মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের মুরইছড়া চা-বাগানের এক অসহায় শিশুর জীবনের নির্মম বাস্তবতা যেন সমাজের অদেখা এক করুণ চিত্র তুলে ধরে। তিন বছরের শিশু গোপাল সাঁওতাল জন্ম থেকেই শারীরিক, মানসিক ও বাক প্রতিবন্ধকতায় ভুগছে। দরিদ্র চা-শ্রমিক পরিবারে জন্ম নেওয়া গোপাল বর্তমানে বাস করে ঘরের ভিতরের একটি দুফুট গভীর গর্তে, যেখানে তাকে শুইয়ে রাখতেই হয় সারাক্ষণ।
গোপালের মা সনচরিয়া সাঁওতাল ও বাবা অনিল সাঁওতাল – দুজনই চা-বাগানে দৈনিক মজুরিভিত্তিক শ্রমিক। একমাত্র সন্তান গোপালের চিকিৎসার জন্য এক সময় সিলেটের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা শুরু করলেও, টাকার অভাবে সেই চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। ফলে তাদের একমাত্র আশ্রয় এখন সেই ঘরের মাটির গর্তটি, যেখানে শিশুটি কেবল শুয়ে থাকতেই পারে – চলাফেরার কোন সামর্থ্য নেই তার।
স্থানীয় ইউপি সদস্য বলেন, "শিশুটির এই অবস্থা আমরা আগে জানতাম না। সম্প্রতি বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি। যদি পরিবার আবেদন করতো, আমরা প্রয়োজনীয় ভাতা ও সহায়তার ব্যবস্থা নিতাম।"
তবে গোপালের মা জানান, তারা জানেনই না কীভাবে সরকারি প্রতিবন্ধী ভাতা বা অন্য কোনও সহায়তা পাওয়া যায়। দিনমজুরির সীমিত আয়েই চলছে তাদের কঠিন জীবনসংগ্রাম।
এই অসহায় শিশুর জন্য মানবিক সহায়তা ও সরকারি সহযোগিতা এখন সময়ের দাবি। স্থানীয় প্রশাসন, সমাজসেবী সংগঠন ও হৃদয়বান মানুষদের এগিয়ে আসাই পারে ছোট্ট গোপালের জীবনটাকে একটু সহনীয় করে তুলতে।