আকশ্মিকভাবে বেতন ভাতা-পেনশনসহ সকল সুবিধা বন্ধ করে দেয়ায় বিপাকে পড়েছে সাড়ে তিন হাজার শিক্ষক। এ অবস্থায় গত এক বছর ধরে ওই শিক্ষক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এমন অবস্থা থেকে পরিত্রানের লক্ষ্যে মঙ্গলবার বেলা ১১ টায় কুমিল্লা নগরীর টাউনহলে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচী পালন করেছেন শিক্ষকরা। জেলার ১৭ টি উপজেলার অন্তত ১৭ শ শিক্ষক মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন। পরে শিক্ষকরা জেলা শিক্ষা অফিসারের নিকট চার দফা দাবী আদায়ে লক্ষ্য একটি স্মারক লিপি প্রদান করেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি কুমিল্লা জেলার সাধারণ সম্পাদক মোঃ কামাল হোসেন। তিনি বলেন, গত ৮ বছর ধরে আমরা নিয়মিত বেতন ভাতা পেতাম। হঠাৎ করে অর্থমন্ত্রনালয়ের নির্দেশে আমাদের বেতন ভাতা অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বন্ধ করে দেয়া হয়। এতে জেলার সাড়ে ৩ হাজার শিক্ষকরা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে বিপাকে পড়েছে। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি কুমিল্লা জেলার সভাপতি মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে অবহেলিত শিক্ষকদের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারী ঐতিহাসিক ঘোষণার মাধ্যমে ২৬ হাজার ১৯৩ টি বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কর্মরত ১ লাখ ৪ হাজার ৭৭২ জন শিক্ষকের চাকুরী জাতীয়করণ করে।
তবে গত ২০২০ সালের ১২ আগষ্ট একটি পরিপত্র জারির মাধ্যমে টাইমস্কেল বাতিল পূর্বক,গৃহিত অর্থ ফেরত নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। এছাড়াও জাতীয়করণকৃত প্রাথমিক শিক্ষকদের জৈষ্ঠতা,পদোন্নতি, টাইমস্কেল ও অবসর গ্রহণকারী শিক্ষকদের ৫০ ভাগ বেসরকারী কার্যকর চাকুরীকালে পিআরএল, লামগ্র্যন্ড, পেনশন ও আনুতোষিক প্রদান করা হচ্ছে না। এতে করে ওই সাড়ে তিন হাজার শিক্ষক পরিবারে চরম ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। এ থেকে পরিত্যানের লক্ষ্যে আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করি।
তাই আমরা চার দফা দাবী আদায়ের লক্ষ্যে গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের মাননীয় সিনিয়র সচিব বরাবর স্মারকলিপি লিখেছি। চার দফা দাবীগুলো হলো - অর্থ মন্ত্রনালয়ের পরিপত্রটি প্রত্যাহার, বেসরকারী ৫০ ভাগ কার্যকর চাকুরীকালের ভিত্তিতে টাইমস্কেল, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের পি.আর.এল, লামগ্র্যান্ড, পেনশন ও আনুতোষিক প্রদান অব্যহত রাখতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষনাকৃত জাতীয়করণকৃত শিক্ষকদের টাইসস্কেলসহ ১৩ তম গ্রেডের কার্যক্রম অব্যহত রাখতে হবে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কর্তৃক জারিকৃত পত্রটি প্রত্যাহার, বিধিমালার ৫০ ভাগ কার্যকর চাকুরীকালের ভিত্তিতে শিক্ষকদের জেষ্ঠতা ও পদোন্নতি প্রদান করতে হবে।
অধিগ্রহণকৃত বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এসএমসি কর্র্তৃক প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকগণের নাম গেজেট থেকে বাদ পরায় তা গেজেটে অর্ন্তভূক্ত করতে হবে।
এই চার দফা দাবী সম্বলিত স্মারকলিপিটি আমরা কুমিল্লা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করেছি। কুমিল্লা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আবদুল মান্নান বলেন, আমি স্কুল পরিদর্শনে বাহিরে আছি। আমার হয়ে স্মারকলিপিটি গ্রহণ করেন জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার কাজী মফিজ উদ্দিন আহমেদ। এ বিষয়ে আমরা ওই শিক্ষকদের সাথে কথা বলে পরবর্তী কার্যক্রম শুরু করবো।
সাইফুল ইসলাম সুমন,অননিউজ24।।