কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি।।
কুড়িগ্রামে সোনাহাট স্থল বন্দরের সাথে একমাত্র যোগাযোগের সড়ক পথ দুধকুমার নদীর উপর নির্মিত সোনাহাট ব্রীজে রাতে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) থেকে কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপথ বিভাগ এই ঘোষণা কার্যকর করবেন বলে জানিয়েছে।
এরফলে এই সড়কপথে সন্ধ্যা ৭টা থেকে পরদিন সকাল ৭টা পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ থাকবে। এসময় সংস্কার কাজ পরিচালনা করবে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। ২০ দিন মেরামত কাজ চলবে বলে সড়ক বিভাগ জানিয়েছে। এ সময় স্থল বন্দর থেকে ঢাকা গামী ও ঢাকা থেকে স্থলবন্দর গামী ভারী পণ্যবাহী ট্রাক ও সব ধরণের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। ব্রিটিশ আমলে নির্মিত সোনাহাট ব্রীজটি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। এর পাটাতন ভেঙ্গে গেছে, ট্যাংক জাম (লোহার পাতি) খুলে গেছে। ফলে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। তবুও জীবন জীবিকার তাগিদে ঝুঁকি নিয়েই পারাপার করছে যানবাহন।
স্থানীয়রা বলছেন, ব্রিটিশ শাসন আমলে ১৮৮৭ সালে লালমনিরহাট থেকে ভারতের গৌহাটি পর্যন্ত রেললাইন স্থাপন করা হয়। তারই অংশ হিসেবে ভূরুঙ্গামারী উপজেলার দুধকুমার নদের ওপর নির্মিত হয় ১২০০ ফুট দীর্ঘ সোনাহাট রেলসেতু। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সৈন্যদের প্রবেশ ঠেকাতে বোমা মেরে সেতুটির একটি অংশ ভেঙে ফেলা হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর অস্থায়ীভাবে সড়কপথটি চালু করা হয়। এই সেতুর শত বছরের মেয়াদকাল অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। সম্প্রতি ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর দক্ষিণ পাশে ২৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬৪৫ মিটার লম্বা পিসি গার্ডার ব্রীজ নির্মাণ শুরু হয়েছে। নতুন সেতুটির নির্মানের মেয়াদকাল শেষ হয়ে গেলেও ঠিকাদারদের গাফিলতার কারণে অর্ধেক কাজেই আটকে আছে । ফলে দুর্ভোগ কমাতে পুরনো রেলসেতুটি সংস্কার করে যান চলাচলের উপযুক্ত করা হচ্ছে।
সোনাহাট স্থলবন্দরের আমদানী ও রপ্তানীকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক জানান, নতুন সেতুর নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকায় আমরা হতাশ। স্বভাবতই এখন এই ব্রীজের উপর চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর আগেও সংস্কারের জন্য ব্রীজে পণ্য পরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছিল। তবে দ্রুত কাজটি শেষ করলে ভালো হয়।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ নজরুল ইসলাম জানান, ব্রীজের প্লেটগুলো আগের থেকে অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়েছে। দুর্ঘটনা এড়াতেই সংস্কারের জন্য ঘোষিত প্রতিদিনের নির্ধারিত সময়ের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ব্রীজের সব প্লেট খুলে কাজ করতে হবে। এতে সময় লাগতে পারে প্রায় ১৫-২০ দিন।
এফআর/অননিউজ