কুমিল্লায় বৃদ্ধা জবা হত্যা মামলায় খোরশেদ আলম নামের একজনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন কুমিল্লার আদালত। ২৭ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) দুপুর ২টায় এ রায় দেন কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৪র্থ আদালতের বিচারক বেগম সেলিনা আক্তার। মামলার বিবরণে জানা যায়- অত্র মামলার এজাহারকারী স্ব-পরিবারে চাকুরীর সুবাদে চট্টগ্রাম থাকার কারণে তাহার ছোটভাই জসিম উদ্দিনের স্ত্রী স্বপ্না বেগম তাঁর বৃদ্ধ মাতা জবা বেগম (৭৫) কে দেখাশুনা ও খাবার সরবরাহ করিত। ২০২১ সালের ২৫ অক্টোবর দিবাগত রাত ১১টার সময় দালান ঘরের দরজা জালানা প্রতিদিনের ন্যায় বন্ধ করে পূর্ব পাশের ফ্লাটের দক্ষিণ পূর্ব পাশের রুমে ঘুমায়। পরদিন সকাল সাড়ে ৭টার সময় স্বপ্না বেগম তাঁর শাশুড়ি মাকে নাস্তা খাওয়ানোর জন্য দালান ঘরের খোলা দরজা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে শাশুড়ি (জবা বেগম) কে বিছানায় শায়িত এবং মুখে বালিশ চাপা দেখিয়া ডাকাডাকি করে। একপর্যায়ে বালিশ সরাইয়া শাশুড়ির গলা কাটা রক্তাক্ত ও মৃত অবস্থায় দেখিয়া চিৎকার করিলে অহিদুর রহমান মোবাইল ফোনে মৃতার বড় ছেলে মোঃ নুরুল আমিনকে জানাইলে চট্টগ্রাম হতে বেলা ২টায় বাড়ী পৌছে মায়ের লাশ দেখেন। আরও জানা যায়- ২০২১ সালের ২৫ অক্টোবর দিবাগত রাত ১১টা হইতে পরদিন সকাল সাড়ে ৭টার মধ্যে যেকোন সময় অজ্ঞাতনামা অজ্ঞাত সংখ্যক দুস্কৃতিকারী কৌশলে ঘরে প্রবেশ করে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার চুরি এবং বাদীর বৃদ্ধামাতা জবা বেগম (৭৫) কে ধারালো অস্ত্রাঘাতে খুন করে।
এ ব্যাপারে ২০২১ সালের ২৭ অক্টোবর কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার ঢালুয়া ইউনিয়নস্থ চান্দলা মিজান মিয়ার বাড়ীর মৃত মোঃ আব্দুর রশিদ এর ছেলে মোঃ নুরুল আমিন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে দঃ বিঃ ৪৫৭/৩৮০/৩০২/৩৪ ধারার বিধান মতে নাঙ্গলকোট থানায় এজাহার দায়ের করেন (যাহার নাঙ্গলকোট থানার মামলা নং-১২, তাং- ২৭/১২/২০২১ইং)। এরপর র্যাব-১১ ছায়া তদন্ত শুরু করিলে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে খুনি খোরশেদ আলমকে চিহ্নিত করে ৩১ তারিখ একই উপজেলার সিজিয়ারা গ্রামের মৃত আব্দুল গফুর এর ছেলে মোঃ খোরশেদ আলম (২৫) কে আটক করে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেন। পরবর্তীতে তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ ইয়ামিন সুমন ঘটনার তদন্তপূর্বক ২০২২ সালের ৩১ মার্চ বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন ( যাহার নং-৩১)। এরপর মামলাটি বিচারে আসিলে রাষ্ট্র পক্ষে মানীত ১৩জন সাক্ষীর মধ্যে ১০জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে যুক্তিতর্ক শুনানী অন্তে আসামীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাঁকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ড প্রদান করেন বিজ্ঞ আদালত। রাষ্ট্র পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অতিরিক্ত পিপি এডভোকেট মোঃ মজিবুর রহমান বাহার ও এড. শেখ মাসুদ ইকবাল মজুমদার এবং আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এডভোকেট আ.হ.ম তাইফুর আলম ও এড. মোঃ ফারুক আহমেদ। এ রায়ে সন্তুষ্ট প্রকাশ করে এড. বাহার বলেন, শীঘ্র এ রায় কার্যকর রাষ্ট্রপক্ষ ও এজাহারকারী দেখতে চায়।
শান্ত/অননিউজ