কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার ১৩নং আদ্রা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুল করিম। গত বছর ২০ অক্টোবর আদ্রা ইউনিয়ন পরিষদের উপ নির্বাচনে জয়ের মাধ্যমে চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি।
নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর একের পর এক বিতর্কের সৃষ্টি করেন চেয়ারম্যান আবদুল করিম। একগুঁয়ে আচরণের কারণে ওই ইউনিয়নের বেশিরভাগ মানুষ তাকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। ১ বছর সময় ধরে চেয়ারম্যান এর দায়িত্ব পালন করা আবদুল করিম সম্পর্কে ওই ইউনিয়নের মানুষের মনে নানান ক্ষোভের কথা শোনা গেছে।
ইউনিয়নের মানুষ বলছে উপ নির্বাচনে বিপুল অংকের অর্থ খরচ করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন আবদুল করিম। সেই টাকার পাই টু পাই হিসেব তুলতে বেপরোয়া করিম চেয়ারম্যান হেন কোনো কাজ নেই যেটা তিনি করেন নি। টিআর, কাবিখা, ৪০ দিনের কর্মসূচী, ৬০দিনের কর্মসূচীসহ বেশকিছু বরাদ্দের অর্থ আত্মসাৎ, জন্ম নিবন্ধন সনদ বাবদ মোটা অংকের অর্থ, ইউনিয়নের হরিশপুরা গ্রামে ৬টি খাস পুকুরে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে তা মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে বিক্রি করা, একবাড়িয়া- কাকৈরতলা খাল খনন করে সেই খালের মাটি বিক্রি করে দেওয়া এমনকি তার পরিষদের জনৈক মহিলা মেম্বারের বেতনের টাকা আত্মসাৎ করাসহ শতটা অনিয়মের খবর ওই ইউনিয়নের মানুষের মুখে মুখে। ফেসবুকে তার বিরুদ্ধে সমালোচনা করায় কাউসার নামক এক ব্যক্তিকে ফোনে শাসানোর একটি অডিও রেকর্ড ভাইরাল হয়েছে। সেখানে তিনি কাউসার নামক ওই ব্যক্তিকে নেতাকর্মী দিয়ে হাত ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
এসব দুর্নীতি আর অনিয়মের কারণে ওই ইউনিয়নের মানুষ তার নাম দিয়েছেন কোপা চেয়ারম্যান।
ইউনিয়নের পেরপেটি, নাগিরপাড়, নলুয়া, সোনাইমুড়ী, মনোহরপুর, মন্দুকসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষের মুখে মুখে কোপা চেয়ারম্যান এর নাম। তার অগোচরে কোপা চেয়ারম্যান বললেও সামনে তার সমালোচনা করার তিলেক সাহস নেই কারো। ওই ইউনিয়নের সাধারণ ভোটারদের পাশাপাশি ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বারেরাও তার আতংকে থাকেন। নাম না প্রকাশের শর্তে এক মেম্বার জানান, অনিয়মের প্রতিবাদ করার সাহস আমাদের নেই, পান থেকে চুন খসলেই তিনি যারপরনাই খারাপ আচরণ করেন। পরিষদের সকল মেম্বারদের উপর একক হুকুমত কায়েম করেছেন তিনি। তার বিরুদ্ধাচারণ করলেই তোপের মুখে পড়তে হয়।
করিম চেয়ারম্যান এর যাবতীয় সেসব অনিয়ম এবং দুর্নীতির পাশাপাশি অশুভ আচরণের কারণে তার প্রতি ক্ষুব্ধ ওই ইউনিয়নের মানুষ। তারা আর একটিবারের জন্যও ওই চেয়ারম্যানকে চায় না বলে জানান। তার কৃত সকল কর্মের কারণে নাম পড়েছে কোপা চেয়ারম্যান।
যাবতীয় এসকল বিষয়ে জানতে করিম চেয়ারম্যানকে ফোন করলে তিনি মুঠোফোনে জানান, আমি এখন ব্যস্ত আছি মিছিল নিয়ে, ২-৩ হাজার লোকের মিছিল। তাদের খাওয়া দাওয়া করিয়ে বিদায় করতে একটু দেরি হবে, আপনি পরে ফোন করেন।
সাইফুল ইসলাম সুমন,অননিউজ24।।