হিলি প্রতিনিধি।।দেশের বাজারে চালের মুল্য স্থিতিশিল রাখতে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বেশকিছুদিন বন্ধের পর চাল আমদানি শুরু হলেও কাস্টমসের সার্ভার সমস্যা ও শুল্কায়ন জটিলতার কারনে চাল খালাস কয়েকদিন বন্ধের পর বন্দর থেকে আমদানিকৃত চাল খালাস শুরু হয়েছে। এদিকে কয়েকিদন বন্ধের পর চাল খালাস শুরু হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে ভারতীয় ট্রাক চালক ও আমদানিকারকদের মাঝে।
শনিবার বিকেল ৩টায় বন্দরের অভ্যন্তরে ভারতীয় ট্রাক থেকে চাল খালাস কার্যক্রম শুরু হয়। এর আগে ৩মাস ২৩দিন বন্ধের পর গত ২৪ আগষ্ট মঙ্গলবার বন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু হয়, এর পরে ২৫ আগষ্ট ও ২৬ আগষ্ট বন্দর দিয়ে ৩দিনে মোট ৮টি ট্রাকে ২৬৩টন চাল আমদানি হয়। আজ শনিবার সাড়ে ৪টায় এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বন্দর দিয়ে ৪ট্রাকে ২শ টন চাল আমদানি হয়েছে।
ভারত থেকে চাল নিয়ে আসা ভারতীয় ট্রাক চালক দিপু মোহন্ত বলেন,গত মঙ্গলবার ভারত থেকে আমদানিকৃত চাল নিয়ে বাংলাদেশের হিলি স্থলবন্দরে প্রবেশ করেছি। ভারতে পার্টি আমাদের জানিয়েছিল যাওয়া মাত্র চাল খালি হয়ে যাবে কিন্তু আজ ৩দিন হচ্ছে এখন পর্যন্ত চাল খালি তো দুরের কথা পার্টির কেউ ট্রাকের কাছে কোন খোজ খবর নিতে। সাথে যে টাকা পয়সা ও খাবার নিয়ে আসছিলাম সেটিও শেষ হয়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। যাই হোক কয়েকদিন পরে আজ ট্রাক থেকে চাল খালাস শুরু হয়েছে এতে করে যে সমস্যা ছিল সেটি সমাধান হলো।
চাল আমদানিকারক মেসার্স রিত্তিক এন্টারপ্রাইজের সত্বাধিকারী ললিত কেশেরা বলেন, দেশের বাজারে চালের মুল্য স্থিতিশীল রাখতে বরাদ্দ পেয়ে গত ২৪ আগষ্ট বন্দর দিয়ে চাল আমদানি করি, পরের দিন ২৫ আগষ্ট বন্দর দিয়ে আরো দু ট্রাক চাল আমদানি করি। কিন্তু কাস্টমসের সার্ভারের সমস্যার কারনে চাল খালাস নেওয়া সম্ভব হয়নি। যার কারনে বেশী দিন বন্দরে ট্রাক আটকে থাকায় যেমন ডেমারেজ গুনতে হচ্ছিল তেমনি বন্দরের চার্জ বাড়ছিল। আজ সকল প্রকার ঝামেলা শেষ হওয়ায় আমদানিকৃত চাল খালাস শুরু হয়েছে।
বন্দর থেকে চাল খালাসের জন্য আমদানিকারক মনোনীত সিআ্যন্ডএফ এজেন্ট আমিরুল ইসলাম বলেন, দেশের বাজারে চালের মুল্য স্থিতিশীল রাখতে চাল আমদানির অনুমতিসহ সম্প্রতি চালের আমদানি শুল্ক কমানো হয়েছে কিন্তু কাস্টমসের সার্ভারে শুল্ক যে পরিমান কমানোর কথা তার চেয়ে বেশি দেখাচ্ছে যার কারনে গত মঙ্গলবার বন্দর দিয়ে চাল আমদানি হলেও তা খালাসের জন্য বিলঅব এন্ট্রি সাবমিট করা সম্ভব হয়নি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কাস্টমসের সার্ভার ঠিক হলেও সেদিন রাত হয়ে যাওয়ায় কাস্টমসে চালের বিলঅবএন্ট্রি সাবমিট করা সম্ভব হয়নি, যার কারনে চাল খালাস নেওয়া সম্ভব হয়নি। এছাড়া শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির কারনেতো বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ ছিল। চাল খালাসের জন্য শনিবার দুপুরে বিলঅবএন্ট্রি সাবমিট করেছিলাম। একইসাথে চালের শুল্কায়ন মুল্য কি হবে সেটি নিয়ে যে সমস্যা ছিল সেটি ঠিক হওয়ায় বন্দর থেকে চাল খালাস প্রক্রিয়া চালু হয়েছে। প্রতিটন চাল সাড়ে ৪শ মার্কিন ডলার মুল্যে আমদানি করা হচ্ছে যা কাস্টমস ৪৭৫মার্কিন ডলার মুল্যে শুল্কায়ন করছে, এতে করে কেজি প্রতি ৮ থেকে ৯টাকার মতো শুল্ক পরিশোধ করতে হবে।
হিলি স্থল শুল্ক স্টেশনের ঊপকমিশনার কামরুল ইসলাম বলেন, সরকার চালের আমদানি শুল্ক যে কমিয়েছে কাস্টমসের সার্ভারে সমস্যায় সেটি দেখাচ্ছিলনা যার কারনে বন্দর থেকে খালাস দেওয়া সম্ভব হয়নি। বুধবার সন্ধা পর্যন্ত সমস্যা ছিল, আমরা এবিষয়ে এনবিআরে কথা বলেছিলাম রাতেই তারা ঠিক করেছে আর কোন সমস্যা নেই। কিন্তু যারা চাল খালাস নিবে তারা সেদিন আসেনি কোন বিলঅবএন্ট্রি সাবমিট করেনি। আজ তারা বিলঅবএন্ট্রি সাবমিট করেছে সেমোতাবেক চাল খালাস শুরু হয়েছে।
হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, ৩মাস ২৩দিন বন্ধের পর গত ২৪ আগষ্ট বন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু হয়েছে। এর পরে ২৫ ও ২৬আগষ্ট আরো দুদিন বন্দর দিয়ে চাল আমদানি হয়েছে। বন্দর দিয়ে গত ৩দিনে সর্বমোট ৫টি ট্রাকে ৩৬৩টন চাল আমদানি হলেও আমদানিকারকরা খালাস না নেওয়ায় আজ বিকেল পর্যন্ত এসব চাল বন্দরে হল্টেজ অবস্থায় ছিল। এদিকে শনিবার বিকেল ৩টা থেকে বন্দরে ভারতীয় ট্রাক থেকে চাল খালাস কার্যক্রম শুরু হয়। এ পর্যন্ত ৩ট্রাক চাল হয়েছে, আরো চাল খালাস কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এদিকে আজ বন্দর দিয়ে আরো ৪টি ট্রাকে ২শ টন চাল আমদানি হয়েছে।
আর/জে/অননিউজটুয়েন্টিফোর