কুমিল্লায় ‘তারুণ্যের মেলা’ : নির্বিঘ্নে ভোট প্রদানের পরিবেশ চান তরুণরা
মোহাম্মদ ফরহাদ।।
‘আমিও জিততে চাই ’ শীর্ষক নাগরিক প্রত্যাশা বিষয়ে তারুণ্যের মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো কুমিল্লায়। শনিবার দিনব্যাপি অনুষ্ঠিত এ তারুণ্যের মেলায় তরুণরা তাদের নানান অভিমত তুলে ধরেন। তারা মনে করেন বর্তমানে মেধাবী তরুণরা রাজনীতি বিমূখ হয়ে পড়ছে। তাই আগামী দিনে দেশে যোগ্য নেতৃত্বের সংকট নিরসনে তরুণদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে আগামী নির্বাচন নির্বিঘ্নে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগে পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি সহ বিভিন্ন দাবি উপস্থাপন করেন।
দেশের নানা ইস্যুসমূহ তরুণরা কীভাবে দেখছেন এবং এসব সমাধানে তাদের পরামর্শ কী কী – এসব নিয়েই কুমিল্লার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও যুব সংগঠনের শতাধিক তরুণের অংশগ্রহণে দিনব্যাপী হয়ে গেলো ’আমিও জিততে চাই’ শীর্ষক এ ‘তারুণ্যের মেলা’।
মাল্টিপার্টি অ্যাডভোকেসি ফোরাম-এমএএফ আয়োজিত এ তারুণ্যের মেলায় তরুণরা যে তিনটি বিষয়ে তাদের প্রত্যাশার উপর গুরুত্ব দিয়েছেন তাহলো- কর্মসংস্থান, নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তি। আর এজন্যে তারা মনে করেন একজন যোগ্য জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের বিকল্প নেই। তাই তারা মনে করেন একজন যোগ্য প্রার্থী নির্বাচনে তরুণদের ভোটাধিকার এবং ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নির্বিঘ্নে ভোট প্রদানের পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
তারুণের এ মেলায় উঠে আসে- ‘দেশের রাজনীতিতে সুষ্ঠ পরিবেশের অভাবে মেধাবী তরুণরা দিন দিন রাজনীতি বিমূখ হয়ে যাচ্ছে; এক্ষত্রে রাজনীতিতে মেধাবী তরুণদের অংশগ্রহণ ও নিশ্চিত করা না গেলে আগামী দিনে যোগ্য নেত্রিত্বের সংকট তৈরী হবে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে সিদ্ধান্ত গ্রহন প্রক্রিয়ায় তরুণদের আরো বেশি করে সম্পৃক্ত করা প্রয়োজন বলে দাবি জানান তারা।
একই সাথে তরুণরা কর্মসংস্থান বিষয়ে প্রত্যাশা করেন, দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে হলে বেশি বেশি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা, সহজে ট্রেড লাইসেন্স ও অন্যান্য অনুমোদন প্রাপ্তি ও ঋণ সহায়তা ইত্যাদি বিষয়গুলি নিশ্চিত করার প্রতি জোর দেন এই তারুণ্যের মেলায়। তারা মনে করেন, স্বাস্থ্য সেবায় সরকারী সুযোগ সুবিধা বাড়ানো ও সহজগম্যতার উপর গুরুত্ব দিতে হবে। এছাড়া রাস্তাঘাটে চলাচলে, বিশেষ করে নারীদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়টি উঠে এসেছে বার বার।
শহরের একটি পার্টিসেন্টারে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এই মেলায় তরুণদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় মঞ্চ নাটক, বিতর্ক, কুইজ প্রতিযোগিতা। এছাড়াও ভিডিও বার্তা তৈরি প্রতিযোগিতাসহ ছিলো নানা আয়োজন। বিতর্কের বিষয় ছিলো-রাজনৈতিক দলের জনমুখী রাজনৈতিক চর্চা বৃদ্ধিই তরুণ প্রজন্মের রাজনীতি বিমুখতা দূর করতে পারে। বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নেন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এতে বিজয়ী হন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। অনুষ্ঠনের শেষদিকে প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
এসময় মাল্টিপার্টি অ্যাডভোকেসি ফোরাম কুমিল্লার সভাপতি বদরুল হুদা জেনুর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর জমির উদ্দিন খান জম্পি, সচেতন নাগরিক কমিটি কুমিল্লার সহ-সভাপতি নিখিল চন্দ্র রায়, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রাশেদা আখতার, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুন্নাহার দীপু, মহানগর জাতীয় মহিলা পার্টির সদস্য সচিব সোহানা আক্তার পুষ্পা ও ডেমোক্রেসি ইন্টরন্যাশনালের সিনিয়র রিজিওনাল ম্যানেজার আবুল বাশার। উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক মহিউদ্দিন মোল্লা, ঐতিহ্য কুমিল্লার সভাপতি ও সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল, মোহাম্মদ ফরহাদ প্রমুখ।
রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য অংশীদারদের কাছে নাগরিকদের প্রত্যাশাসমূহকে তুলে ধরার মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে “আমিও জিততে চাই” ক্যাম্পেইন।
এফআর/অননিউজ