নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ সরকারী কলেজ মাঠে প্রশাসনের ইজারা বিজ্ঞপ্তির আগেই অস্থায়ী কোনবানীর পশুর হাট বসানোর প্রস্তুতি শেষ করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের একটি সিন্ডিকেট। মোগরাপাড়া ইউনিয়নের শতাধিক আ’লীগ নেতার সিন্ডিকেট করে কলেজ মাঠে এ হাট বসানোর কাজ শেষ করেছেন। তবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোন কোরবানী পশুর হাটের ইজারা বিজ্ঞপ্তি বা দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন এক কর্মকর্তা। প্রভাব বিস্তার করে এ হাট বসানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা প্রশাসন হাটের শিডিউল বিক্রি কিংবা ইজারাদার নির্ধারণ না করলেও ইতোমধ্যে সোনারগাঁ সরকারি কলেজের অনার্স শাখার মাঠে বাঁশের খুঁটি পুঁতে হাটের প্রস্তুতি শেষ করেছেন সিন্ডিকেট।
জানা যায়, উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রতি বছর ১৭টি অস্থায়ী পশুর হাটের শিডিউল বিক্রির মাধ্যমে ইজারা দিয়ে থাকে উপজেলা প্রশাসন। সরকারী বিধিমালা অনুযায়ী ঈদ উল আযহার এক সপ্তাহ আগে জেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে অস্থায়ী কোরবানীর পশুর হাটের ইজারা দিয়ে থাকেন। এ বছর উপজেলা প্রশাসন এখন পর্যন্ত অস্থায়ী পশুর হাট বসানোর কোনো অনুমতি কাউকে দেয়নি। অনুমতি দেওয়া না হলেও সোনারগাঁ সরকারী কলেজ মাঠে আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুল ইসলাম বাবুর নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট বাঁশ পুতে প্যান্ডেল করে হাটের প্রাথমিক কাজ শেষ করেছেন।
সরেজমিনে সোনারগাঁ সরকারী কলেজ মাঠে গিয়ে দেখা যায়, কোরবানীর পশুর হাট বসাতে ইজারা ছাড়াই প্রস্তুতি শেষ করছেন মোগরাপাড়া এলাকার স্থানীয় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একটি প্রভাবশালী মহল। উপজেলা প্রশাসনের অনুমতি না নিয়ে সরকারি কলেজ মাঠে হাট বসানোর বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে বাঁশের খুঁটি পুঁতে সারিবদ্ধভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে গরু-ছাগল বাঁধার স্থান। রোদ বৃষ্টিতে পশুর নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য বাঁশের খুঁটির ওপরে মজবুত প্যান্ডেল।
হাট প্রস্তুত করার কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা জানান, দৈনিক মজুরিতে মাঠে কাজ করছি। হাট কর্তৃপক্ষ কলেজ মাঠে আমাদের বাঁশ পুঁতে খুঁটি দিয়ে হাট প্রস্তুত করতে বলেছেন। তবে প্রশাসনের অনুমতি নিয়েছেন কিনা সেটা আমরা জানি না।
স্থানীয়রা জানায়, কোরবানীর পশুর হাট বসানোর সময়য় সোনারগাঁ সরকারি কলেজ বন্ধ রাখা হয়। এতে করে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় বিঘœ হয়। হাটের সময় শেষ হলে কোরবানীর পশুর বর্জ্যে পরিবেশও দূষিত হয়। ওই সময় দূর্গন্ধে কলেজের আশ পাশের সড়কে মানুষজন চলাচল করতে পারেন না।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মোগরাপাড়া ইউনিয়নের শতাধিক প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা এ হাট বসিয়ে থাকেন। তাদের মধ্য থেকে নাম মাত্র মূল্যে দু’তিনজন ইজারায় অংশ নেন। এ হাটের ইজারায় অন্য কাউকে অংশ নিতে দেওয়া হয় না। ভয় ভীতি দেখিয়ে অন্যদের সরিয়ে রাখা হয়।
সোনারগাঁ সরকারী কলেজ মাঠে পশুর হাটের সিন্ডিকেটের প্রধান সাইফুল ইসলাম বাবু জানান, এখন পর্যন্ত হাটের ইজারা হয়নি। ইজারা বিজ্ঞপ্তি দিলে হাটের ইজারায় অংশ নিবো। তবে তিনিই ইজারা পাবেন বলে নিশ্চিত করেন।
সোনারগাঁ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আশরাফুজ্জামান অপু বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোন পশুর হাট বসানোর অনুমতি থাকে না। প্রশাসন কিভাবে অনুমতি দেয় আমার জানা নেই। তবে প্রতিষ্ঠান থেকে হাট চলাকালীন সময়ে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে। বিদ্যুৎ ব্যবহারের টাকা ও মাঠ নষ্ট হলে মেরামত করে দেওয়া হয়।
সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ বলেন, মোগরাপাড়া ইউনিয়ন থেকে পশুর হাটের অনুমতির জন্য আবেদন এসেছে। সেটা জেলা প্রশাসনে পাঠিয়েছি। অনুমতি পেলেই সিডিউল বিক্রির করা হবে। এর আগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে পশুর হাট বসাতে বে আইনি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।