ইউক্রেনের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ইউক্রেনের সামুদ্রিক ড্রোনের হামলায় কৃষ্ণ সাগরে রুশ একটি যুদ্ধজাহাজ বিধ্বস্ত হয়েছে। রাশিয়ার নোভোরোসিস্ক বন্দরের কাছে কৃষ্ণসাগরে এই হামলা হয়েছে বলে জানা গেছে। রপ্তানির জন্য এই বন্দরটি রাশিয়ার কাছে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে ঐ বন্দরের কাছে একটি নৌ ঘাঁটি লক্ষ্য করে ইউক্রেন দুটি সামুদ্রিক ড্রোন দিয়ে হামলা চালায়, কিন্তু সেই হামলা নস্যাৎ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ইউক্রেনীয় একটি সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছে একটি ড্রোন ওলেনেগরস্কি গরনিয়াক নামে রুশ একটি যুদ্ধজাহাজে আঘাত করেছে এবং “জাহাজটিকে এখন আর যুদ্ধে কাজে লাগানো সম্ভব হবে না।“
রুশ এই জাহাজটিকে শত্রু দেশের সাগরতটে সেনা এবং সরঞ্জাম অবতরণের কাজে লাগানোর উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়। রাশিয়া এই ড্রোন হামলার কথা জানালেও তাদের বিবৃতিতে ক্ষয়-ক্ষতির কোনো কথা নেই। ইউক্রেনের নিরাপত্তা গোয়েন্দা সূত্র থেকে বিবিসির কাছে পাঠানো একটি ভিডিওতে দেখা গেছে পানির ওপর দিয়ে একটি সামুদ্রিক ড্রোন একটি জাহাজের দিকে ছুটে যাচ্ছে। ধারনা করা হচ্ছে ঐ জাহাজটিই রাশিয়ার যুদ্ধজাহাজ ওলেনেগরস্কি গরনিয়াক।
ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে ড্রোনটি জাহাজটির একদম কাছ পর্যন্ত চলে গেছে, এবং এক পর্যায়ে সেটি থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পাঠানো ভিডিও ফিড বন্ধ হয়ে যায়। হামলার পর নোভোরোসিয়াস্ক বন্দরে জাহাজ চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে কাস্পিয়ান পাইপলাইন কনসোর্টিয়াম নামে একটি কোম্পানি যারা ঐ বন্দরে তেলবাহী ট্যাংকারে তেল ভরে। চালক-বিহীন এসব সামুদ্রিক ড্রোন আকারে ছোটো এবং এটি পানির ওপর দিয়েও চলে, নিচ দিয়েও চলে।
বিবিসির করা একটি গবেষণায় বলা হচ্ছে ইউক্রেন এসব সামুদ্রিক ড্রোন ব্যবহার করে রুশ যুদ্ধ জাহাজ এবং সেভাস্তোপোলে রুশ নৌ ঘাঁটিতে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১০টি হামলা চালিয়েছে। নোভোরোসিস্ক বন্দর এর আগেও ইউক্রেনের ড্রোন হামলার টার্গেট হয়েছে। স্থানীয় বিভিন্ন মিডিয়ার রিপোর্ট এবং সেই সাথে রুশ এবং ইউক্রেনের সরকারি কর্তৃপক্ষের দেওয়ার বিভিন্ন বিবৃতির ভিত্তিতে এসব হামলার কথা জানা গেছে।
ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা বাহিনীর সূত্রগুলো মার্কিন টিভি নেটওয়ার্ক সিএনএনকে বলেছে ক্রাইমিয়ার সাথে রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডকে যুক্তকারী কার্চ সেতুতে জুলাই মাসে যে হামলা হয় তা সামুদ্রিক ড্রোন ব্যবহার করেই করা হয়েছিল। নোভোরোসিস্ক বন্দরটি কৃষ্ণসাগরে রাশিয়ার বড় বন্দরগুলোর একটি। স্থানীয় জরুরী বিভাগগুলো বন্দরের কাছে বিস্ফোরণের কথা রুশ নিরাপত্তা বিভাগগুলোকে জানিয়েছে বলে রুশ মিডিয়ার খবরে বলা হয়েছে।
কৃষ্ণসাগর দিয়ে নিরাপদে ইউক্রেনীয় খাদ্যশস্য রপ্তানির একটি চুক্তি থেকে সম্প্রতি রাশিয়া একতরফা-ভাবে বেরিয়ে আসার পর থেকে সাগরে সংঘাত বেড়েছে। সপ্তাহের শুরুর দিকে রাশিয়া ইউক্রেনের ওডেসা এবং চোরনোমোরস্ক বন্দরে ব্যাপক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র চালিয়ে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি করেছে। এমনকি, দানিয়ুব নদীতে একাধিক ছোটো ছোটো বন্দরেও হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। ওদিকে, রাশিয়ার পক্ষ থেকে আজ (শুক্রবার) জানানো হয়েছে ক্রাইমিয়ার আকাশে দশটি ইউক্রেনীয় ড্রোন তারা গুলি করে ধ্বংস করে দিয়েছে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা
এসকেডি/অননিউজ
প্রধান সম্পাদক: হুমায়ুন কবির রনি
মোবাইল: ০১৭১৬-৫৩০৫১৪
ইমেইল: onnews24@gmail.com
www.onnews24.com