বন্যার পানিতে বাড়িঘর তলিয়ে যাওয়ায় নোয়াখালীর সদর উপজেলার নেওয়াজপুর ইউনিয়নের একটি আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা সামসুন নাহার নামের এক প্রসূতির কোলজুড়ে ফুটফুটে নবজাতক এসেছে। পরিবেশ পরিস্থিতি বিবেচনা করে তার নাম রাখা হয় বন্যা। সোমবার (২৬ আগস্ট) রাতে উপজেলার নেওয়াজপুর ইউনিয়নের মৃধারহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে ওই নবজাতকের জন্ম হয়।
প্রসূতি সামসুন নাহার নোয়াখালীর সদর উপজেলার নেয়াজপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের বাহাদুরপুর গ্রামের মো. হেলালের স্ত্রী।
জানা যায়, বন্যায় বাড়িঘর তলিয়ে যাওয়ায় সামসুন নাহারকে নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে ওঠেন তার স্বামী হেলাল। সোমবার (২৬ আগস্ট) রাত ৯টার দিকে প্রসব বেদনা উঠলে আশ্রয়কেন্দ্র থাকা শরীফা খাতুনের সহযোগিতায় সাড়ে ৯টার দিকে জন্ম নেয় ফুটফুটে কন্যা সন্তান। এসময় আশ্রয়কেন্দ্রের বাসিন্দারা খুশিতে কান্না করে দেন। তাৎক্ষণিক সবাই নবজাতকের নাম রাখেন বন্যা।
নবজাতকের বাবা হেলাল বলেন, আমার কাছে হাসপাতালে নেওয়ার মতো টাকা নাই। বুক সমান পানিতে হাসপাতালে নেওয়া যেতো না। আল্লাহর কি কুদরত সেখানে শরীফা খাতুন নামের এক নার্স ছিল। তাই নরমাল ডেলিভারিতে আমার রাজকন্যা এসেছে। তার নাম বন্যা রাখা হয়েছে। আমি তাতে খুশি আছি। আমার সন্তানের জন্য দোয়া চাই।
স্থানীয় বাসিন্দা সজীব খান ও টিটু রাজ বলেন, মৃধারহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রায় ৩০০ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। আমরা সামাজিকভাবে সবার দেখভাল করছি। সবাইকে সাধ্য অনুযায়ী দুমুঠো ভাতের ব্যবস্থা করি। আমাদের কাছে সবাই মিলে একটা পরিবার। আমাদের পরিবারে নতুন সদস্য হলো বন্যা। তাকে পেয়ে আমরা আনন্দিত। তার দিকে সব সময় আমাদের আলাদা নজর থাকবে।
নোয়াখালীর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আখিনূর জাহান নীলা বলেন, এই দুর্যোগকালীন পরিস্থিতিতে সমাজের মানুষজন এগিয়ে এসে সুন্দর হৃদয়ের পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন। এমন দুর্যোগ একদিন কেটে যাবে ঠিকই কিন্তু আমাদের মনের মধ্যে সময়টুকু গেথে থাকবে। আমি স্থানীয় যুবসমাজকে ধন্যবাদ জানাই তারা আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা মানুষের পাশে আছে। তাদের সহযোগিতায় প্রসূতি মায়ের কোলজুড়ে ফুটফুটে একটা বাবু এসেছে। নবজাতক ও প্রসূতি ভালো থাকুক এই দোয়া করি।
সূত্রঃ বিডি24লাইভ
একে/অননিউজ24