কুমিল্লা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কার্যালয়ের জনবল মাত্র দুই জন। একজন সহকারী পরিচালক এবং অপর একজন অফিস সহায়ক। কেনাকাটা সংক্রান্ত যে কোন অভিযোগ, প্রতারণা, ভেজাল-জালিয়াতি রোধে সাধারণ মানুষের পাশে থাকা এই কার্যালয়টি অন্যান্য স্বার্থসংশ্লিষ্ট দপ্তরের সহযোগিতা নিয়ে কুমিল্লায় গত আট মাসে ভোক্তা অধিকারের অভিযানে ৬০ লাখ ৪৪ হাজার টাকার জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
কুমিল্লা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের জুলাই মাস থেকে এবছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ভোক্তাদের ১৮৫টি অভিযোগ নিষ্পত্তি করে ২২টি প্রতিষ্ঠানকে দণ্ডিত করা হয়েছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২ লাখ ৮১ হাজার টাকা জরিমানা করে অভিযোগকারীদের প্রণোদনা হিসেবে ৭০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে। অপর দিকে বাজার তদারকির ৮১টি অভিযানে ২৫০টি প্রতিষ্ঠানকে দণ্ডিত করে ২৫ লাখ ৮৭ হাজার ৫শত টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এছাড়া ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে পরিচালিত অভিযানে ৩১৩টি ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে ৪ শ ৯৭টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ৩ জনকে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে এবং আট মাসে মোট ৩১ লাখ ৭৫ হাজার ৬শ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
কুমিল্লা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ আছাদুল ইসলাম জানান, কুমিল্লায় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি এবং প্রতিশ্রুত পন্য বা সেবা যথাযথ ভাবে সরবরাহ না করা অভিযোগ সবচেয়ে বেশি। এছাড়া মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ বিক্রি এবং অন্যান্য পন্য এমআরপির চেয়ে বেশি দামে বিক্রির অভিযোগও আমরা পাই অহরহ। সাধারণত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, হোয়াটসএ্যাপ, মোবাইল নম্বরে কল কিংবা সরাসরি এসেও ভোক্তারা অভিযোগ করেন আমাদের কাছে। আমরা চেষ্টা করি সকল অভিযোগ আমলে নিয়ে সফল ভাবে নিষ্পত্তি করতে। আমাদের জনবল কম থাকলেও আন্তরিকতার অভাব না থাকায় অন্যান্য দপ্তরগুলোর সহযোগিতা নিয়ে আমরা কুমিল্লায় কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি আরো জানান, আমাদের কুমিল্লা অফিসে জনবল মাত্র দুই জন। কিন্তু আমরা অভিযানসহ অন্যান্য কাজে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো পাশে পাই। সাধারণ মানুষ আমাদের সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করে। অভিযানে ও তদারকিতে সিভিল সার্জন, মার্কেটিং, কৃষি, মৎস, পুলিশসহ সকলের সহযোগিতা পাচ্ছি। তবে কুমিল্লা কার্যালয়ের জন্য জনবলের চাহিদা জানানো হয়েছে। নিজস্ব জনবল থাকলে আমারা নিজেরাই তথ্য সংগ্রহ এবং তদন্ত করে আরো বেশি মানুষের পাশে থাকতে পারতাম।
২০১৫ সালে কুমিল্লায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হয়। কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন ছাড়াও ১৭টি উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা থেকেও সাধারণ মানুষ ভোক্তা অধিকারের সেবা নিতে সহযোগিতা চেয়ে থাকেন।