বিএনপির-জামায়াতের ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলছে। হরতালে যেকোনো ধরনের সহিংসতা ঠেকাতে কিশোরগঞ্জের মাঠে রয়েছে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।হরতালের সমর্থনে সকালে কিশোরগঞ্জ শহরের বিভিন্ন জায়গায় খন্ড খন্ড মিছিল বের করে বিএনপি, ছাত্রদল ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা। এসময় শহরের পুরানথানা রেলক্রসিং মোড় ও আজিম উদ্দিন হাই স্কুল মোড়ে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মোঃ মারুফ আহমেদ কয়েকজন নেতাকর্মীদেরকে নিয়ে মিছিল বের করে রাস্তায় ট্রায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে। পরে জেলা পুলিশ তা নিয়ন্ত্রণ আনতে চাইলে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা পুলিশ কে লক্ষ করে ইটপাটকেল ছুড়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। তবে পুলিশের ধাওয়ায় তাড়া দাঁড়াতে পারেনি রাস্তায়।
এসময় ছাত্রদল নেতাকর্মীদের দিকে রাবার বুলেট ও টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে পুলিশ। এতে ছাতদলের কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়। এর কিছুক্ষণ পর শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের কাছেই ইটনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ি ভাংচুর করে হরতাল সমর্তকরা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবু রিয়াদ জানান, শনিবার শহরে ডাক্তার দেখিয়ে সার্কিট হাউসে রাত্রী যাপন করি। সকালে করিমগঞ্জের বালিখলা ঘাটে নামিয়ে গাড়িটি সার্কিট হাউসে ফেরার পথে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে সামনে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে গাড়ির গ্লাস ভেঙে যায়। তবে কেউ আহত হয়নি।
রোববার (২৯ অক্টোবর) সকালে শহরের বিভিন্ন এলাকায় এসব ঘটনা ঘটে।
এছাড়াও শহরের গাইটাল, সার্কিট হাউজ, নগুয়া, বড়ফুল, আখড়া বাজার, একরামপুর, শোলাকিয়া, হয়বতনগর, সতাল, বটতলা এলাকায় হরতালের সমর্তনে মিছিল করে বিএনপি, ছাত্রদল ও জামাতে ইসলামের নেতাকর্মীরা।
কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মোঃ মারুফ আহমেদ বিডি টোয়েন্টিফোর লাইভকে বলেন, আমিসহ আমাদের নেতাকর্মীরা সকালে পুরানথানা এলাকায় হরতালের সমর্থনে মিছিলের জন্য জড়ো হচ্ছিলেন। তখন পুলিশ আমাদের নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। এসময় কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়।
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ বিডি টোয়েন্টিফোর লাইভকে বলেন, ভোর থেকে নিয়মিত পুলিশের পাশাপাশি বিশেষ টিম ‘ক্রাইসিস রেন্সপন্স টিম- সিআরটি’ রয়েছে মাঠে। এছাড়া সাদা পোশাকেও পুলিশ বাহিনী রয়েছে মাঠে।
তিনি আরো বলেন, কিশোরগঞ্জের জনগণের সার্বিক নিরাপত্তায় আমরা মাঠে রয়েছি। হরতালকে কেন্দ্র করে কেউ নাশকতার চেষ্টা করলে আমরা কঠোরভাবে তা দমন করবো। আজ ভোর থেকে আমাদের মোবাইল টিম, সিআরপি ও সাদা পোশাকে একাধিক টিম মাঠে রয়েছে। এছাড়াও র্যাব এর টিমও টহলে আছে।
কিশোরগঞ্জ সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দাউদ বলেন, বিএনপির ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সরিয়ে দিতে গেলে ইটপাটকেল ছোড়েন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়তে হয়।
তিনি আরো বলেন, সকালে দু’একটি বিছিন্ন ঘটনা ছাড়া বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
হরতালে গণপরিবহন চলাচল তুলনামূলক কম দেখা গেছে। তবে প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল, রিকশা, সিএনজিসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল করছে। এদিকে, হরতালের ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে কর্মজীবী মানুষদের। গণপরিবহন কম থাকার কারণে তাদের ভোগান্তির পাশাপাশি গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া।
এফআর/অননিউজ