আমদানির পরিমান বাড়লেও ডলারের দাম বাড়ার অজুহাতে একদিনের ব্যবধানে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে পাইকাড়িতে পিঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ৩ টাকা করে। একদিন পুর্বেও বন্দরে ইন্দোর জাতের প্রতি কেজি পিঁয়াজ ২১ থেকে ২২টাকা বিক্রি হলেও বর্তমানে তা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৪ থেকে ২৫ দরে। এদিকে হিলি বাজারে খুচরাতে দেশীয় পিঁয়াজের দাম ৯টাকা ও ভারতীয় পিঁয়াজের দাম কেজিতে ৫টাকা করে বেড়েছে। পিঁয়াজের দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন নিন্ম আয়ের মানুষজনসহ বন্দরে পিঁয়াজ কিনতে আসা পাইকারগন।
হিলি বাজারে পিঁয়াজ কিনতে আসা রাকিব হোসেন বলেন, আমাদের গরীব মানুষদের চলা খুব কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। প্রতিটা পণ্যের দাম শুধু বাড়তেই আছে কমার কোন নাম নেই। কয়েকদিন ধরে পিঁয়াজের দাম ২০টাকার মধ্যে ছিল এতে করে আমাদের টাকা কম লাগতো যার কারনে সুবিধা ছিল। কিন্তু সেই পিঁয়াজের দাম আবারো বেড়ে ২৫টাকা হয়ে গেছে। এভাবে দাম বাড়লে তো আমাদের সমস্যা আমাদের তো আয় এভাবে রাতারাতি বাড়ছেনা। এখন বাধ্য হয়ে ক্রয়ের পরিমান কমাতে হচ্ছে আগে যেখানে এক কেজি কিনতাম এখন সেখানে হাফ কেজি কিনছি এছাড়া তো কিছু করার নেই আমাদের।
হিলি বাজারের পিঁয়াজ বিক্রেতা শাকিল খান বলেন, আমরা সাধারনত পাবনা থেকে দেশীয় পিঁয়াজ সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করে থাকি। কিন্তু গতদুদিন ধরেই মোকামে পিঁয়াজের সরবরাহ কমায় সেখানেই পিঁয়াজের দাম বেশী। যার কারনে আমাদের বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে এতে করে বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এছাড়া ডলারের দাম বাড়ার কারনে হিলি স্থলবন্দরে আমদানিকৃত ভারতীয় পিঁয়াজের দাম বেশী। যার কারনে আমরা বাড়তি দাম দিয়ে কিনে বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। বর্তমানে দেশীয় পিঁয়াজ ৪৫টাকা যা আগে ৩৬টাকা আর ভারতীয় পিঁয়াজ ২৪/২৫ টাকা যা আগে ১৯ থেকে ২০টাকা বিক্রি হয়েছিল।
হিলি স্থলবন্দরে পিঁয়াজ কিনতে আসা পাইকার সিদ্দিক হোসেন বলেন, হিলি স্থলবন্দর থেকে পিঁয়াজ ক্রয় করে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন মোকামগুলোতে ক্রেতাদের চাহীদা মোতাবেক পেয়াজ সরবরাহ করে থাকি। ভারত থেকে পিঁয়াজ আমদানি শুরু হওয়ার পর থেকেই পিঁয়াজের দাম কমে আসছিল এতে করে আমাদের কিনতে সুবিধা হচ্ছিল তেমনি মোকামে পাঠানো ভালো হচ্ছিল। কিন্তু আবারো দাম বাড়ছে গত সপ্তাহে যে পিঁয়াজ ১৯ থেকে ২০টাকা ছিল সেটি এইসপ্তাহের প্রথমেই বেড়ে ২১ থেকে ২২টাকা হয়ে যায়। বর্তমানে আবারো আরো এক ধাপ বেড়ে ২৪ থেকে ২৫টাকায় গিয়ে দাড়িয়েছে। এতে করে আমাদের পিঁয়াজ কিনতে বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে পুজি বেশী লাগছে। এর উপর তেলের দাম বাড়ায় পরিবহন ভাড়া বেড়ে গিয়েছে যার কারনে পিঁয়াজের দাম বেড়ে যাচ্ছে এতে করে মোকামে পিঁয়াজের দাম বাড়ায় মানুষজনকে বাড়তি দামে খেতে হচ্ছে।
হিলি স্থলবন্দরের পিঁয়াজ ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বলেন, দেশের বাজারে পিঁয়াজের সররবাহ স্বাভাবিক ও দাম নিয়ন্ত্রনে রাখতে সরকার পিঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়ায় গত ৫জুলাই থেকে বন্দর দিয়ে ভারত থেকে পিঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রয়েছে। দেশে পিঁয়াজের বাড়তি চাহীদার কারনে বন্দর দিয়ে পুর্বের চেয়ে আমদানির পরিমান বাড়ানো হয়েছে। তবে ডলারের দাম বাড়ার কারনে যে ডলার পুর্বে ৯৫টাকা ছিল সেটি এখন ১শ টাকার উপরে ১১৫টাকা হয়ে গেছে যার কারনে বাড়তি মুল্যে পিঁয়াজ আমদানি করতে হওয়ায় দেশের বাজারে পেয়াজের দাম বাড়ছে। সেই সাথে দেশীয় পিঁয়াজের দাম বেড়ে ৪০টাকায় গিয়ে দাড়িয়েছে যার কারনে দেশের বাজারে ভারতীয় পিঁয়াজের চাহীদা আগের তুলনায় বাড়ায় দাম বাড়ছে বলেও জানান তিনি। এছাড়া আজ মঙ্গলবার পবিত্র আশুড়ার কারনে হিলিসহ দেশের সবগুলো বন্দর দিয়ে পিঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে যার কারনে মোকামগুলোতে বাড়তি চাহীদা থাকায় এর প্রভাব পড়েছে বাজারে দামের উপরে।
হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, বন্দর দিয়ে পিঁয়াজের আমদানি অব্যাহত রয়েছে। তবে পুর্বের তুলনায় পিঁয়াজের আমদানি কিছুটা বেড়েছে পুর্বে বন্দর দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ২০ থেকে ২৫ট্রাক পিঁয়াজ আমদানি হলেও বর্তমানে তা বেড়ে ৩০ থেকে ৩৫ট্রাক করে পিঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। বন্দর দিয়ে ৬ আগষ্ট শনিবার ৩০ টি ট্রাকে ৮৯৩ টন পিঁয়াজ আমদানি হয়েছে। রবিবার ২৫টি ট্রাকে ৭৩৬টন পিঁয়াজ আমদানি হয়েছে। গতকাল সোমবার বন্দর দিয়ে ৩৩টি ট্রাকে ৯৭৬টন পিঁয়াজ আমদানি হয়েছে। পিঁয়াজ কাচামাল হওয়ায় অতি দ্রæত কাস্টমসের সকল প্রক্রিয়া সম্পুর্ন করে যেন আমদানিকারকরা খালাস করে নিতে পারেন এজন্য বন্দর কতৃপক্ষ সকল ধরনের ব্যবস্থা গ্রহন করে রেখেছে।