ঈদ যাত্রায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৪০ কিলোমিটার সড়কে সীমাহীন দুর্ভোগের শঙ্কা

মোঃ রাসেল আহমেদ,ব্রাহ্মণবাড়িয়া।

আর কদিন বাদেই শুরু হবে ঈদ যাত্রা। বৃহৎ এ ধর্মীয় উৎসবকে সামনে রেখে ঘরমুখো মানুষের ঢল নামবে নৌ-পথ, রেলপথসহ সড়ক পথে। তবে এই ঈদযাত্রায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উপর দিয়ে চলাচলকারী যাত্রীদের যানজটে আটকে পড়াসহ সীমাহীন দুর্ভোগের শঙ্কা তৈরী হয়েছে। যদিও সড়ক ও জনপথ বিভাগ জানিয়েছে ইতিমধ্যেই ঢাকা-সিলেট মহসড়কে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ১৬ কিলোমিটার অংশে দুর্ভোগ কমিয়ে আনাসহ সড়কটিতে স্বাভাবিক যান চলাচলের উপযোগী করে তুলতে কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। মূলত চারলেন প্রকল্পের কাজের কারণে সড়কের বেহাল দশা থাকায় এ শঙ্কার সৃষ্টি।

খোঁজ নিয়ে জান যায়, দেশের পূর্বাঞ্চলের অন্যতম প্রবেশদ্বার বলা হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাকে। ঢাকা- সিলেট মহাসড়ক ও কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক সড়কে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৭৬ কিলোমিটার অংশ রয়েছে। ২০২০ সালের মার্চে শুরু হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নৌ বন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৫০.৫৮ কিলোমিটার চারলেন সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের কাজ। এর আওতায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে খাঁটিহাতা বিশ্ববোড মোড় পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার ও কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কে খাঁটিহাতা বিশ্বরোড মোড় থেকে ধরখার পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার আঞ্চলিক সড়ক রয়েছে। তবে করোনাকালীন সময়সহ নানা জটিলতায় বৃহৎ এই প্রকল্পের কাজে অনেকটাই ধীরগতি। আর এসব সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ৩০/৩৫ হাজার বিভিন্ন ধরণের যানবাহন চলাচল করছে। এরমধ্যে যাত্রীবাহী যানবাহনের সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার। সড়কের বেহাল দশা থাকায় মহাসড়কগুলোর বিভিন্ন পয়েন্টেই প্রতিদিন যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে করে তীব্র গরমে যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

চালক ও যাত্রীরা জানান, দুটি সড়ক দিয়ে বিপুল সংখ্যক যানবাহন চলাচল করার কারনে সড়কগুলোর অবস্থা করুণ। নির্মাণকাজের জন্য সড়কের একপাশ দিয়ে যানবাহন স্বাভাবিক গতিতে চলতে পারে না। প্রতিদিনই যানজটে আটকে থাকতে হয়। যেহেতু সামনে ঈদ তাই যানবাহনের চাপ আরো ২/৩ গুন বাড়বে। এসব কারণে আসন্ন ঈদযাত্রায় চরম ভোগান্তির শঙ্কা দেখা দিয়েছে। সে সাথে খুঁড়াসড়কের তীব্র ধ‚লোবালিতে চলাচলকারীদের দুর্ভোগের অন্ত নেই। এতে সময় নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি সড়কে বিভিন্ন সময়েই ছোটখাট দুর্ঘটনা ঘটেছে। ঝুঁকি নিয়েই সড়কে চলতে হচ্ছে তাদের। রাস্তার খানাখন্দ ও যানযটের কারনে আমাদের এক ঘন্টার যাত্রার পথ চার থেকে পাঁচঘন্টা লেগে যায়। এতে একদিকে যেমন যাত্রীদের মারাত্মক দুর্ভোগরে শিকার তেমনি পন্যপাবাহী ট্রাকগুলো সঠিক সময়ে তাদের গন্তব্যে পৌছতে পারছেনা। তারা ঈদযাত্রাকে সামনে রেখে দ্রæত সড়কগুলো মেরামত করার দাবি জানান।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে আশুগঞ্জ থেকে বিশ্বরোড পর্যন্ত সড়কের উভয় পাশে যান চলাচলের উপযোগী করতে আমাদের কাজ চলমান রয়েছে। ঈদের আগেই তা সম্পন্ন হবে। তবে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের বিশ^রোড মোড় থেকে ধরখার পর্যন্ত প্রয়োজন অনুসারে মেরামত করা হবে। ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রাকে নির্বিঘ করতে আমরা সচেষ্ট রয়েছি।

সরাইল খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকুল চন্দ্র বিশ্বাস জানান, যানজট নিরসনে চালক ও হেলপারদের সচেতন করতে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি হাইওয়ে পুলিশের ৭টি টিম সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে যানযট নিরসনে কাজ করছে।

আরো দেখুনঃ