এত বৃষ্টির পরেও কেন কমছে না গরম
অনলাইন ডেস্ক।।
ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে সারা দেশে ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়েছে। আবহাওয়া অফিস গতকাল সোমবার (২৮ মে) জানায়, ঘূর্ণিঝড় রিমাল ও রিমালপরবর্তী সময়ে দেশে তিন হাজার ৩৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, যা চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ। এত বৃষ্টির পরও আজ মঙ্গলবার দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এখনো অস্বস্তিকর গরম অনুভব হয়েছে। শুধু তাই নয়, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হিটওয়েভও ঘোষণা করেছে সংস্থাটি।
এ বিষয়ে আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ মঙ্গলবার (২৯ মে) বিকেলে বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে বিভিন্ন অঞ্চলে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে, আবার কিছু অঞ্চলে কম। বিশেষ করে রংপুর ডিভিশনে বৃষ্টি কম হয়েছে। রংপরে ইতোমধ্যে হিটওয়েভ চলে এসেছে এবং সেসব স্থানে হিটওয়েভ ঘোষণা করা হয়েছে।
তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে এই আবহাওয়াবিদ বলেন, এর আগে সারা দেশে তীব্র তাপপ্রবাহ চলেছে। সেসময়ে মাটিতে চুষে নেওয়া তাপমাত্রা এখন বৃষ্টির কারণে বের হয়ে আসছে প্রকৃতিতে। যার প্রভাবে তাপপ্রবাহ না থাকলেও গরম অনুভূত হচ্ছে। এছাড়া বাতাসে আর্দ্রতাও বেশি। বাতাসে অতিরিক্ত আর্দ্রতা থাকলে মানুষ বেশি ঘামে এবং অস্বস্তি বোধ করে।
হিটওয়েভ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বে কি না- জানতে চাইলে এই আবহাওয়াবিদ বলেন, সারা দেশে ছড়াবে না কিন্তু অনেক অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়তে পারে, তবে আগের মতো এত তীব্র হবে না। তাপমাত্রা ৩৫ থেকে ৩৭ ডিগ্রির মধ্যে থাকবে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আজ দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রংপুরে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল বান্দরবান ও টাঙ্গাইলে ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এ ছাড়া ঢাকার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং গত ৪৮ ঘণ্টায় রাজধানীতে ২৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সোমবার রাতে ঢাকায় প্রচুর বৃষ্টি হলেও মঙ্গলবার দিনে গরম অনুভূত হয়।
রাজধানীতে হিটওয়েভ ফিরবে কি না- জানতে চাইলে বজলুর রশিদ বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ঢাকাতেও প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে আজ দিনের বেলা বেশ গরম অনুভূত হয়েছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বয়ে যাওয়া হিটওয়েভ ঢাকাতেও ফিরে আসতে পারে। তবে আগের মতো এত তীব্র হবে না।
তাপমাত্রা আরও কতদিন থাকতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাপমাত্রা চলতি মাস এবং জুনের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত থাকতে পারে। তারপর বৃষ্টির সিজন চলে আসবে; তখন তাপমাত্রা কমে যাবে।
এদিকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পূর্বাভাসে আবহাওয়া অফিস জানায়, সিলেট ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত স্থল নিম্নচাপটি পূর্ব দিকে অগ্রসর ও ক্রমশ দুর্বল হয়ে বর্তমানে সিলেট এবং তৎসংলগ্ন আসাম এলাকায় লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এটি আরও উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বৃষ্টি ঝরিয়ে ক্রমশ দুর্বল হতে পারে। এছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগরে বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিলে গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এপ্রিল ছিল ৪৩ বছরের মধ্যে সবচেয়ে শুষ্কতম এবং এ মাসে গড় বৃষ্টিপাত হয়েছে মাত্র ১ মিলিমিটার।
সূত্রঃ বিডি24লাইভ
একে/অননিউজ24