কুমিল্লার নিমসার বাজারে খাজনা বন্ধ ঘোষণা
কুমিল্লা প্রতিনিধি ।।
কুমিল্লায় দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কাঁচা শাকসবজির বাজার কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার নিমসার।
এ বাজারে এক পণ্য থেকে তিন দফায় চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। খাজনা-টোলের নামে অতিরিক্ত টাকা দিতে বাধ্য করার অভিযোগও পাওয়া গেছে।
এমন অভিযোগের পর টাস্কফোর্সের অভিযান পরিচালনার সময় বাজারে এসে কর্মকর্তারা জানান, নিমসারে সব ধরনের খাজনা ও টোল আদায় স্থগিত করেছে প্রশাসন।
হাইকোর্টের নির্দেশনা থাকায় পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত এ টোল এবং খাজনার টাকা আদায় বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন বুড়িচং উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সোনিয়া হক।
এদিকে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের কাছ থেকে অবাধে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে রোববার সকালে নিমসার বাজারে অভিযান চালায় কুমিল্লা জেলা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ টাস্কফোর্স।
ওই সময় ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, এ কাঁচাবাজারের প্রতিটি দোকান থেকে ইজারার বাইরেও চাঁদার টাকা আদায় করা হতো। স্থানীয় প্রান্তিক চাষিরা ঝুড়িতে করে কাঁচা শাকসবজি আনলেও ঝুড়ি পড়তেই অন্তত ৩০০ টাকা দেয়া লাগত চাঁদাবাজদের। এ ছাড়া যেকোনো ব্যবসায়ী অল্প পরিমাণে শাকসবজি বিক্রি করলেও প্রতি আঁটি বা কেজিপ্রতি চাঁদাবাজদের টাকা দিতে হতো।
ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, চাঁদাবাজির কারণেই পাইকারি বাজার থেকে শাকসবজি কিনে নিয়ে খুচরা বাজারে অন্তত ১৫ থেকে ২০ টাকা বেশি ধরে বিক্রি করতে হয়।
কুমিল্লার রাজগঞ্জ বাজারের কাঁচা শাকসবজি ব্যবসায়ী আলিমুল জানান, নিমসার থেকে সবজি কেনাবেচা করলে তিনবার খাজনা, টোল, চাঁদার টাকা দিতে হয়। বিক্রেতা ও ক্রেতা উভয়কেই দিতে হয় চাঁদা।
তিনি আরও জানান, একই পণ্য পরিবহনের জন্য পরিবহন টোলও আদায় করা হয়। যদি কোনো সবজির দাম কেজিপ্রতি ৩০ টাকা হয়, তাহলে অন্তত ১০ থেকে ১৫ টাকা খাজনা বা চাঁদা দিতে হয়।
অপর লেবু ব্যবসায়ী নুরুল হক বলেন, ‘কীসের টাকা নেয়, এটাই জানি না। কেউ রসিদ দেয়, কেউ দেয় না। টাকা না দিলে আবার মারতেও আসে।’
শাপলা ব্যবসায়ী আহমাদুল বলেন, ‘নিমসারে এক মুঠ শাপলা ১০ টাকা। শহরে দেখি ৩০-৪০ টাকা। খাজনা, গাড়ি ভাড়ার নামে খুচরা ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ায়।’
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে কুমিল্লার নিমসারে উত্তরের জেলাগুলো থেকে আসে শাকসবজি। এসব সবজি আবার আড়ত থেকে বিক্রি হয় কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী, চাঁদপুরসহ দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোতে।
প্রতিদিন আড়তদার, পাইকারি, ভাসমান বিক্রেতা এবং স্থানীয় প্রান্তিক চাষিসহ অন্তত ৫ হাজার বিক্রেতা এ বাজারে কাঁচা শাকসবজির পসরা বসান। পাইকারি এ বাজার থেকে বেশি মূল্যে কেনা হলেই খুচরা বাজারে দাম বাড়ে শাকসবজির।
খুচরা বিক্রেতাদের অভিযোগ, পাইকারিতে বেশি দামে কেনা হয় বলেই শাকসবজি বেশি দামে বিক্রি হয় সাধারণ মানুষের কাছে ।
আই/অননিউজ২৪।।