কুমিল্লার মুরাদনগরে গোমতীর তীব্র পানি প্রবাহে পানির নিচে লোকালয়
আজিজুল হক, মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি।।
মুরাদনগরে গোমতীর তীব্র পানি প্রবাহে তলিয়ে গেছে ছয়টি গ্রাম কুমিল্লার মুরাদনগরে গোমতীর পানিবন্দি অন্তত ২ হাজার পরিবার। ভারত থেকে নেমে আসা ঢল ও টানা বৃষ্টির কারণে কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলা দিয়ে বয়ে যাওয়া গোমতী নদীতে পানি বেড়েই চলছে প্রবল বেগে। নদীর পানি বেড়ে উপজেলা রক্ষা বাঁধ অতিক্রম করার নিকটে অবস্থান করছে।
নদীর এই বাঁধটি ভেঙে গেলে বা ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়া শুরু হলে মুরাদনগর উপজেলার বাইশটি ইউনিয়নের প্রায় আট লাখ লোক বন্যায় কবলিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ নিয়ে চরম আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটছে এলাকাবাসীর।
রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন বেরিবাঁধ। গত দুই দিন আগে কয়েক হাজার হেক্টর এলাকার ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। ইতোমধ্যে বেড়িবাঁধের ভেতর বসবাস করা ছয় গ্রামের প্রায় দুই হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে দিগি¦দিক ছুটছেন। সেনাবাহিনীর চেষ্টায় মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে।
এ ছাড়া উপজেলার ভূবনঘর, দিলালপুর, ধামঘর, শবানীপুর,দড়িকান্দি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় দুই হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছে। গোমতী নদী ছাড়াও কাঁকড়ি, ডাকাতিয়া, পাগলি, সালদা নদী দিয়ে ভারত থেকে পানি আসা অব্যাহত রয়েছে। এতে কুমিল্লার পুরো জেলায় বন্যার শঙ্কা করা হচ্ছে।
মুরাদনগর উপজেলা সদরের গোমতী নদীপাড়ের কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, গত ২০তারিখ রাত থেকে বৃষ্টি ও ঢলের পানি ক্রমাগতভাবে বাড়ছে। আমাদের ঘরের মধ্যে এখন গলা সমান পানি। আমরা ডি আর সরকারি স্কুলে আশ্রয় নিয়েছি। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, দ্রুতই দুই কূল ছাপিয়ে উঠবে নদীর পানি। গত দুই দশকের মধ্যে নদীটিতে এত পানি দেখা যায়নি। পানি বাড়ায় নদীর চরাঞ্চলের সহস্রাধিক পরিবার বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। এখন বাঁধ রক্ষা করা না গেলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে।
গতকাল শুক্রবার সকাল ১২টায় পানি উন্নয়ন বোর্ড, কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান বলেন, উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও টানা বৃষ্টির কারণে গোমতী নদীর পানি বিপৎসীমার আড়াই সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্রতি ঘণ্টায় নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। বিভিন্ন স্থানে বাঁধে ফাঁটল ধরেছে সেগুলো রক্ষায় কাজ করা হচ্ছে।
ইউএনও সিফাত উদ্দিন বলেন, গোমতীর কোথাও বাঁধ ভাঙার তথ্য নেই কয়েকটি স্থানে ফাঁটল ধরেছে। তবে বিগত সময়ে বাঁধ কেটে ড্রেজারের পাইপ নেওয়াসহ বিভিন্ন কারণে ক্ষতিগ্রস্ত স্থান ভালোভাবে মেরামত করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে আমাদের বেশ কয়েকটি টিম নদীর তীরে অবস্থান করে পরিস্থিতি মোকাবেলা করার চেষ্টা করছেন।