বাগমারায় তিনফসলি কৃষিজমি ও ভিটা জমিতে জোরপূর্বক পুকুরখননে বাধা দেওয়ায় ১০ জন কৃষককে কুপিয়ে জখম করার ঘটনায় ৮ জন পুকুরখননকারীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী কৃষকদের পক্ষে কালুপাড়া গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে বাচ্চু বাদি হয়ে মামলাটি করেছেন। মামলায় আসামি করা হয়েছে পুকুরখননকারী কালুপাড়া গ্রামের জেহের আলী, আরিফ হোসেন, শাহীন হোসেন, সুমন হোসেন, তাহেরপুর পৌরসভার চৌকিরপাড়া মহল্লার রাব্বানী এবং হামিরকুৎসা গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমান, আফেল আলী ও রেজাউল ইসলামকে।
জানা গেছে, হামিরকুৎসা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের ছত্রছায়ায় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী দুই নেতা জেহের আলী ও রাব্বানীর নেতৃত্বে কয়েকজন ব্যাক্তি ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে হামিরকুৎসা ইউনিয়নের যশোর বিলে জমিতে চাষ করা সরিষা, টমেটো, বেগুন, মরিচ, লাউ, পেঁয়াজ, গম ও ভুট্রা ক্ষেত নষ্ট করে কৃষকদের তিনফসলি আবাদি জমি ও ভিটা জমি দখল করে নিয়ে সোমবার রাতে ড্রেজার (ভেকু) দিয়ে মাটি কেটে জোরপূর্বক পুকুরখনন কাজ শুরু করেন। এ সময় স্থানীয় কৃষকদের পক্ষে ৯৯৯ কল দেওয়া হলে তাৎক্ষনিকভাবে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই বিলের তিনফসলি জমিতে পুকুরখনন কাজ বন্ধ করে দেন। কিন্তু পুলিশ চলে যাওয়ার পর তারা আবারো পুরোদমে পুকুর খনন কাজ শুরু করেন এবং পাকাসড়ক নষ্ট করে ট্র্রাক্টরযোগে কৃষি জমির মাটি বিভিন্ন ইটভাটায় সরবরাহ করেন। কৃষকদের অভিযোগ যশোর বিলে পুকুরখনন করা হলে ওই বিলে প্রায় চারশো বিঘা জমিতে চাষাবাদ বন্ধ হয়ে যাবে এবং বিল সংলগ্ন কয়েকটি গ্রামের গরীব ও অসহায় কৃষক পরিবারের মাঝে খাদ্য সংকট দেখা দিবে। এ অবস্থায় যশোর বিলে তিনফসলি কৃষি জমি ও ভিটা জমি রক্ষায় অবৈধভাবে পুকুর খনন বন্ধের দাবিতে এলাকার ভুক্তভোগী কৃষকদের পক্ষে কালুপাড়া গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে বাচ্চু, শামসুল ইসলামের ছেলে সাদ্দাম হোসেন ও বল্টুর ছেলে জাহিদ হোসেন যৌথভাবে বাদি হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারি কমিশনারের (ভূমি) কাছে পৃথকভাবে দুটি লিখিত অভিযোগ দেন। ওই অভিযোগের কপিতে এলাকার আরো প্রায় শতাধিক ভুক্তভোগী কৃষক স্বাক্ষর করেছেন। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করা হলেও অবৈধ পুকুর খনন বন্ধ হয়নি। এ কারণে এলাকার ভুক্তভোগী কৃষকরা মঙ্গলবার রাত ৮ টার দিকে তাদের জমিতে পুকুর খনন বন্ধ করার জন্য বাঁধা দিতে গেলে জেহের আলী ও রাব্বানীর নেতৃত্বে কয়েকজন সন্ত্রাসী কৃষকদের উপর অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। এতে ১০ জন কৃষক গুরুত্বরভাবে জখম হন। তাদের মধ্যে সাইদুর রহমান, বাবলু রহমান, জাহিদ ও ভুট্রু রহমানকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এদিকে হামিকুৎসা ইউপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন পুকুরখকনের সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে অস্বীকার করেছেন।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন।
এফআর/অননিউজ