তৃতীয় ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী ঘোষণা ও ভোট পুর্ণগণনার দাবিতে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেছে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থীরা।
মঙ্গল দুপুরে কুড়িগ্রাম প্রেস ক্লাবে যাত্রাপুর ইউনিয়নে ভোট গণনায় কারচুপির অভিযোগ তুলে ভোট পুণগণনা এবং ঝুনকার চর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে পুণ ভোটের দাবিতে একসাথে সংবাদ সম্মেলণ করেন নৌকা, মোটরসাইকেল ও চশমা প্রতীকের প্রার্থী। এসময় বক্তব্য রাখেন নৌকার প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা: মো: শাখাওয়াত হোসেন, মোটর সাইকেল প্রার্থী মো: শাহজামাল সরকার ও চশমা প্রতীকের মো: আইয়ুব আলী সরকার।
সংবাদ সম্মেলনে তিন প্রার্থী লিখিত বক্তব্যে জানান, আমরা প্রার্থীরা এবং আমাদের পুলিং এজেন্টদের ছাড়াই ভুয়া স্বাক্ষর দিয়ে নির্বাচনী ফলাফল নির্দিষ্ট স্থানে না দিয়ে অনির্দিষ্ট স্থানে প্রকাশ করা হয়। এছাড়াও নৌকা মার্কায় সিল দেয়া ব্যাল্ট পেপর কেন্দ্রের বাইরে পাওয়া যায়। বিষয়টি সঠিকভাবে তদন্ত করে ভোট পুণগণনার দাবি জানান তারা। এতে যে ফলাফল আসবে তা মেনে নেয়ার কথাও জানান তারা।
অপরদিকে এর আগে কুড়িগ্রাম প্রেস ক্লাবে যাত্রাপুর ইউনিয়নের আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল গফুর প্রতিটি কেন্দ্রের ফলাফলের ভিত্তিতে নির্বাচিত হওয়ার দাবি করে চুড়ান্ত ফলাফল ঘোষণার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেন। এসময় স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল গফুর বলেন, আমি ২৮ নভেম্বরের নির্বাচনে আনারস প্রতীকে যাত্রাপুর ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের ১০টি ভোট কেন্দ্রে ৪ হাজার ২শ ৩৮টি ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছে। আমার নিকটতম প্রতিদ্বন্দী মো:শাহজামাল সরকার মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে ওই ১০টি ভোট কেন্দ্রে মোট ভোট পেয়েছেন ৪ হাজার ১শ ৮৮টি। আমি তার চেয়ে ৫০টি ভোট বেশি পেয়ে বিজয়ী হয়েছি।
প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং অফিসারগণ স্ব-স্ব কেন্দ্রে আমার নির্বাচনী এজেন্টগণকে লিখিতভাবে প্রদান করেন এবং প্রতিটি ভোট সেন্টারে নোটিশ বোর্ডে ফলাফল টাঙ্গিয়ে দেন। এতে আমি ৫০ ভোটে বিজয়ী হলেও অঘোষিত কারনে রিটার্নিং অফিসার চুড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হতে বিরত রয়েছেন। এ কারনে আমি স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে অতিসত্বর চুড়ান্ত ফলাফল ঘোষণার দাবি জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য গত ২৮ নভেম্বরের নির্বাচনে যাত্রাপুর ইউনিয়নের ঝুনকার চর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শেষে ফেরার পথে ফাকা ব্যালট বক্স ছাড়া ব্যালট পেপার ও ভোট গ্রহণের অন্যান্য সামগী ছিনতাই করে নেয় দুবৃর্ত্তরা। ছিনতাইয়ের ঘটনায় কুড়িগ্রাম সদর থানায় এজাহার দায়ের করেছেন ওই ভোট কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং অফিসার ও গণপুর্ত বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো: আবু তোরাব।
এজাহারে তিনি উল্লেখ করে ভোট গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণা ও নোটিশ বোর্ডে টাঙ্গিয়ে দেয়ার পর ব্যালট বক্স এবং ভোটের ব্যালট পেপার বস্তাবন্দী করে সিলগালা করে সঙ্গী সদস্যদের নিয়ে রওয়া দেই। রাত ৮টার দিকে চর ভগবতীপুরের বারবিশ ঘাটের কাছে পৌছা মাত্র মোটরসাইকেল প্রতীকের ২শ থেকে ৩শ জন অজ্ঞাত সমর্থক লাঠি সোটা নিয়ে হামলা করে ব্যালট বক্স ব্যতীত ব্যালট পেপার ও নির্বাচনী মালামালের বস্তা নিয়ে যায়। কিন্তু রেজাল্ট শীট তার কাছে রক্ষিত ছিল বলে এজাহারে উল্লেখ করেন তিনি। এ কারনে ওই ইউনিয়নের ফলাফল ঘোষণা স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন।
আয়েশা আক্তার/অননিউজ24