জার্মান সরকারের ধারণা, নতুন আইনের আওতায় মোট ৯৮ হাজার জন চান্সেন আউফেন্টবাল্টরেশট বা ১৮ মাসের ভিসার সুবিধা পেতে আবেদন করতে পারে। ফাইল ফটো। বি. থিজেন/ ডিপিএ/চিকচার অ্যালায়েন্স
বহিষ্কারের নির্দেশের ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা বা ডুলডুং নিয়ে থাকা আশ্রয়প্রার্থীদের দীর্ঘমেয়াদে বসবাসের অনুমতি পাওয়ার বিষয়টি সহজ করতে আইন পাস করেছে জার্মান পার্লামেন্ট।
বসবাসের অনুমতি পাওয়ার অধিকার বা চান্সেন আউফেন্টহাল্টসরেশ্ট নামে শুক্রবার জার্মান পার্লামেন্টে একটি বিল পাস করেছেন দেশটির আইনপ্রণেতারা। অভিবাসন আইন সংস্কার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এই উদ্যোগ নিয়েছে ক্ষমতাসীন জোট সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এসপিডি), গ্রিন পার্টি এবং ফ্রি ডেমোক্র্যোটিক পার্টি (এফডিপি)।
কী আছে আইনে
নতুন এ আইনের আওতায় ডুলডুংধারী যেসব বিদেশি জার্মানিতে পাঁচ বছর ধরে অবস্থান করছেন তারা ১৮ মাস থাকার অনুমতি পাবেন। চলতি বছরের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত যাদের বসবাসের সময়সীমা পাঁচ বছর পূর্ণ হয়েছে এই আইনের আওতায় তারা এরই মধ্যে সুবিধাটি পাবেন। তবে কারো বিরুদ্ধে অপরাধের সঙ্গে যুক্ত না থাকার প্রমাণ থাকতে হবে।
দীর্ঘমেয়াদে দেশটিতে থাকতে এই ১৮ মাস সময়ে প্রয়োজনীয় ভাষাগত যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। সেই সঙ্গে নিজের জীবিকার ব্যবস্থাও করতে হবে।
তবে নতুন আইন অনুযায়ী, ১৮ মাসের সুযোগ আর বাড়ানো হবে না। অর্থাৎ, এই সময়ের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদে থাকার শর্ত পূরণ করতে না পারলে তাকে ডুলডুং ক্যাটাগরিতে ফেরত যেতে হবে।
তাছাড়া নতুন আইনে, জার্মানির আশ্রয় আবেদনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা বিএএমএফ আর আবেদনকারী ব্যক্তির আন্তর্জাতিক সুরক্ষার বিষয়টি নিয়মিত যাচাই বাছাই করবে না। শুধু প্রয়োজন হলে অর্থাৎ আবেদনকারী ব্যক্তির দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতির বিশেষ উন্নতি ঘটলেই কেবল এই বিষয়টি যাচাই করা হবে।
শুক্রবারের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের ভোটে তিনশ ৭১ জন বিলের পক্ষে ভোট দেন। ২২৬ জন সাংসদ বিলের বিপক্ষে এবং ৫৭ জন ভোট দানে বিরত থাকেন।
নতুন আইনের কী প্রভাব?
সরকারের হিসেব অনুযায়ী, চলতি বছরের শুরু পর্যন্ত জার্মানিতে ডুলডুং নিয়ে বসবাসরত অভিবাসীর সংখ্যা ছিল দুই লাখ ৪২ হাজার। তাদের মধ্যে প্রায় এক লাখ ৩৭ হাজার জনের বসবাসের মেয়াদ পাঁচ বছর পূর্ণ হয়েছে।
সরকারের ধারণা, নতুন আইনের আওতায় মোট ৯৮ হাজার জন চান্সেন আউফেন্টবাল্টরেশট বা ১৮ মাসের ভিসার সুবিধা পেতে আবেদন করতে পারে। তার মধ্যে ৩৩ হাজার ৫০০ জন দীর্ঘমেয়াদে দেশটিতে থাকার অনুমতি পেতে পারেন।
‘ডুলডুং’ হচ্ছে এক ধরনের সাময়িক থাকার অনুমতি যা ব্যবহার করে অনিয়মিত অভিবাসীরা জার্মানিতে কিছুদিনের জন্য থাকতে পারেন। এটি দেশটিতে নিয়মিত বসবাসের কোনো অনুমতিপত্র নয় বরং ফেরত যেতেই হবে এই বাধ্যবাধকতা মেনে নিয়ে কিছুদিনের জন্য থাকার একটি সুযোগ। তবে এই সুযোগ অনেকের ক্ষেত্রে কিছুদিন পরপর বাড়ানো হয়।
ডুলডুং সাধারণত তাদের দেওয়া হয় যাদের আন্তর্জাতিক সুরক্ষার আবেদন বাতিল হয়েছে বা যারা জার্মানিতে থাকার পূর্ণ অনুমতি পাননি। এক্ষেত্রে এমন মানুষরা গুরুত্ব পান যাদের আশ্রয় আবেদন বাতিল হলেও দেশে ফেরত পাঠানো নিরাপদ নয়। আশ্রয়প্রার্থী অন্তঃসত্ত্বা নারী কিংবা আশ্রয়ের আবেদন করার পর যারা পড়াশোনা বা কোনো প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন তাদেরও ডুলডুং দেওয়া হয়ে থাকে।