বিয়ের মেহেদীর রঙ না মুছতেই যৌতুকের জন্য শ্বশুর বাড়ির লোকজনের নির্যাতনে পৃথিবী ছাড়তে হয়েছে সুমাইয়া খাতুন (১৮) নামে এক নববধূকে। তবে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের দাবি সে আত্মহত্যা করেছে। তবে সুমাইয়ার বাবার দাবি তাকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার কুষ্টিয়ার মিরপুরের আমলা ইউনিয়নের পারমিটন এলাকার শ্বশুরবাড়ি থেকে দগ্ধ অবস্থায় ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে তিনি মারা যান।
নিহত সুমাইয়া দৌলতপুর উপজেলার খলিসাকুন্ডি ইউনিয়নের মালিপাড়া এলাকার আয়েম আলীর মেয়ে এবং মিরপুর উপজেলার আমলা ইউনিয়নের পারমিটন এলাকার সাদিকুল ইসলামের স্ত্রী।
আমলা পুলিশ ক্যাম্পের এএসআই কামরুজ্জামান জানান, ওই নারী স্বামীর বাড়িতে নিজ কক্ষে গায়ে ডিজেল দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে খবর দেন স্থানীয়রা। পরে তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। প্রতিবেশীদের ভাষ্য মতে গত ১৬ ডিসেম্বর পারিবারিক ভাবেই সাদিকুল ইসলামের সঙ্গে বিয়ে হয় সুমাইয়ার। বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে কলহের সৃষ্টি হয়। মঙ্গলবার গায়ে আগুন দিলে সুমাইয়ার মামা জালাল হোসেন স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়, রাতে সেখানে তার মৃত্যু হয়।
এদিকে সুমাইয়ার বাবা আয়েম আলী অভিযোগ করেন, বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে জামাইকে ১ লাখ টাকা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিয়ের তিন দিন পরই জামাই জানায় ব্যবসার জন্য টাকা লাগবে। এজন্য টাকা নিয়ে যেতে সুমাইয়াকে চাপ দেয়। কিন্তু আমি গরিব মানুষ, তাই ১ লাখ টাকা একবারে দেওয়া সম্ভব নয় বলি। এনিয়ে জামাই মেয়েকে নির্যাতন করে। কয়েকদিন আগেও জামাই টাকার জন্য সুমাইয়াকে পাঠিয়েছিল। চারদিন থেকে কিছু টাকা নিয়ে স্বামীর বাড়ি যায়। কিন্তু সব টাকা না দেওয়ার কারণে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন সুমাইয়াকে গালমন্দ ও মারধর করে। যৌতুকের এক লাখ টাকা না পেয়ে আমার মেয়েকে ওরা পরিকল্পিত ভাবে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করেছে।
এ ব্যপারে জানতে চাইলে মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মস্তফা জানান, খবর পেয়েই আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সেই সঙ্গে মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে। অপরদিকে এ ঘটনার পর থেকেই নিহতের শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক আছেন।