এসপি নরসিংদীর তৎপরতায় ও ঢাকা ইমিগ্রেশন পুলিশের সহায়তায় নরসিংদী মেহেরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হাসান (৪০) হত্যা মামলার ২ নম্বর আসামি রাসেল মাহমুদ (৪৫) কে বিদেশে পালানোর সময় গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এর আগে বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে কাতার এয়ারলাইন্স যোগে কাতার হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয় রাসেল। খবর পেয়ে পুলিশ সুপার নরসিংদীর নির্দেশে মাধবদী থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশের যৌথ টিম শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের ঢাকার ইমিগ্রেশন পুলিশের মাধ্যমে কাতার ইমিগ্রেশন পুলিশের সাথে যোগাযোগ করলে কাতার বিমান বন্দরে পৌঁছানোর পর কাতার ইমিগ্রেশন পুলিশ ১২ ঘণ্টা আটক রাখার পর রাসেল মাহমুদকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠায়। দেশে ফেরার পর শুক্রবার সকালে ঢাকা ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে নরসিংদী জেলা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করলে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃত রাসেল মাহমুদ মাধবদী থানার পৌলানপুর এলাকার হাবিবুর রহমানের ছেলে। এছাড়া সদর উপজেলা যুবলীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ৭২ ঘণ্টায় এজাহারনামীয় ৬ আসামিসহ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার (১ জুন) সকালে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন নরসিংদীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম।
পুলিশ সুপার বলেন, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে পরিকল্পিতভাবে সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হাসানকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার পর এ পর্যন্ত ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরমধ্যে এজাহারনামীয় ৬ জনসহ মোট ০৮ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয় । হত্যার কাজে ব্যবহৃত ধারালো চাপাতি উদ্ধার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
তিনি জানান, এ হত্যার অন্যতম পরিকল্পনাকারী দুই নম্বর আসামি মাস্টার মাইন্ড রাসেল মাহমুদ বিদেশে পালিয়ে যাবার সময় কাতার বিমান বন্দরে পৌঁছার পর ঢাকা ইমিগ্রেশন পুলিশের সহায়তায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার নিকট হতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে। ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে তাকে আদালতে পাঠানো হবে। রিমান্ডের পর রাসেল মাহমুদকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে হত্যায় জড়িত অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে।
এর আগে, গত মঙ্গলবার (২৮ মে) দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে একদল দুর্বৃত্ত মাধবদী থানার মেহেরপাড়া ইউনিয়নের ভগিরথপুর এলাকায় মাহবুবুল হাসানকে (৪০) নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করে। এসময় তার সঙ্গে থাকা আরও ২ জন গুরুতর আহত হন।
নিহত মাহবুবুল হাসান ভগীরথপুর গ্রামের হাজী ইমাম উদ্দিনের ছেলে মেহেরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন।
হত্যার ঘটনায় নিহত মাহবুবুল হাসানের ছোট ভাই হাফিজ উল্লাহ বাদী হয়ে গত বৃহস্পতিবার (৩০ মে) মাধবদী থানায় ২২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
রাসেল মাহমুদ ছাড়াও হত্যার পর এ পর্যন্ত গ্রেপ্তারকৃত অন্য আসামিরা হলেন- মাধবদী থানার পৌলানপুর এলাকার হাবিবুর রহমানের ছেলে মো: হিমেল মিয়া (৪৩), জুয়েল মিয়া (৩৯), মো: নবেল (২৮), একই এলাকার কদম আলীর ছেলে মো: হাবিবুর রহমান (৬৫), টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর থানার খানপাড়া এলাকার মোহাম্মদ আলীর ছেলে মো: রাব্বি (১৯), কুড়িগ্রাম জেলার ভুরঙ্গামারী থানার উত্তর ভরতের ছডা এলাকার আব্দুর রহিমের ছেলে ও মাধবদীর ভগিরথপুর টেক্সটাইল মিলস এলাকার বর্তমান বাসিন্দা মো: মিঠু (৩৫) ও মাধবদী থানার কবিরাজপুর এলাকার মো: জমির উদ্দিনের ছেলে মো: লিপু মিয়া (৪৫)।
সংবাদ সম্মেলনে, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ), এস. এ. এম ফজল ই খুদা,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি), শামসুল আরেফীন, সদর সার্কেল এম, শহিদুল ইসলাম সোহাগ, সহকারী পুলিশ সুপার, শিবপুর সার্কেল, মেজবাহউদ্দিন, ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি খোকন চন্দ্র সরকারসহ জেলা পুলিশের বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তা- কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।
সূত্রঃ বিডি24লাইভ
একে/অননিউজ24