উপাচার্যের আশ্বাসে অনশন ভেঙেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উর্দু বিভাগের শিক্ষার্থীরা। সোমবার (৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার অনশনরত পাঁচ শিক্ষার্থীর সঙ্গে আলোচনায় বসেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে আলোচনা শেষে উপাচার্য সব শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেন। পরে শিক্ষার্থীরা তার আশ্বাসে অনশন ভাঙেন।
এ সময় উপাচার্য বলেন, মঙ্গলবার এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি হবে। আগামী সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে হবে কমিটিকে। প্রতিবেদনে শিক্ষার্থীদের প্রতি অন্যায় কিছু হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে অনশনে তিন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের অ্যাম্বুলেন্সে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে পাঠানো হয়েছে। তারা হলেন- ফারজানা লুনা, নুসরাত প্রিয়া ও মনিজা আক্তার।
অনশন চলাকালে দফায় দফায় উর্দু বিভাগ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঘটনাস্থলে এলেও শিক্ষার্থীরা ওঠেননি। বিকেলে ও সন্ধ্যায় কথা-কাটাকাটিও হয়। একপর্যায়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন। প্রশাসন ভবনের সামনে অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষকদের বাগবিতণ্ডাও হয়।
সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীদের কাছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম, ছাত্র-উপদেষ্টা তারেক নূর, জনসংযোগ দপ্তরের কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার পাণ্ডে, প্রক্টরিয়াল বডিসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা আসেন।
সহ-উপাচার্য শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার একটি তদন্ত কমিটি হবে। কমিটি দেখবে অন্যায় হয়েছে কি-না।’
এ সময় শিক্ষার্থীরা জানান, তারা অনশনরত অবস্থাতেই বিষয়টির সমাধান চান। এ সময় কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন।
শিক্ষার্থী বায়জিদ হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য এসেছিলেন। আমরা দাবি পূরণ না হলে উঠবো না বলে জানাই। এ সময় আমাদের গায়ে হাত তোলা হয়।’
উর্দু বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ৩৫ জন নিয়মিত ও ৩ জন অনিয়মিত শিক্ষার্থী আছেন। সবাই এপ্রিলে প্রথম বর্ষের প্রথম সেমিস্টার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। দ্বিতীয় সেমিস্টার পরীক্ষার ৩৮ জনের ফলাফল প্রকাশিত হয় ২৫ আগস্ট। এদের মধ্যে আটজন একাধিক বিষয়ে অনুত্তীর্ণ হয়েছেন। ১৪ জন একটি বিষয়ে অনুত্তীর্ণ হয়েছেন। ওই দিন প্রকাশিত ফলাফলে ক্ষুব্ধ হয়ে বিভাগের অফিসকক্ষে ও সভাপতির কক্ষে তালা ঝুলিয়ে বিভাগ বন্ধ ঘোষণা করেন শিক্ষার্থীরা। পরে আশ্বাসে তারা আন্দোলন থেকে সরে আসেন। তবে দীর্ঘ আড়াই মাসে ফলাফল সংশোধন না করায় আজ আবারও তারা অনশনে বসেন।