পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমাকে অপসারণসহ তিন দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন বৃহত্তর খাগড়াছড়ি জেলার মারমা ও ত্রিপুরা সম্প্রদায়।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সচেতন মারমা ও ত্রিপুরা সমাজ ব্যানারে খাগড়াছড়ি রাজপথে সুপ্রদীপ চাকমাকে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা পদ থেকে অপসারণে দাবীতে শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত মিছিলের রাজপথ। পরে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্মারকলিপি প্রদান করেন বৃহত্তর খাগড়াছড়ি জেলার মারমা ও ত্রিপুরা সম্প্রদায় জনগোষ্ঠীর পক্ষে কংজপ্রু মারমা ও প্রশান্ত ত্রিপুরা।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, বৃহত্তর খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় বসবাসকারী বাংলাদেশের পিছিয়ে রাখা সম্প্রদায় মারমা ও ত্রিপুরা। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ৫৩ বছরেও খাগড়াছড়িতে দুটি সম্প্রদায়কে সকলকিছু থেকে বঞ্চিত রাখা হয়েছে। এবারের ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণঅভ্যূত্থানের মাধ্যমে ২য় স্বাধীন বাংলাদেশ হওয়ার পরে অনেক আশা-আকাঙ্খা ও প্রাপ্তির আশার সঞ্চার হয়েছিল। কিন্তু বর্তমান পার্বত্য মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব প্রাপ্ত উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমার উগ্র সাম্প্রদায়িক ও স্বেচ্ছাচারিতাসহ নির্লজ্জ আত্মীয়করণের কারণে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যনসহ সকল সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে। তাই পাবর্ত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণা্লয়ের উপদেষ্টাকে স্বীয় পদ হতে আশু অপসারণ করার জন্য পিছিয়ে রাখা সম্প্রদায় তিন দফা দাবী উত্থাপন করেছে।
তিন দফা দাবি মধ্যে রয়েছে-
১। অন্তবর্তীকালীন সরকারের পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী পদমর্যাদায় সুপ্রদীপ চাকমাকে আশু অপসারণ করে অসাম্প্রদায়িক ও সকল সম্প্রদায়ের গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে তাঁর পদে নিয়োগ প্রদান করা।
২। খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে পার্বত্য চট্টগ্রামে পিছিয়ে রাখা মারমা/ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে নিয়োগ প্রদান করা।
৩। খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় বসবাসরত সর্বক্ষেত্রে পিছিয়ে রাখা জনগোষ্ঠীকে প্রাধান্য দিয়ে সকল প্রকার সুযোগ সুবিধাসহ সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে বয়সসীমা ৪০ বছর পুনঃনির্ধারণ করা।
স্মারকলিপি প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেন কংজপ্রু মারমা ও প্রশান্ত ত্রিপুরা। তারা বলেন, দোসর আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সুপ্রদীপ চাকমা পাবর্ত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান হয়ে সুবিধা ভোগ করেছেন। তাকে যাচাই বাছাই না করে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা করা হয়েছে। উপদেষ্টা থাকা অবস্থায় সুপ্রদীপ চাকমা পার্বত্য তিন জেলায় এসে আওয়ামীলীগ দোসরদের সাথে গোপন বৈঠক করেছেন। আমার আর এটা হতে দেবনা। আমরা তার অপসারণ দাবি করছি।
স্মারকলিপির অনুলিপি ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, চট্টগ্রাম সেনানিবাস, খাড়াছড়ি রিজিয়ন, খাগড়াছড়ির ডিজিএফআই’র কমান্ডার, সেক্টর কমান্ডার, কমান্ডার এএসইউ বরাবর প্রেরণ করা হয়।
উল্লেখ্য যে, দাবিসমূহ বাস্তবায়িত করা না হলে, কঠোর আন্দোলন ডাক দিতে বাধ্য হবে বলে জানিয়েছে বৃহত্তর খাগড়াছড়ি জেলার পিছিয়ে রাখা সম্প্রদায়ের জনাগোষ্ঠী।
স্মারক লিপি দেয়া শেষ হলে শহরে শাপলা চত্বরের মুক্তমঞ্চের সামনা দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করেছেন। মানববন্ধন বক্তব্য রাখেন, সচেতন নাগরিক কংজপ্রু মারমা, সুশীল সমাজের বিশিষ্ট সমাজ সেবক রুমেল মারমা, ইঞ্জিনিয়ার ক্যউরি মগ, সুশীল সমাজের সচেতন নেতা প্রশান্ত ত্রিপুরা, চিংহ্লা চৌধুরী, উক্যনু চৌধরী।