দেশে প্রতিদিনই করোনা শনাক্তের হার বাড়ছে। বাড়ছে ওমিক্রন শনাক্তও। এ অবস্থায় করোনা প্রতিরোধে মাস্ক ছাড়া রাস্তায় বের হলে জরিমানার বিধানসহ ১১ দফা বিধি-নিষেধ জারি করেছে সরকার।
গত সোমবার জারি করা এই স্বাস্থ্যবিধি আজ ১৩ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকর হবে। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকছে। একই সঙ্গে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী শিক্ষার্থীরা ১৫ জানুয়ারির পর অন্তত এক ডোজ টিকা নেওয়া ছাড়া সরাসরি ক্লাসে যেতে পারবে না।
তবে বাংলাদেশের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) থেকে বলা হচ্ছে, এই সংখ্যা আরো বেশি। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এ এস এম আলমগীর এ প্রতিবেদককে বলেন- দেশে এখনো করোনার ডেল্টা ধরনেই বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। একই সঙ্গে ওমিক্রন ধরনে সংক্রমণও বাড়ছে।
১১ দফা বিধি-নিষেধ এর মধ্যে রয়েছে :
১. শপিং মল ও বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতা এবং হোটেল-রেস্তোরাঁসহ জনসমাগমস্থলে বাধ্যতামূলক মাস্ক পরতে হবে।
২. অফিস-আদালতসহ ঘরের বাইরে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি বাস্তবায়নে সারা দেশে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।
৩. রেস্তোরাঁয় বসে খেতে ও আবাসিক হোটেলে থাকতে অবশ্যই করোনার টিকা সনদ প্রদর্শন করতে হবে।
৪. ১২ বছরের বেশি বয়সী সব শিক্ষার্থীকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় নির্ধারিত তারিখের পর টিকার সনদ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না।
৫. স্থলবন্দর, সমুদ্রবন্দর ও বিমানবন্দরে স্ক্রিনিংয়ের সংখ্যা বাড়াতে হবে। পোর্টগুলোতে ক্রুদের জাহাজের বাইরে আসার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে। স্থলবন্দরগুলোতেও দেশের বাইরে থেকে আগত ট্রাকের সঙ্গে শুধু চালক থাকতে পারবেন। বিদেশগামীদের সঙ্গে আসা দর্শনার্থীদের বিমানবন্দরে প্রবেশ বন্ধ করতে হবে।
৬. ট্রেন, বাস ও লঞ্চে সক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী নেওয়া যাবে। সব ধরনের যানের চালক ও সহকারীদের কভিড-১৯ টিকার সনদধারী হতে হবে।
৭. বিদেশ থেকে আসা যাত্রীসহ সবাইকে বাধ্যতামূলক কভিড-১৯ টিকার সনদ প্রদর্শন করতে হবে।
৮. সর্বসাধারণের করোনার টিকা ও বুস্টার ডোজ গ্রহণ ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় প্রচার ও উদ্যোগ নেবে।
৯. পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও সমাবেশ বন্ধ রাখতে হবে।
১০. স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন ও মাস্ক পরার বিষয়ে সব মসজিদে জুমার নামাজের খুতবায় ইমামরা সচেতন করবেন।
১১. কোনো এলাকার ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে সে ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নিতে পারবে। তবে খোলা থাকবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন- জানুয়ারি মাসের মধ্যেই ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী মোট এক কোটি ১৬ লাখ ২৩ হাজার ৩২২ শিক্ষার্থীকে প্রথম ডোজ টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।