কুমিল্লার দাউদকান্দি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে তিন নারীর মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুবরণ করা তিন নারী দাউদকান্দিতে ডেঙ্গুটি আক্রান্ত হলেও ঢাকার পৃথক তিনটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন । মৃত্যুর ঘটনায় দাউদকান্দির পৌরসভার ৫ ও ৬ নাম্বার ওয়ার্ডকে ডেঙ্গুর জন্য ‘অতি ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে ঘোষণা করেছেন উপজেলা প্রশাসন।
প্রশাসন জানায় ডেঙ্গুটি আক্রান্ত হয়ে গত এক মাসে পৌরসভার ৬ নাম্বার ওয়ার্ডের দোনারচর গ্রামে ৩ জনের মৃত্যু হয়। ডেঙ্গুর সংক্রমণ অতিরিক্ত হারে বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয় প্রশাসন ওই ৫ ও ৬ ওয়ার্ডকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে।
দাউদকান্দি ভারপ্রাপ্ত পৌর প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেদওয়ান ইসলাম জানান, ডেঙ্গু সংক্রমণ এবং আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় অতি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ওয়ার্ডগুলোকে ধরে একটি ডেডিকেটেড টিম গঠন করা হয়েছে। ৬ নম্বর ওয়ার্ডে সাম্প্রতিক সময়ে ৩ নারী মৃত্যু বরনের ঘটনা ঘটেছে।
ডেঙ্গুতে মৃত্যুবরণকারীরা দাউদকান্দে আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় চিকিৎসাধীন ছিলেন বলে নিশ্চিত করেছেন দাউদকান্দি উপজলো স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: হাবিবুর রহমান।
তিনি জানান, আমরা স্বাস্থ্যকর্মীদের মাধ্যমে মৃত্যুবরণকারীদের পরিচয় পেয়েছি। তারা তিন জনই নারী। তারা হলেন পৌরসভার দোনারচর গ্রামের সালমা বেগম (৫৬), শাহীনূর আক্তার আক্তার (২৪) এবং সবজিকান্দি গ্রামের জ্যোৎস্না বেগম (৬০)।
তিনি আরও জানান, দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স জানুয়ারি মাস থেকে এই পর্যন্ত উপজেলা সরকারি হাসপাতালে ১০২ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছে। এরমধ্যে উন্নত চিকিৎসার জন্য ২৮ জনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও উপজেলার বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ২৫৮ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন।
এদিকে পৌরসভার ৫ ও ৬ নাম্বার ওয়ার্ডের দোনারচর, সবজিকান্দি, দাউদকান্দি, সাহাপাড়া, বলদাখাল ও তুজারভাঙ্গা গ্রামগুলোতে বাড়ছে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা। প্রতিটি পরিবারের কোন না কোন সদস্য আক্রান্ত হচ্ছেন। ওয়ার্ড দুটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৫ শ’ ছাড়িয়েছে। মে মাসের শুরু থেকে এই পর্যন্ত উপজেলার সরকারী ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে ৩ শতাধিক রোগী। আক্রান্তদের মধ্যে রাজধানীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় ৩ নারীর।
দাউদকান্দি পৌর প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেদওয়ান ইসলাম বলেন, সংক্রমণ প্রতিরোধ এবং মশক নিধন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। ফগার মেশিনের মাধ্যমে উচ্চমাত্রার ওষুধ প্রয়োগ চলছে। আশা করছি ডেঙ্গুর বিস্তার নিয়ন্ত্রণে আসবে।