ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো জোড়া গোলে অনন্য রেকর্ডের ম্যাচ রাঙালেন
অনলাইন ডেস্ক।।
ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা ফুটবলার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। ৩৮ বছর বয়সী এই পর্তুগিজ তারকা বয়সের ভারে ক্যারিয়ারের প্রায় শেষ প্রান্তে অবস্থান করছেন। এ কারণে জাতীয় দলের বাইরে নিজেকে শীর্ষ পর্যায়ের ক্লাব ফুটবল থেকে সরিয়ে নিয়েছেন তিনি। তাই ইউরোপের গতিময় ফুটবল ছেড়ে এসে নাম লিখেছেন এশিয়ান ফুটবলে, সৌদি প্রো লিগের ক্লাব আল নাসরে।
গেল কাতার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার-ফাইনালে মরক্কোর কাছে হেরে বিদায় নেয় পর্তুগাল। তবে ম্যাচে শুরুর একাদশে জায়গা পাননি রোনালদো। এরপর রাগে অভিমানে জাতীয় দল থেকে অবসরের কথাও ভেবেছিলেন রোনালদো। তবুও নামটা যখন মহাতারকার, তখন ৫ বারের ব্যালন ডি’অর জয়ী তারকার ওপর থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখতে পারেননি নতুন কোচ রবার্তো মার্টিনেজ।
২০২৪ ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপকে সামনে রেখে বাছাইপর্বের ম্যাচের জন্য রোনালদোকে নিয়েই স্কোয়াড সাজান পর্তুগালের স্প্যানিশ কোচ মার্টিনেজ। আর মাঠে নেমেই আন্তর্জাতিক ফুটবলে সর্বোচ্চ ১৯৭ ম্যাচে খেলার অনন্য রেকর্ড গড়েন তিনি। এছাড়া ম্যাচে জোড়া গোল করে রোনালদো জানিয়ে দেন বয়স ৩৮ পেরোলেও এখনো ফুরিয়ে যাননি তিনি।
আরও পড়ুন: আর্জেন্টিনার উৎসবের ম্যাচে মেসির ৮০০তম গোল
বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) রাতে লিসবনে ইউরো বাছাইয়ে ‘জে’ গ্রুপের ম্যাচে লিখটেনস্টাইন বিপক্ষে ৪-০ গোলে জিতেছে ২০১৬ সালের চ্যাম্পিয়ন পর্তুগিজরা। ম্যাচে জোড়া গোল করে প্রত্যাবর্তন রাঙিয়েছেন সিআরসেভেন। রোনালদোর জোড়া গোল ছাড়াও একটি করে গোলের দেখা পান জোয়াও কানসেলো ও বের্নার্দো সিলভা।
বিশ্বকাপের কোয়ার্টার-ফাইনালে মরক্কোর কাছে হেরে বিদায়ের ম্যাচে কুয়েতের বাদের আল-মুতাওয়ার সঙ্গে যৌথভাবে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড ছুঁয়েছিলেন রোনালদো। তবে পর্তুগালের দায়িত্বে ফার্নান্দো সান্তোসের বরখাস্তের পর মার্টিনেজ অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর তার ডাকে সাড়া দিয়ে জাতীয় দলে ফিরেই সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার রেকর্ড একার করে নেন রোনালদো।
ঘরের মাঠে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবলে প্রতিপক্ষকে চেপে ধরে খেলতে থাকে পর্তুগাল। ফলে গোলের সাফল্য পেতেও বেশিক্ষণ সময় নেননি স্বাগতিকরা। অষ্টম মিনিটে ব্রুনো ফার্নান্দেজের কর্নার পাঞ্চ করেন লিখটেনস্টাইন গোলরক্ষক বুখেল। তবে ঠিকমতো ক্লিয়ার করতে না পারায় বক্সের বাইরে থেকে শট নিয়ে গোল করেন কানসেলো।
১৬তম মিনিটে ডি-বক্সে ভালো পজিশনে বল পেয়ে যান জোয়াও ফেলিক্স। তবে গোলরক্ষক বরাবর শট করলে গোলবঞ্চিত হন তিনি। ২৩তম মিনিটে গোলের সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন রোনালদো। লিখটেনস্টাইন গোলরক্ষককে একা পেয়েও কাছ থেকে উড়িয়ে মারেন আল নাসর ফরোয়ার্ড। ৩৮তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ হতে পারত পর্তুগালের। তবে জোয়াও পালিনিয়ার বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া জোরালো শট ঝাঁপিয়ে ব্যর্থ করে দেন লিখটেনস্টাইন গোলরক্ষক বুখেল।
ফলে ১-০ গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় তারা। তবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে চার মিনিটের ব্যবধানে দুই গোল করে জয়ের পথে এগিয়ে যায় পর্তুগাল। ৪৭তম মিনিটে বক্সের ভেতর থেকে বাঁ পায়ের শটে প্রথমটি করেন বের্নার্দো সিলভা। খানিক পর কানসেলো বক্সে ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। সফল স্পট-কিকে স্কোরলাইন ৩-০ করেন রোনালদো।
৫৮তম মিনিটে আবার সফরকারীদের জালে বল পাঠান সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ ফরোয়ার্ড, তবে এবার অফসাইডের পতাকা তোলেন লাইন্সম্যান। পাঁচ মিনিট পর ফ্রি-কিকে ঠিকই নিজের দ্বিতীয় গোল পেয়ে যান রোনালদো। বক্সের ঠিক বাইরে থেকে তার শট ছিল গোলরক্ষক বরাবর, বলে হাত ছোঁয়ালেও গতির কারণে আটকাতে পারেননি বুখেল।
আন্তর্জাতিক ফুটবলের রেকর্ড গোলদাতার গোল হলো ১২০টি। ৭৩তম মিনিটে ডাবল সেভ করেন ম্যাচ জুড়ে ব্যস্ত সময় পার করা সফরকারী গোলরক্ষক। ৭৮তম মিনিটে রোনালদোকে তুলে গনসালো রামোসকে নামান পর্তুগাল কোচ। শেষ দিকে বুখেলের আরও কয়েকটি সেভ ও জোয়াও মারিওর শট পোস্টে লাগলে ব্যবধান আর বাড়েনি।
ম্যাচে একচেটিয়া আধিপত্য ধরে রেখে পর্তুগাল ৮২ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে গোলের জন্য ৩৫টি শট নেয়, যার ১১টি লক্ষ্যে। লিখটেনস্টাইন শট নিতে পারে স্রেফ ২টি, একটি লক্ষ্যে ছিল।
ফরহাদ/অননিউজ