কুমিল্লা নগরীতে প্রশাসনের চোখ ফাকি দিয়ে গোমতীর পাড়েরমাটি নিয়মিতই কেটে নিয়ে যাচ্ছে একাধিক চক্র। জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান মাঝে মাঝে চললেও থেমে থাকে না মাটি খেকো চক্রের অবৈধ কর্মকান্ড। নানা সময়ে খবরের শিরোনামে এলেও এ নিয়ে ছিলোনা কোন কঠোর পদক্ষেপ। দিনরাত সমান তালে মাটি কাটা এসব ট্রাকের বিকট শব্দ আর ধুলোয় অতিষ্ট জনজীবন প্রকৃতি। অনবরত এসব ট্রাক্টরের চলাচলে নদী পাড়ের সড়ক গুলো আজ আর সড়ক নেই সৃষ্টি হয়েছে বিশাল গর্তে। যে গর্তে যানবাহন পরে নিত্য ঘটছে দূর্ঘটনা।
মাটি খেকো চক্রের অবৈধ কর্মকান্ড বন্ধে শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) কুমিল্লা সদরের গোমতী পাড়ের এলাকায় পৃথক তিনটি অভিযানে নামে ভ্রাম্যমান আদালত। এসময় মাটি থেকো চক্রকে তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। মাটি বহনের কাজে নিয়োজিত একটি ট্রাক্টর জব্দ করে পুলিশ হেফাজতে দেওয়া হয়।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, গোমতী নদীর সদর এলাকায় পাড়ের মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে এমন খবরে কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালতের তিনটি টিম অভিযানে নামে।
শুক্রবার সন্ধ্যা পৌনে ছয়টায় কুমিল্লা সদরের আমতলী এলাকায় গোমতী নদীর পাড়ের মাটি কেটে নিয়ে যাওয়ার সময় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে মাটিখেকো চক্রকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করেন কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট কানিজ ফাতেমা। এ দিন বিকেল পাঁচটায় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান পরিচালনা করা হয় কুমিল্লা সদরের পালপাড়া এলাকায়। এসময় গোমতী নদীর পাড়ের মাটি কাটার দায়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন কুমিল্লা সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মৌসুমি আক্তার। অপর অভিযানে গোমতী পাড়ের ছত্রখিল এলাকায় ভ্রাম্যমান আদালতের নেতৃত্ব দেন সিনিয়র সহকারি কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট রাজীব চৌধুরী। ওই এলাকায় নদীর পাড়ের মাটি কাটার দায়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও মাটি বহনের কাজে নিয়োজিত একটি ট্রাক্টর জব্দ করে ছত্রখিল ফাড়ি পুলিশের হেফাজতে দেওয়া হয়।
অবৈধভাবে নদীর পাড়ের বালু ও মাটি খেকোদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানায় জেলা প্রশাসন।
তবে ঠিক কতদিন বন্ধ থাকবে এ মাটি কাটা এ নিয়ে সংশয় স্থানীয়দের মাঝে।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় লোকরা জানায়, বার বার প্রতিকার চেয়েও তারা এসবের স্থায়ী কোন সমাধা পায়নি। মাটি খেকো চক্রের এমন তৎপরতা মাঝে মাঝে বন্ধ করা হলেও কিছু সময় পর তা আবার চালু হয় যায়। গোমতীর চানপুর ব্রীজ এলাকার দুপাড়েও সমতালে চলে এই খেলা, মাটি নিয়ে দ্রুত বেগে যাওয়ার ফলে এ সেতুতে দিনের বেশিরভাগ সময় যানজটের সৃষ্টি হয়। সড়ক গুলোও চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে প্রশাসন ও স্থানীয় প্রভাবশালী মহলকে দুষছেন তারা। বিষয়টির সমাধানে নিয়মিত মনিটরিং ব্যবস্থার প্রয়োগ কামনা করছেন।