পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন এমপি বলেছেন, বর্তমানে বনের যে আইন আছে সেটা ১৯২৭ সালে বৃটিশদের করা। সেই আইন প্রয়োগ করে জবরদখল রোধ করা যাচ্ছে না। আমরা বনের নতুন আইন তৈরির উদ্যোগ নিয়েছি। আগামী সংসদে সেই আইনের খসড়া প্রস্তাবনা আনা হবে৷ আইনটি পাস হলে সরকারের সকল বনভূমির সমস্যার সমাধান হবে। শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কুলাউড়ার গাজীপুরে রেঞ্জ অফিসের আধুনিক ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সরকারের এসডিজি বাস্তবায়নে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা হলো ২৪ শতাংশ বন থাকতে হবে। বর্তমানে সরকারি বন রয়েছে ১৪.১ শতাংশ। আগামী ২০২৪-২৫ সালের মধ্যে বনকে ২৪ শতাংশে উন্নীত করা হবে। আর সামাজিক বনায়নে বাড়ি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান মিলে মোট ২২ শতাংশ বনায়ন রয়েছে। বনায়ন বৃদ্ধি করার জন্য সিলেট বিভাগে “সুফল প্রকল্পের” আওতায় ৭৫ কোটি টাকার কাজ চলমান আছে।
অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের উত্তরে পরিবেশ মন্ত্রী বলেন, হাকালুকি হাওরকে হাওর উন্নয়ন বোর্ডে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে এবং উন্নয়ন কর্মকান্ড চলমান আছে। উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় মাধবুকন্ড থেকে যে খাল হাওর পর্যন্ত গেছে সেটির খনন কাজ চলছে এবং হাওর এলাকায় ৩টি বিল, ১৮টি পুকুর খনন করা হচ্ছে।
কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাহমুদুর রহমান খোন্দকারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোঃ তৌফিকুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রেনু, সাধারণ সম্পাদক আসম কামরুল ইসলাম। এসময় উপস্থিত ছিলেন কুলাউড়া পৌরসভার মেয়র অধ্যক্ষ সিপার উদ্দিন আহমদ, বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী, কুলাউড়া উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেহা ফেরদৌস চৌধুরী পপি, জুড়ী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রিংকু রঞ্জন দাস, সহকারী বন সংরক্ষক (শ্রীমঙ্গল) মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক, কুলাউড়া থানার ওসি মোঃ আব্দুছ ছালেক, কুলাউড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ রিয়াজ উদ্দিন, জুড়ী রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ আলাউদ্দিন, কুলাউড়া সদর ইউপির চেয়ারম্যান মোছাদ্দিক আহমদ নোমান, সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোঃ শাহজাহান, কুলাউড়া গাজীপুর বিট কর্মকর্তা মোঃ আহমদ আলী প্রমূখ।
বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, ১৯৫৮ সালে কুলাউড়া রেঞ্জ অফিসের কার্যক্রম শুরু হয়। দীর্ঘ ৬৫ বছর থেকে জরাজীর্ণ এই অফিসে বনবিভাগের কার্যক্রম চলছিলো জোড়াতালি দিয়ে। দীর্ঘদিন ধরে নতুন ভবনের দাবিটি উপেক্ষিত হলেও বর্তমান সরকার বিশেষ করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন এমপি’র ঐকান্তিক প্রচেষ্ঠায় দৃষ্টিনন্দন ও আধুনিক রেঞ্জ কার্যালয় ভবনটি পেল কুলাউড়া বনবিভাগ। উল্লেখ্য, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব নিরসনে সিলেট বন বিভাগে পুণঃবনায়ন ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৩৮ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা ব্যয়ে ভবনটি নির্মিত হয়েছে।