দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ ও হিসাবপত্র বিকৃত করার অপরাধে হাফিজুর রহমান (৫৮) নামে সাবেক কৃষি ব্যাংকের পরিদর্শককে চার বছরের সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৯ মাসের বিনাশ্রম কারাদÐ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) বিকেলের দিকে কুষ্টিয়ার বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. আশরাফুল ইসলাম এ রায় দেন।
দন্ড প্রাপ্ত হাফিজুর রহমান কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার কৈপাল গ্রামের মৃত আসগর আলীর ছেলে। তিনি বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের দৌলতপুর উপজেলার তারাগুনিয়া শাখায় পরিদর্শক পদে কর্মরত ছিলেন।
হাফিজুর রহমানকে পেনাল কোডের ৪০৯ ধারায় অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গ করার অপরাধে ও ৪৭৭ (এ) হিসাবপত্র বিকৃত করার অপরাধে এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অপরাধমূলক অসদাচরণের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় তাকে চার বছরের সশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ আদালতের কাছে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে বলে বিচারক তার রায়ে উল্লেখ করেছেন।
দুদক ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০০৪ সালের ৯ আগস্ট থেকে ২০০৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এবং ২০১৩ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৪ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত হাফিজুর রহমান কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার তারাগুনিয়া শাখায় কৃষি ব্যাংকের পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
দায়িত্বে নিয়োজিত থাকা অবস্থায় তিনি বিভিন্ন ঋণগ্রহীতার কাছ থেকে রশিদের মাধ্যমে আদায় করা টাকার মধ্যে ১৫টি রশিদে নিজে স্বাক্ষর করে ৯ লাখ ৭৮ হাজার ৪৯৫ টাকা আদায় করেন। তৎকালীন ওই ব্যাংকে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছে ওই টাকা হস্তান্তর না করে অবৈধভাবে নিজেই আত্মসাৎ করেন হাফিজুর রহমান।
এ অভিযোগে ২০১৬ সালের ২২ নভেম্বর তার বিরুদ্ধে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানায় মামলাটি করেন দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের কুষ্টিয়ার উপপরিচালক আব্দুল গাফফার। মামলাটি দীর্ঘ সময় ধরে তদন্তের পর আদালতে ওই মামলার চার্জশিট দাখিল করা হয়। এরপর আদালত এ মামলায় সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে ১৮ জানুয়ারি রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে মঙ্গলবার আদালত এ রায় দেন।
দুদকের কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট আল মুজাহিদ হোসেন মিঠু বলেন, মামলায় দোষী প্রমাণিত হওয়ায় আসামি হাফিজুর রহমানকে ৪ বছরের কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন বিচারক। পাশাপাশি তাকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৯ মাসের বিনাশ্রম সাজার আদেশ দেন বিচারক।