সারাদেশে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ৪ হাজার ৫৭১টি ইউপি নির্বাচন করতে যাচ্ছে স্থানীয় মাঠ প্রশাসন। ব্যাপক সহিংসতা আর অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের মধ্যদিয়ে দু’ধাপে নির্বাচন সমাপ্ত করেছে সিইসি। তৃতীয় ধাপে ৮৩৫টি ইউপি নির্বাচনের মধ্যে মাত্র ৩৩৮ জন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন নৌকার একক প্রার্থী হয়ে।
চরমোনায়েমের হাত পাখা ৬টি চেয়ারম্যান। আর ৫০৪ জন আওয়ামীলীগের প্রার্থী হয়ে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। চতুর্থ ধাপে ৮৪০টি ইউপি নির্বাচন হবে ২৩ ডিসেম্বর, ২৫ নভেম্বর মনোয়ন জমা, বাছাই ২৯ নভেম্বর, আপীল করা যাবে ৩০ নভেম্বর, প্রার্থীতা প্রত্যাহার করা যাবে ৬ ডিসেম্বর।
আর সেই আলোকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনের (কসবা-আখাউড়ায়) মোট ১৫টি ইউনিয়নের মধ্যে এবার ৮টি ইউনিয়নের নির্বাচনের তফসিল আসবে ৩০ ডিসেম্বর। আর আখাউড়ার ৫টি ইউনিয়ন তফসিলও ইতিমধ্যেই ঘোষণা করা হয়েছে। এখানে মনিনন্দন, গোপীনাথপুর, মোগরা, আখাউড়া সদর উত্তর, সদর দক্ষিণ ইউপি নির্বাচনে প্রায় ডজনখানিক প্রার্থী এখন এলাকার মাননীয় সাংসদ, সরকারের আইনমন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হকের কাছে ধর্না দিচ্ছেন নৌকার টিকিটের জন্য।
কিন্তু মন্ত্রীর সাফ কথা একটাই-তৃণমূলে যার যার গ্রহণযোগ্যতা আছে তাকেই জননেত্রী শেখ হাসিনা নৌকার টিকেট দেবেন। তবে এবার সবার জন্য উম্মুক্ত। আগামীতে যাতে বিদ্রোহী প্রার্থীর আগমন না ঘটে, সে সুবাদে কারো জন্য এককভাবে কাউকো সার্টিফাই করা যাবে না। তবে একজন ইনশালাহ নৌকার প্রার্থী হবেন। যাতে কোন প্রকার সহিংসতা না ঘটে সেদিকে প্রতিটি আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীদের প্রতি অনুরোধ থাকবে।
তাছাড়াও ২০১৬ তে যারা নৌকার প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন, তাদের বিষয়টিও পজেটিভ। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষা করার জন্য তাদেরকে অগ্রাধিকার দেয়া হতে পারে। তাছাড়াও তৃণমূল থেকে যে সকল নেতাকর্মীরা দীর্ঘদিন এলাকায় থেকে রাজনীতি করে আসছেন, তাদের বেলায়ও হিসাব নিকাশ করা হবে চেয়ারম্যান প্রার্থীতার জন্য। এদিকে কসবার কুটি ও খাড়েরা ইউপি নির্বাচন চলতি বছরে আর হচ্ছে না।
তবে বিনাউটি, বায়েক, গোপীনাথপুর, কাইয়ুমপুর, বাদৈর, নেহারী, কসবা পশ্চিম ও মূলোগ্রাম এর সম্ভাব্য প্রার্থীরা এখন মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। আলোচিত মূলোগ্রাম ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান মাঈনুল ইসলাম এবারও নির্বাচনে মাঠে থাকছেন। তার পাশাপাশি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি শাহ আলম ভূইয়া, সিনিয়র সহ-সভাপতি এস এম বশির উদ্দিন চৌধুরী, আওয়ামীলীগ নেতা মানিক ভূইয়া, আবদুল আউয়াল মাসুম, নাজমূল হক মিঠু ও হাজী কামাল খান তারাও নমিনেটেড হতে চাইছেন।
