নড়াইল প্রতিনিধি।।
খুলনা বিভাগীয় ‘তারুন্যের জয়যাত্রা’ সমাবেশ থেকে ফেরার পথে নড়াইলের কালিয়া উপজেলার পিরোলী গ্রামে প্রতিপক্ষের হামলায় আজাদ শেখ (৩২) নামে এক যুবলীগ কর্মী নিহত হয়েছেন।
বৃহস্প্রতিবার সন্ধ্যায় পিরোলী মহসিন মোড়ে এ হামলার ঘটনা ঘটে। গুরুতর জখম আজাদকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত আজাদ পিরোলী উত্তরপাড়ার সালাম শেখের ছেলে এবং পিরোলী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি সাজ্জাদ শেখের বড় ভাই।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পিরোলী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা আনিসুল ইসলাম বাবু ও শহীদুল ভূঁইয়ার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিরোধ চলে আসছিলো। ওই গ্রামের মোল্যা ও ভূঁইয়া বংশের নেতৃত্ব দেন শহীদুল ভূঁইয়া এবং অপর বংশের নেতৃত্বে দেন বাবু চেয়ারম্যান। গত ১৫দিন যাবৎ শহীদুলের গ্রপের মোল্যা বংশের লোকজন হামলার ভয়ে তেমন হাট-বাজারে যাতায়াত করতো না।
স্থানীয় লোকজন জানান, আজাদ শেখ সহ কয়েকজন বৃহস্প্রতিবার যুবলীগের খুলনা বিভাগীয় ‘তারুন্যের জয়যাত্রা’ সমাবেশ থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে পিরোলী মহসিন মোড়ে পৌছালে প্রতিপক্ষ শহীদুল ভুইয়া গ্রæপের কয়েকজনকে দেখতে পেরে ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েন। এসময় শহীদুল ভূইয়া গ্রæপের মুসাব্বির মোল্যা ও মফিজ মোল্যাকে মারধর করে আহত করে। ঘটনার সময় ভুইয়া ও মোল্যা বাড়ীর লোকজন এগিয়ে এসে আজাদ শেখের ওপর আক্রমণ করে। বেপরোয়া মারপিটে গুরুতর আহত আজাদ শেখকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে রাত ৯টার দিকে জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে আজাদ শেখকে খুলনা মেডিকেল হাসপাতালে নেয়ার পর সেখানে ছুটে যান নড়াইল-১ আসনের সংসদ সদস্য বিএম কবিরুল হক মুক্তি। সামাজিক যোগাযোগ ফেসবুকে তিনি এ ঘটনা নিন্দা ও জড়িতদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি করেছেন। তিনি লিখেছেন‘‘ বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ খুলনা বিভাগীয় তারুণ্যের জয়যাত্রা প্রোগ্রাম শেষে বাড়ি ফিরে যাওয়ার সময় পরিকল্পিত ভাবে বিএনপি জামাতের সন্ত্রাসীরা পিরোলী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতির বড় ভাই যুবলীগ কর্মী আজাদ শেখ কে নৃশংসভাবে হত্যা করে। আমি এই হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং এই নৃশংস হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত সকলকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করব ইনশাল্লাহ।’ এছাড়া এঘটনায় জেলা ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ে আওয়ামীলীগনে নেতৃবৃন্দ নৃশংসা এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতাদের দাবি জানিয়েছেন।
অপরদিকে আজাদ শেখের মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে তাদের পক্ষের লোকজনের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। উত্তেজিত লোকজন পতিপক্ষের ১০/১৫টি বাড়ি ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। খবর পেয়ে নড়াইল থেকে দমকল বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনে।
কালিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ তাসমীম আলম জানান, এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি আপাতত শান্ত আছে। মৃতদেহের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হবে।
এফআর/অননিউজ