরাদনগরে রামচন্দ্রপুর দক্ষিন ইউনিয়নে বি-চাপিতলা গ্রামে প্রতিষ্ঠিত।
প্রতিষ্ঠান পরিচালনা পরিষদের সভাপতি কামরুল হাসান মেম্বার বলেন, মাওলানা মিজানুর রহমান মুনিরী সাহেব তের বছর আগে মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন। সরকারী কোন অনুদান না থাকায় টিনের চালার নিচে ক্লাশ নিতে হচ্ছে। এমপিও ভুক্ত না হওয়ায় শিক্ষকদের বেতন দেওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পরে।
আরবি শিক্ষিক আশরাফুল ইসলাম বলেন, আমরা ২১জন শিক্ষক অত্র পতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করছি। মাশাআল্লাহ সবাই অনার্স, মাষ্টারস, কামিল শেষ করে এখানে আছি। পরিচালনা পর্ষদ যথেষ্ঠ মুল্যয়ন করে আমাদের সম্মানি দিচ্ছে। এমপিও হলে এবং সরকারী সুযোগ সুবিধা পেলে আমরা আরো উৎসাহিত হতাম।
মাদরাসার আরেক শিক্ষক কুতুবউদ্দিন রাফি বলেন, আমরা আমাদের শিক্ষার্থিদের যোগ্য করে তোলার জন্য আপ্রান চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। অনেক সময় আমরা আমাদের পকেটের টাকা দিয়ে তাদের বই খাতা কিনে দিচ্ছি। সরকারের সদয় দৃষ্টি পেলে আমরা আরো ভালো কিছু করতে পারবো।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘ বি-চাপিতলা মাওলানা মিজানুর রহমান দারুচ্ছুন্নাত মাদরাসাটি গ্রামীন জনপদে আলো ছড়াচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির সার্বিক কল্যাণে আমাদের সহযোগিতা অব্যবহ থাকবে।’
এফআর/অননিউজ