কালিয়ায় প্রতিপক্ষের হামলার ৯ দিন পর পল্লী চিকিৎসকের মৃত্যুর অভিযোগ
নড়াইল প্রতিনিধি।।
নড়াইলের কালিয়া উপজেলার চাঁচুড়ী বাজার এলাকায় প্রতিপক্ষের হামলার নয়দিন পর পল্লী চিকিৎসক রজিবুল ইসলাম মিঠু (৪৭) মারা গেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্ত শেষে মৃতদেহের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার (২ জুলাই) দুপুরে ভুক্তভোগীর পরিবার সাংবাদিকদের বলেন, প্রতিপক্ষ রবিউল ইসলাম
বিপুলসহ তার লোকজন পল্লী চিকিৎসক মিঠুকে তার চেম্বারে গত ২২ জুন লোহার রড দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক মারধর করেন। মারধরের পর হাসপাতালে নিতে বাধা দেয়। এমনকি বাড়িতে না নিয়ে অন্য জায়গায় চলে যেতে চাপ দেয় প্রতিপক্ষের লোকজন। নড়াইলের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসার পর বাড়িতে অবস্থানকালে গত ৩০ জুন দুপুরে মারা যান মিঠু। গত সোমবার (১ জুলাই) নড়াইল জেলা হাসপাতালে লাশের ময়নাতদন্ত শেষে মিঠুকে দাফন করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে চাঁচুড়ী এলাকায় দুইপক্ষের দ্ব›দ্ব-সংঘাত চলে আসছে। একটি পক্ষে নেতৃত্ব দেন-রবিউল ইসলাম বিপুল এবং অপর পক্ষে নেতৃত্ব দেন শিবলী রোমান প্রিন্স। পল্লী চিকিৎসক মিঠু প্রিন্সের পক্ষের লোক ছিলেন। মিঠুর স্ত্রী ডালিয়া বেগম বলেন, গত ফেব্রæয়ারি মাসে বিপুল পক্ষের এক ব্যক্তি হত্যাকান্ডের
শিকার হন। আমার স্বামী রজিবুল ইসলাম মিঠু হত্যাকান্ডের সাথে সম্পৃক্ত না থাকলেও উদ্দেশ্যমূলক তাকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় চার মাস কারাগারে থাকার পর ঈদুল আযহার পর গত ১৯ জুন জামিন পেয়ে বাড়িতে আসে আমার স্বামী। তিনদিন পর (২২ জুন) চাঁচুড়ী বাজারে নিজের চেম্বারে গেলে প্রতিপক্ষের বিপুল ও তার লোকজন মিঠুকে লোহার রড দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারধর করে গুরুতর আহত করা হয়। আহত হওয়ার পর মিঠুকে হাসপাতালে নিতেও বাধা দেওয়া হয়। পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে রেখে দুদিন ধরে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়। অবস্থার অবনতি হলে গত ২৫ জুন নড়াইল শহরের বেসরকারি ক্লিনিকে মিঠুকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। সেখান থেকে বাড়িতে আনার পর অসুস্থ্য অবস্থায় গত ৩০ জুন দুপুরে মারা যান তিনি।
মিঠুর মেয়ে রওযা ইসলাম বলেন, ‘আমার বাবাকে প্রতিপক্ষের বিপুলসহ তার লোকজন পিটিয়ে আহত করার নয়দিন পর মারা গেছেন। আমরা বাবা হত্যাকারীদের উপযুক্ত বিচার চাই। এখন প্রতিপক্ষের লোকজন আমাদের বিভিন্ন ধরণের হুমকি দিচ্ছে। আমরা মামলা করতে পারছি না। রজিবুল ইসলাম মিঠুর চাচা নাসির উদ্দিন ফকির ও ছোট ভাই রবিউল ইসলাম জানান, নিহত মিঠুসহ তাদের পরিবারটি বাজারে ব্যবসা-বাণিজ্য করে জীবিকা নির্বাহ করে। কিন্তু গ্রাম্য দলাদলির কারনে তাদেরকে জড়িয়ে হয়রানী করা হয়েছে। এখন মিঠুকে হত্যা করা হয়েছে। তাদেরকে হুমকী দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। প্রতিবেশিরা জানান, পল্লী চিকিৎসক মিঠুকে নির্মম ভাবে মারধর করার পর অসুস্থ অবস্থায় মারা গেছেন তিনি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত রবিউল ইসলাম বিপুলের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সাড়া দেননি তিনি।
এদিকে কালিয়া থানার ওসি খন্দকার শামীম উদ্দিনের কাছে এ বিষয়ে জানতে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিরক্তি প্রকাশ করেন। ভুক্তভোগীদের মামলার বিষয়ে বলেন, ওনারা (ভুক্তভোগী পরিবার) কি বলল, তাতে তো কিছু যায় আসে না। আমাদের প্রসেস যেটা, সেটা করব। ওনারা তো অনেক কিছু বলতে পারেন। আমরা অপমৃত্যু মামলা নিয়েছি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।