এছাড়াও সাবেক চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন রুমি। তবে জনগণ এবার পরিবর্তন চাইছেন। আর সেই পরিবর্তনের জন্য বর্তমান চেয়ারম্যানকে অনেকেই পছন্দের তালিকায় রেখেছেন। তার পাশাপাশি পছন্দের তালিকায় আছেন ব্রাহ্মণবাড়ীয়া পৌর কলেজের অধ্যাপক আব্দুল আউয়াল মাসুম আর সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হামিদের পুত্র নাজমূল হক মিঠু। তবে সাবেক এবং বর্তমান চেয়ারম্যান রুমি ও মাঈনুলকে নিয়ে জনগণের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে আছেন। এক সময় বিএনপি’র রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন জালাল উদ্দিন রুমি।
হালে আওয়ামীলীগের নৌকার উপর ভর করেছেন। একজন অনুপ্রবেশকারী হিসেবে সবাই তাকে চিনেন এসব কথা কারো কাছথেতে জানতে চাইলে নানা অজুহাত দেখিয়ে এরিয়ে যাওয়ার চেস্টা করেন । বর্তমান চেয়ারম্যান তাকে নিয়েও মানুষের কৌতুহলের শেষ নেই। আর অপর একজন প্রার্থী হাজী কামাল খান। এক সময় তিনি প্রবাসে ছিলেন। এলাকার মানুষজন বলছেন, শুধু দান খয়রাত করলেই ভোট পাওয়া যায় না। এ জন্য চাই রাজনৈতিক কমিটম্যান্ট। যা তার মধ্যে নেই। তবে সিনিয়র সহ-সভাপতি বশির উদ্দিন চৌধুরী রাজনীতির ক্ষেত্রে সবাইকে ডিঙ্গিয়ে চলছেন। ফলে মাননীয় এমপি’র খুব পছন্দের লোক
নাজমূল হক মিঠু মূলোগ্রাম ইউপি’র ৮নং ওয়ার্ডের ভোটার। বেড়ে উঠেছেন এ জনপদে। মাটি আর মানুষের সাথে সম্পৃক্ত। পড়াশোনা করেছেন স্থানীয় ভাবে। তার বাবা এ এলাকার সাবেক চেয়ারম্যান। দীর্ঘদিন এলাকার জননন্দিত জনপ্রতিনিধি ছিলেন। তার ভাই ওবায়দুল হক টিটু -একবার প্রার্থীতা চেয়েছিলেন। এবার তিনি চাইছেন। পারিবারিক ধারাবাহিকতা রক্ষা করার জন্য জনগণ তাকে পছন্দের তালিকায় রেখেছেন। তিনি বলেন, আমার অতীতের পলিটিক্যাল ক্যারিয়ার আর এলাকার মানুষের গ্রহণযোগ্যতার বিষয়টি বিবেচনা করলে আমার নেত্রী- জননেত্রী শেখ হাসিনা ইনশাল্লাহ্ আমাকে দলীয়ভাবে নমিনেটেড করবেন বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
আর সে বিশ্বাসের উপর ভর করে আগামী নির্বাচনের জন্য পরিবেশ সুন্দর করে রাখার চেষ্টা করছি। দলীয়ভাবে নমিনেটেড হতে পারলে যে কোন প্রার্থীকে ডিঙ্গিয়ে বিপুল ভোটে পুনরায় জয়ী হতে পারবো ইনশাল্লাহ্। তিনি বলেন, আমার প্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সরকারের আইনমন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হক এবারও আমাকে দলীয়ভাবে নমিনিয়েশন দিতে সাহায্য করবেন বলে আমার বিশ্বাস। আর নির্বাচিত হলে এ ইউনিয়নকে অত্যাধুনিক ও ডিজিটাইলাইজড ইউনিয়ন হিসেবে জনগণকে উপহার দেয়ার চেষ্টা করবো।
এদিকে বর্তমান চেয়ারম্যান মাঈনুল ইসলাম বলেন, আমি যদি পুনরায় নির্বাচিত হতে পারি তাহলে উন্নয়নের অসমাপ্ত কাজগুলো সমাধা করার চেষ্টা অব্যাহত রাখবো।আমাদের কসবার বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন যেহেতু সীমান্তবর্তী- সে কারণে অনেক খবর মিডিয়াতে ভাইরাল হয়। সব কথাগুলো সঠিক নয়। সীমান্তে চোরাচালান কিংবা গরু চুরিরমত ঘটনা আগে ছিলো এখন আর নেই।
স্থানীয় প্রশাসন ও বিজিবি’র সহায়তায় চোরাচালান প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে। মাদকের প্রভাব থেকে যুব সমাজকে নতুন আলোর পথ দেখাতে চেষ্টা করে যাবো। পাশাপাশি যুব সমাজকে কর্মসংস্থানের বিষয়টিও মাথায় রাখা হবে-ইনশাল্লাহ্। যা ইতিমধ্যেই মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় কসবার প্রায় সাড়ে ৪শত মানুষকে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন।
আয়েশা আক্তার/অননিউজ24