কুড়িগ্রামের উলিপুরে দীর্ঘদিনের জমি বিরোধকে কেন্দ্র করে এক ব্যক্তির ওপর প্রাণঘাতী হামলার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এস.এম শফিক হাসান (চয়ন), ৩৮, উলিপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।মামলা নং-১৭ তারিখ, ২২/১১/২৫ ইং
মামলার এজাহার সুত্রে জানাগেছে,উলিপুর উপজেলার বজরা ইউনিয়নের হাজির হাট সাদুয়াদামার হাট এলাকার নিম্ন বর্নিত তফশিলভুক্ত জমি নিয়ে প্রতিপক্ষদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। বিষয়টি নিয়ে আদালতে বিচারাধীন দুটি মামলা থাকা সত্ত্বেও প্রতিপক্ষরা তাকে ও তার পরিবারকে জানে মেরে ফেলা সহ নানা ধরনের হুমকি দিয়ে আসছিল।
গত ২১ নভেম্বর ২৫ বিকেল ৪টার দিকে মোসলেম আলী, রতন মিয়া, খায়রুল ইসলাম দিপু, রবিউল ইসলাম, আবুল কালামসহ ৭–৮ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্র নিয়ে উক্ত জমিতে থাকা পুকুরে জোর করে প্রবেশ করে মাছ ধরতে থাকে। বিষয়টি জানতে পেরে শফিক হাসান ও তার বাবা শাহাদাৎ হোসেন সাজু ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের কে বাধা দিলে বিবাদীরা তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।
এজাহারে আরো বলা হয়, প্রথমেই মোসলেম আলী ধারালো ছোরা দিয়ে তার বাবার মাথায় কোপ দেন, যা মাথা ফেটে গুরুতর জখম হয় এবং সেলাই দিতে হয়। এরপর দিপু, রতন ও অন্যরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার বাবার মাথা, মুখমণ্ডল, চোখের নিচে এবং হাতে একাধিক কোপ মারেন। এসব আঘাতে তার বাবার শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর রক্তাক্ত জখম সৃষ্টি হয়।
এসময় রবিউল ইসলাম ছোড়ার উল্টো পিঠ দিয়ে তার বাবার বাম পায়ে আঘাত করলে পায়ের হাড় ভেঙে যায়। আহত ব্যক্তি মাটিতে পড়ে গেলে মোসলেম আলী তার বুকের ওপর বসে গলা চেপে ধরে হত্যার চেষ্টা করেন। অজ্ঞাত হামলাকারীরাও লাঠি ও লোহার রড দিয়ে শফিক হাসান ও তার বাবা শাহাদাৎ হোসেন কে মারধর করে পড়ে
তাদের ডাকচিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে আহতদের উদ্ধার করলে হামলাকারীরা অস্ত্র উঁচিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় গুরুতর আহত অবস্থায় শফিক হাসান ও তার বাবাকে উলিপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে শফিক হাসান প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।এবং তার বাবার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হামলা কারিদের হামলায় শাহাদাৎ হোসেন সাজুর মাথা হাত ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে প্রায় ৩৪ টি সেলাই পড়ে এবং তার বাম পা ভেঙে যায়। বর্তমানে সাজু মিয়া অবস্থা শংকটাপণ্য গুরুতর আহত অবস্থায় কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন, তার অবস্থা আশংকা জনক।
এ ঘটনায় মাইদুল ইসলাম, মোকছেন আলী, ইসমাইল হোসেনসহ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। আহতদের চিকিৎসায় ব্যস্ত থাকায় থানায় এজাহার দায়ের করতে বিলম্ব হয়েছে বলে জানান।
এজাহারের তফশিল অনুযায়ী, সাদুয়াদামার হাট মৌজার আরএস দাগ নং–২২১৪ ও ২২১৮ মোট ৯৫ শতক জমি, যাতে পুকুর অবস্থিত—এই জমিকেই কেন্দ্র করে বিরোধের সূত্রপাত। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পুলিশের উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ও তার পরিবার।
এ বিষয়ে উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আসামি পলাতক রয়েছে, আমরা তাদের গ্রাফতারে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।