কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার গোমতি নদীর তীরে এবার হলুদের ফলন বেশ ভালো হয়েছে। এতে কৃষকেরা বেশ লাভবান হচ্ছেন। এ কারণে তাঁরা বেশ খুশি। হলুদ চাষে মুনাফা বেশি হওয়ায় এ জেলা কৃষকদের মাঝে আগ্রহী দেখা দিয়েছে। মূলত গোমতি নদীরের মাটিও হলুদ চাষের জন্য বেশ উপযোগী।
গোমতি নদীর তীর ঘুরে দেখা যায়, জমিতে ফল পরিপক্ক হয়ে গাছের পাতা শুকিয়ে গেছে। এখন জমি থেকে সেই হলুদ সংগ্রহের উপযুক্ত সময়। চরের জমি থেকে সংগ্রহ করা হলুদ রোদে শুকাতে দিয়েছেন । শুকানোর কাজ শেষে হলুদগুলো বাজারে তুলবেন কৃষকরা।
কুমিল্লা কৃষি অফিসের তথ্যমতে,এ বছর কুমিল্লায় ১৪০ হেক্টর জমতি হলুদ চাষ হয়েছে। এছাড়া আদা চাষ হয়েছে ১৯৩ হেক্টর জমিতে।
জেলার আদর্শ সদর উপজেলার কটকবাজার সীমান্তে গোমতীর চরে হলুদ চাষ করেছেন ইউনুস মিয়া। গত ১৫ বছর ধরে অল্প জমিতে হলুদ চাষ করেন তিনি। পবিবারে সদস্যদের সহযোগিতা নিজে জমিতে নিজে কাজ করছেন, সঙ্গী দিচ্ছেন তার প্রবাসী পুত্র ওয়াসিম।
ওয়াসিম বলেন, বাবা এ বছর ৩৬ শতক জমিতে হলুদ চাষ করেছেন। ওই জমিটা অনাবাদি থাকতো। বড় বড় ঘাস জন্মেছিলো। ঝোপঝাড়ও ছিলো। এখন সেখানে হলুদ চাষ করেছেন। ফলনও ভালো হয়েছে। আগামীতে আরো ৫০ শতক জমিতে হলুদ চাষ করার ইচ্ছা আছে।
চাষি ইউনুস মিয়া বলেন, কাঁচা হলুদ স্বাস্থ্যর জন্য উপকারি। কাঁচা হলুদ খুচরা প্রতিকেজি ৩০ টাকা দরে বিক্রি করি। শুকানোর পর মেশিনে ভাঙিয়ে আড়াইশ টাকা বিক্রি করি। এ বছর ৩৬ শতক জমিতে হলুদ চাষে ৪০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। আশা করছি, সব ব্যয় বাদে অন্তত ৪৫ হাজার টাকা মুনাফা হবে।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলার নানকরা এলাকার বাসিন্দা এমরান হোসেন বলেন, পরিত্যক্ত ৩৫ শতক জমিতে হলুদ চাষ করেছি । ৩৫ শতক জমিতে হলুদ চাষে খরচ হয়েছে ৫ হাজার টাকা। শুকানোর পরে অন্তত ৩৫ কেজি গুড়া হলুদ পাবো। আড়াইশ টাকা করে কেজি বিক্রি করবো। খরচ উঠে যাবে। আর যা থাকবে তা দিয়ে সারা বছরের ঘরের চাহিদা মিটবে।
কুমিল্লায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, পরিত্যক্ত জমিতে আদা ও হলুদ চাষ করা যায়। এই দুইটা ফসল খুব মূল্যবান। তবে যেসব জমি পরিত্যক্ত থাকে, ঘন ঝোপ জঙ্গল আছে সেসব জমিতে হলুদ চাষ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়।জেলার আগ্রহী কৃষকদের হলুদ চাষে সব ধরণের সহযোগিতা করা হবে।